আমি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এ রাজ্যে সমস্ত সরকারি কাজকর্ম এখনও বাংলায় চালু না হওয়ার কারণে একটি সমস্যা হচ্ছে, তার কথা তুলে ধরতে চাই। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এই অঞ্চলের প্রায় সব ছাত্রছাত্রী প্রথম প্রজন্মের পড়ুয়া। নবম শ্রেণিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদে নাম নথিভুক্ত করার জন্য তারা এলে দেখা যায়, ইংরেজি হরফে তাদের নিজের বা বাবা-মায়ের বিভিন্ন পরিচয়পত্রে নামের একাধিক বানান। তাদের জন্ম শংসাপত্রকে প্রামাণ্য ধরে এগোতে চাইলে দেখা যায়, বেশির ভাগ বাংলায় লেখা। পর্ষদের কাছে যে হেতু শুধু ইংরেজিতেই নাম পাঠাতে হয় এবং সেই অনুযায়ী ভবিষ্যতে ছাত্রছাত্রীর যাবতীয় প্রামাণ্য শংসাপত্র তৈরি হয়, তাই ভীষণ অসুবিধায় পড়তে হয়।
কয়েক মাস আগে এনআরসি আতঙ্কের সময় আমার বিদ্যালয়ে এক মাস ধরে প্রতি দিন প্রায় একশো অভিভাবক তাঁদের ছেলেমেয়েদের কাগজপত্রে নামের বানান সংশোধন করার আর্জি নিয়ে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু আদালতে গিয়ে অ্যাফিডেভিট করানো ছাড়া সমাধানের অন্য কোনও উপায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছিল না।
তাই জন্ম শংসাপত্রে বাংলার সঙ্গে ইংরেজি হরফে নাম ও অন্যান্য তথ্য থাকলে সুবিধা হয়। শিক্ষা পর্ষদ ও সংসদগুলিও সমস্ত শংসাপত্রে ইংরেজির সঙ্গে বাংলায় নাম লেখা চালু করতে পারে।
আনন্দ বকসি
রামচন্দ্রখালি নরেন্দ্র শিক্ষা নিকেতন, বাসন্তী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা
এন্তার নম্বর
‘নম্বর আছে তথ্য নেই’ (২-৮) নিবন্ধটির জন্য অমিতাভ গুপ্তকে ধন্যবাদ। ঢালাও নম্বর দেওয়ায় ক্ষতি হচ্ছে ছাত্রদেরই, এই যুক্তির উত্তরে এক প্রবীণ শিক্ষককে বলতে শুনেছি, ‘‘নম্বর কি পৈতৃক সম্পত্তি, যে দেওয়া যাবে না? প্রাণ খুলে নম্বর দিয়ে যাও। এতে সবার মন ভাল থাকবে।’’
এখন ইতিহাসে ১০০ পাওয়ায় আশ্চর্যের কিছু নেই। মাধ্যমিকের সিলেবাস সংক্ষিপ্ত। ছাত্ররা স্কুল থেকেই পায় ১০ নম্বর। বাকি মাল্টিপল চয়েস প্রশ্নে ২০, সত্য-মিথ্যা, ম্যাচিং, ঠিক বিবৃতি ইত্যাদি মিলিয়ে ১৬; আরও ২২ নম্বর থাকে দু’টি করে বাক্যে উত্তর লিখে। একটিমাত্র বড় প্রশ্নের উত্তর লিখতে হয়, যাতে নম্বর থাকে ৮। বেশি নম্বর পাওয়ার জন্য খাটতে হয় না। কম নম্বর পরীক্ষকরা দিতে চান না। কারণ রিভিউ হবে, মামলা হতে পারে। পড়ুয়াদের ঝোঁক বহুল-প্রচারিত সহায়িকার দিকে, যা পড়লে নাকি প্রথম দশে থাকা যায়। পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুও শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ায় না। লেখক নম্বরের পরিবর্তে পার্সেন্টাইলের কথা বলেছেন যা সাধারণের কাছে রাষ্ট্রপতি ভোটের মতোই দুর্বোধ্য হবে।
শংকর কর্মকার
হালিশহর, উত্তর ২৪ পরগনা
মগজে ধোঁয়া?
‘নম্বর আছে, তথ্য নেই’ ঝুড়ি ঝুড়ি নম্বর দেওয়ার বিতর্ককে আবার উস্কে দিল। নিবন্ধের মূল চরিত্র শিবুদা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন যে, এই প্রচুর নম্বর পেয়ে পরের দিকে বিশেষ কিছু লাভ হয় না। বরং সামান্য হলেও ক্ষতির সম্ভাবনা। এখনকার মূল্যায়ন পদ্ধতিকে আবার ঘুরে দেখার সময় এসেছে।
একটি অনুরোধ। কাহিনি বিন্যাসে শিবুদাকে বার বার সিগারেট খেতে হয় কেন? বুদ্ধির গোড়ায় ধোঁয়া কি দিতেই হবে? যিনি লিখেন বা যিনি চলচ্চিত্র তৈরি করেন, তাঁর ব্যক্তিগত কিছু ম্যানারিজ়ম চলচ্চিত্রে বা লেখায় পরিলক্ষিত হয়। সত্যজিৎ রায়ের অনেক চলচ্চিত্রেই তাঁর প্রোটাগনিস্টের হাতে সিগারেট। এ ক্ষেত্রে সিগারেট এড়িয়ে গল্পটা কি বলা যেত না? তাও মন্দের ভাল, এর আগে একটি নিবন্ধে শিবুদা পাঁচটি সিগারেট খেয়েছিলেন। পরের নিবন্ধে শিবুদা সিগারেট ছেড়ে দিয়েছেন বলে যদি মন্তব্য করেন, তা হলে খুশি হব।
সুকুমার বারিক
কলকাতা-২৯
অবসাদ নিয়ে
সুশান্ত সিংহের মৃত্যুর পর অনেকে অবসাদের উৎস, প্রতিকার নিয়ে মতামত দিয়ে চলেছেন। যথা, শরীরের মতো মনও খারাপ হয়। বন্ধুর কাঁধে মাথা রেখে কাঁদলে প্রেশার কুকারের সিটির মতো জীবনের সব চাপ বেরিয়ে যাবে। অবসাদ একটা অসুখ। তার নানা লক্ষণ। এক, প্রবল ক্লান্তি। পা ফেলতেও যেন কষ্ট। সঙ্গে প্রবল দুঃখবোধ। অকারণে কান্না পায়। কোনও বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে, বা সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয়। আত্মবিশ্বাস কমে যায়। একটা কাচের গ্লাস ভেঙে গেলেও মনে হয়— আমি একটা গ্লাস সামলে রাখতে পারি না, চাকরি-সংসারের দায়িত্ব কী করে নেব?
কোনও বুদ্ধিমান মানুষ যখন বুঝতে পারেন, তিনি গুছিয়ে ভাবতে পারছেন না, সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না, তখন সেই অনুভব যে কী ভয়ঙ্কর! যিনি কখনও এই অবস্থায় পড়েননি, তিনি অনুমানও করতে পারবেন না। অবসাদে মানুষ যে আত্মহত্যা করেন, তার কারণ বোধ হয় তখন তাঁর বিচারবুদ্ধি কাজ করে না। ২৫ ডিসেম্বর, ১৯১৪ সাল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পুত্র রথীন্দ্রনাথকে লিখছেন, ‘‘দিনরাত্রি মরবার কথা এবং মরবার ইচ্ছা আমাকে তাড়না করেছে। মনে হয়েছে আমার দ্বারা কিছুই হয়নি এবং হবে না, আমার জীবনটা যেন আগাগোড়া ব্যর্থ;— অন্য সকলের সম্বন্ধেই নৈরাশ্য এবং অনাস্থা।’’ রবীন্দ্রনাথ অবসাদের লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন ছিলেন, কিন্তু তিনিও একে অস্বীকার করতে পারেননি।
এই রোগের সূচনা হয় চোখের জল আর কিছু ভাল না-লাগা দিয়ে। হেসে উড়িয়ে না দিয়ে প্রথমেই ডাক্তারের কাছে রোগীকে নিয়ে গেলে দ্রুত মোকাবিলা করা যায়। আর যাঁরা মুরুব্বির চালে টোটকা দেন, তাঁদের অনুরোধ— জ্ঞান দেবেন না, প্লিজ়।
মৌসুমী বন্দ্যোপাধ্যায় সাহা
কলকাতা-৩৮
মন খারাপ
সম্প্রতি একাদশ শ্রেণিতে উঠেছি। তবে নতুন শ্রেণিকক্ষে কবে যে প্রবেশ করব, বুঝতে পারছি না! এত দিন যে যন্ত্রগুলো অনেক ক্ষণ পড়ার পর অভিভাবকরা কিছু ক্ষণের জন্য ব্যবহার করতে দিতেন, আজ তাতেই চলছে অনলাইন ক্লাস। অনেকে আর্থিক কারণে মোবাইল জোগাড় করতেই হিমশিম খাচ্ছে। পড়াশোনা, খেলাধুলো সবেতেই কার্যত ‘লকডাউন’। একটানা অনলাইন ক্লাসের ফলে শরীর, মন, কিছুই ভাল থাকছে না। ক্লাসরুমের বেঞ্চ, টিফিনে ঝালমুড়ি, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা বাদ দিয়ে, ঘরে বসে চারকোনা যন্ত্রে পড়াশোনা চলছে।
দেবার্পন মুস্তাফি
শ্যামনগর, উত্তর ২৪ পরগনা
করমুক্তি
শুভজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘কর কমান’ চিঠির (৮-৮) প্রেক্ষিতে জানাই বিমার প্রিমিয়ামের উপর ১৮% জিএসটি কেন্দ্রীয় সরকারের আরোপিত। রাজ্য সরকার তার ভাগ পেয়ে থাকে। এই ব্যবস্থায় রাজ্য সরকারের কোনও ভূমিকা নেই। তবে জিএসটি কাউন্সিলে প্রিমিয়াম কর রহিত করার পরামর্শ দিতে পারে রাজ্য সরকার। স্বাস্থ্য বিমা সামাজিক সুরক্ষা, যা দেশের মানবসম্পদকে সমৃদ্ধ করতে সাহায্য করে। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য বিমার ওপর ১৮ শতাংশ কর আরোপ করা অমানবিক। অবিলম্বে স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়াম করমুক্ত করা হোক।
অরুণ ভান্ডারি
রামচন্দ্রপুর, হাওড়া
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy