Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus Lockdown

কারও ভিন্‌ রাজ্যে গিয়ে টাকা ফুরিয়ে গিয়েছে, কারও মা একা, নানা সমস্যায় মানুষ

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ২১:৩১
Share: Save:

চিঠি এক) মা-বাবা খুব চিন্তায় রয়েছেন, যদি বাড়ি ফিরতে পারতাম

মার্চ মাসের পুরো মাইনে দেয়নি কোম্পানি। গুজরাতের সুরত শহরে তিরুপতি নগরে আটকে রয়েছি। যা কিছু সঞ্চয় ছিল, তা শেষ হওয়ার পথে। স্থানীয় মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনও রকম সাহায্য মিলছে না গত দু’দিন থেকে। এর পরেও যদি লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন, আমাদের প্রাণের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের এক প্রত্যন্ত গ্রামে বাড়ি। মা-বাবাও খুব চিন্তায় রয়েছেন। যদি বাড়ি ফিরতে পারতাম, তা হলে অন্তত অনাহারে দিন কাটানোর আশঙ্কা হত না।

মিজানুর রহমান

চিঠি দুই) হোটেলে বন্দি, পাঁচশোরও বেশি বাঙালির সঙ্গে আমিও আটকে পড়েছি

গত মাসের ২৪ তারিখে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় আমার উড়ান ছিল। সেটি বাতিল করা হয়। ফলে এখন হোটেলবন্দি হয়ে রয়েছি। আমার মতো আরও অনেক (প্রায় পাঁচশোর বেশি) বাঙালি এখানে আটকে রয়েছেন। অনেক বাংলাদেশিও রয়েছেন।

আমরা (আমি আর আমার স্ত্রী) পাঁচ বছরের ছেলেকে ওর মাসির কাছে মালদহতে রেখে এসেছি। আমাদের ছেড়ে থাকতে এত দিন ওর খুব কষ্ট হচ্ছে। আর কত দিন এই ভাবে চলতে হবে, বুঝতে পারছি না। হোটেল ভাড়াও অনেক। এখন যে কোনও উপায়ে বাড়ি পৌঁছতে চাই।

মহম্মদ রহমতুল্লাহ শেখ, মুর্শিদাবাদ, মোবাইল নম্বর: ৯৮৩২২৫৪৮৯০, ইমেল: sunnyx07@gmail.com

চিঠি তিন) সব টাকা শেষ, বাংলাদেশ থেকে ফেরার ব্যবস্থা করে দিন

আমি বাংলাদেশে ঘুরতে এসেছিলাম। এখন দুটো দেশেই লকডাউন চলছে। এক জন বন্ধুর বাড়িতে থাকছি। যা টাকা এনেছিলাম, সব শেষ হয়ে গিয়েছে। আমি বাড়ি ফিরতে চাই। দয়া করে কিছু একটা ব্যবস্থা করে দিন।

শেখ হোজাফা রহমান, মোবাইল নম্বর: ৯৭৭৫৫০৭৯৬১, ইমেল: hojayfa25@gmail.com

চিঠি চার) হায়দরাবাদের হস্টেলে আটকে, বাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করুন

এই লকডাউনের জন্য আজ আঠারো দিন ধরে হায়দরাবাদের গচিবল্লী এলাকার একটি হস্টেলে আটকে রয়েছি। আমি সাউথ ইন্ডিয়া শপিং মলের এক জন কর্মী। গত ২২ মার্চ লকডাউনের জেরে শপিং মল বন্ধ হয়ে যায়। পর্যাপ্ত টাকা যা ছিল, তা-ও ফুরিয়ে গিয়েছে। এখন আবার শোনা যাচ্ছে যে, লকডাউনের সময়সীমা ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকছে না। যার জেরে এর সময়সীমা বাড়ার সম্ভাবনা থাকছে গোটা দেশে। এই সঙ্কটজনক পরিস্থিতির মধ্যে যদি ট্রেন পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায়, তা হলে পরিস্থিতি আরও শোচনীয় হবে। তাই প্রশাসনের কাছে আমার একটাই অনুরোধ, যেন বাড়ি পৌঁছনোর জন্য কিছু ব্যবস্থা করা হয়। আপনাদের বলা করোনাভাইরাসকে রোখার জরুরি নিয়মাবলী অক্ষরে অক্ষরে পালন করছি।

নাড়ু গোপাল গিরি, মোবাইল: ৬২৯৬৮৩১৮৯৩, ইমেল: narugopalgiri2000@gmail.com

চিঠি পাঁচ) ২৪ মার্চের পর থেকে কাজ বন্ধ, বাড়ি ফিরতে চাই

আমি এবং আমার সঙ্গে আরও ন’জন বাঙালি অন্ধ্রপ্রদেশের রেনিগুন্টায় একটা কোম্পানির ক্যান্টিনে কাজ করি। ২৪ মার্চের পর থেকে কাজ বন্ধ। কোম্পানি আমাদের সকলের আট-ন’দিনের বেতন কেটে নিয়েছে। আমরা এখানে খুব কষ্টে রয়েছি। আমরা সবাই বাড়ি যেতে চাই।

প্রশান্ত মণ্ডল, বাগজুড়ি, বাঁকুড়া।

চিঠি ছয়) ১০ দিন হয়ে গেলেও ইপিএফও-র টাকা পাচ্ছি না

গত ১ এপ্রিল ইপিএফও দফতরে অ্যাডভান্সের জন্য আবেদন করেছিলাম। করোনা-পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকারি নিয়মানুসারে আবেদনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই তা পাশ হওয়ার কথা। তবে ১০ দিন হয়ে গেলেও আমার আবেদন প্রক্রিয়ায় মধ্যে রয়েছে। রিজিওনাল অফিসে কেউ ফোন ধরছেন না। সরকারের হেল্পলাইন নম্বরও বন্ধ। এটা সত্যিই শোচনীয় পরিস্থিতি। এই মুহূর্তে খুব জরুরি ভিত্তিতে টাকার প্রয়োজন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টা জানানো ছাড়া আর কোনও উপায় নেই।

আমার অনুরোধ, যদি আপনারা এই বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন, তা হলে আমার মতো বহু গরিব মানুষের খুবই উপকার হয়। এমন বহু গরিব মানুষজন রয়েছেন, যাঁদের কোনও না কোনও সমস্যা রয়েছে, আপনাদের সাহায্য পেলে তাঁরা নতুন জীবন পাবেন। আমার একান্ত অনুরোধ, এই বিষয়টি যদি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আপনারা তুলে ধরেন।

শুভঙ্কর সাহা, মোবাইল নম্বর: ৮৬১৭৮৯১৪৯৩, ইমেল: subhankar5044784@gmail.com

চিঠি সাত) মা-বাবা বর্ধমানে, ওঁদের সঙ্গে দেখা করতে চাই

বর্ধমানের বাসিন্দা হলেও এখন কর্মসূত্রে হায়দরাবাদে থাকি। এখানে আমার স্ত্রী এবং চার বছরের মেয়েকে নিয়ে রয়েছি। বর্ধমানে আমার মা-বাবা রয়েছেন। বাবার বয়স সত্তরের উপর আর মা’র বয়স পঁয়ষট্টির বেশি। বাবা শ্বাসকষ্টের রোগী। আজ সকালেই ওঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ঘরে নেবুলাইজেশন সাপোর্ট দেওয়ার পর তিনি সুস্থ হন। আমরাও ওঁদের জন্যে চিন্তিত এবং ওঁরাও আমাদের জন্যে চিন্তিত। আমরা বাড়ি ফিরতে চাই। বা ওঁদের হায়দরাবাদে নিয়ে আসতে চাই। যদি কিছু ব্যবস্থা করতে পারেন খুব ভাল হয়।

পলাশ, বর্ধমান, ইমেল: palash.kanti.kundu.90@gmail.com

চিঠি আট) লকডাউন শিথিল করলে বাড়ি ফিরতে পারি

আমি এবং আমার বাবা, দু’জনেই চিকিৎসক। ভিলাইতে এসে লকডাউনে আটকে পড়েছি। আমাদের নার্সিং হোম রয়েছে। সেখানকার স্টাফেরা আমাদের অনুপস্থিতিতে বিনা বেতনে অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে দিনযাপন করছেন। নিজেদের বাড়িতেও ফিরতে পারছেন না। রোগীরা চিকিৎসার জন্য এসে ফিরে যাচ্ছেন। অনুগ্রহ করে যদি কয়েকদিনের জন্য লকডাউন শিথিল করা হয়, তবে বাড়ি ফিরতে পারি।

আনোয়ারা খাতুন

চিঠি নয়) কলকাতায় মা একা, বাড়িতে ফিরতে চাই

স্ত্রী, মেয়ে এবং ৭২ বছর বয়সি শাশুড়িকে নিয়ে আমাদের পরিবারে চার জন সদস্য। নবী মুম্বইয়ের খারঘর এলাকায় আটকে রয়েছি। কলকাতায় ফিরতে চাই।

বিশেষ করে, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। নবী মুম্বইয়ের খারঘর এলাকায় গত পাঁচ বছর ধরে বসবাস করছি। আমার মেয়ের ক্লাস টেনের বোর্ডের পরীক্ষা শেষ হয়েছে হত ১৮ মার্চ। তার পর কলকাতায় ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। সে জন্য আমাদের বাড়ির জিনিসপত্র ‘প্যাকার্স’দের নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল ২২ মার্চ। এবং ২৩ মার্চের ফ্লাইটে কলকাতায় পৌঁছনোর কথা।

যে হেতু আমার শাশুড়ি হার্টের রোগী এবং তাঁর পেসমেকারও রয়েছে। সে হেতু আরও জলদি কলকাতা ফিরতে চাইছিলাম। তা ছাড়া, আমার ৭১ বছর বয়সি মা-ও কলকাতার বাড়িতে এক, অসহায় অবস্থায় রয়েছেন।

দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। এই চিঠিটা দুই মুখ্যমন্ত্রীরই নজরে আনার ব্যবস্থা করুন। যাতে আমরা কোনও ভাবে কলকাতায় ফিরতে পারি।

মৌসুম চক্রবর্তী, মোবাইল নম্বর: ৭০৪৫০১২৭২৪, ইমেল: mausum.chakraborty1@gmail.com

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Lockdown Letters To The Editors Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy