Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Coronavirus

হোটেলভাড়া দিতে পারছি না, ফেরান, না হলে খাব কী?

এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।এই লকডাউন পরিস্থিতিতে পাঠকদের থেকে তাঁদের অবস্থার কথা, তাঁদের চারপাশের অবস্থার কথা জানতে চাইছি আমরা। সেই সূত্রেই নানান ধরনের সমস্যা পাঠকরা লিখে জানাচ্ছেন। পাঠাচ্ছেন অন্যান্য খবরাখবরও। সমস্যায় পড়া মানুষদের কথা সরকার, প্রশাসন, এবং অবশ্যই আমাদের সব পাঠকের সামনে তুলে ধরতে আমরা ম‌নোনীত লেখাগুলি প্রকাশ করছি।

বর্তমান ও ভবিষ্যত একেবারেই অন্ধকারে। ছবি- এএফপি-র সৌজন্যে।

বর্তমান ও ভবিষ্যত একেবারেই অন্ধকারে। ছবি- এএফপি-র সৌজন্যে।

শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২০ ১৬:৪৩
Share: Save:

চিঠি-১: রাজস্থানের শিকার থেকে আমাকে খড়দহের বাড়িতে ফেরান

আমি গত ২৪ মার্চে রাজস্থানের শিকারে একটি কোম্পানিতে কাজে আসি। কিন্তু আমার কোম্পানি তখন বাড়ি যেতে দেয়নি। বাড়ি গেলে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া বলে ভয় দেখায়। কিন্তু যা অবস্থা বাড়িতে আমাকে যেতেই হবে। কিন্তু এখানে করোনা ছড়িয়ে পড়াতে খুব আশঙ্কায় আছি। এখানে যাঁদের সঙ্গে থাকি কেউই তেমন ভাবে করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার বিধি মানছেন না। তাই সব সময় কী হয় কী হয় আতঙ্কে থাকি। বাড়িতে আমার চার বছরের মেয়ে ও স্ত্রী থাকেন। স্ত্রীরও শরীর ভাল না। বাড়িতে অন্য কেউ সাহায্য করার মতো নেই। এই অবস্থায় যে কোনও ভাবে আমার খড়দহের বাড়িতে ফেরা দরকার।

নির্মল মজুমদার, হরিরামপুর বহর, শিকার, রাজস্থান, মোবাইল-৯২৩১৬৯৮৯০১, ইমেল- Nirmal1973@gmail.com

চিঠি-২: ভেলোরে এসে আটকে পড়েছি, হুগলির বাড়িতে ফেরান

গত ১৮ মার্চ হুগলি থেকে ভেলোরে মেয়েকে ডাক্তার দেখাতে এসে লকডাউনের জন্য আটকে পড়েছি। গত ২৬ মার্চ এবং ১ এপ্রিলের টিকিট কাটা ছিল। ক্যান্সেল হয়ে গিয়েছে। আবার গত ১৬ এপ্রিলেরও টিকিট কাটা ছিল। কিন্তু সেটাও লকডাউন বেড়ে যাওয়ায় বাতিল হয়ে গেল। হাতের টাকাও শেষ প্রায়। এই ভাবে আর থাকা যাচ্ছে না। ছোট্ট মেয়েটার অনেক অসুবিধা হচ্ছে এই ভাবে থাকতে। বাড়ি ফিরে গেলে আমাদের কোয়রিন্টিন মেনে আলাদা থাকার ব্যবস্থাও করা আছে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ, আমাদের ফেরার ব্যবস্থা করুন।

ইমেল- deymou87@gmail.com

চিঠি-৩: উত্তরপ্রদেশ থেকে লালগোলায় ফেরান

মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী, আমরা ৬০ জন আছি উত্তরপ্রদেশে সান জেলার রবিদাস নগরে (থানা সুরিয়ামা, পোস্ট সুরিয়ামা)। আমাদের এখান থেকে নিয়ে যাওয়া হোক বা আমাদের খাবার দেওয়া ও কাজ করার অনুমতি দেওয়া হোক।

মহম্মদ পিয়ারূল ইসলাম, মুর্শিদাবাদ, লালগোলা, মোবাইল- ৮১৪৫৫৫৪৭৬৮, ইমেল- mdislampearul@gmail.com

চিঠি-৪: হাতিয়ারায় ভাই আটকে রয়েছে, ফেরান উত্তর দিনাজপুরে

আমি উত্তর দিনাজপুর থেকে বলছি। আমার ভাই কলকাতার হাতিয়ারাতে আটকে রয়েছে। ট্রেন, গাড়ি না চলার কারণে বাড়ি ফিরতে পারছে না। একা একা অনেক অসুবিধের মধ্যে আছে।

বাড়িতে খুব টেনশনে রয়েছেন বাবা, মা। আপনাদের কাছে একটাই অনুরোধ, কলকাতায় আটকে পড়া সকল ছাত্রছাত্রীকে নিজ নিজ জেলায় পাঠানোর ব্যবস্থা করা হোক। আপনার সম্পাদকীয় কলাম এ এই বিষয়ে একটু আলোকপাত করবেন, আশা রাখলাম।

ইমেল- emandon1995@gmail.com

চিঠি-৫: দেহরাদুনে আটকে ছেলে, ওকে বাংলায় ফেরান

দেহরাদুন থেকে পশ্চিমবঙ্গে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুন আমাদের। আমার ছেলে চিরঞ্জীব দাশ হুগলি থেকে গত ২০ ফেব্রুয়ারিতে দেহরাদুনে গিয়েছে কলকাতার একটি অডিট ফার্মের হয়ে অডিট করতে। লকডাউনে আটকে পড়েছে। পয়সাকড়িও শেষ। মার্চ মাসের পুরো মাইনে দেবে না বলেছে কোম্পানি। রেল/বিমান ৩ মে পর্যন্ত চলবে না। আমার আর ওর মায়ের শরীর খুবই খারাপ। ও বাড়ি আসার জন্য ছটফট করছে। দয়া করে ওকে সরকার বা পুলিশ প্রশাসনের তরফে বাড়ি ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করুন।

নিমাই দাস। মোবাইল- ৯৭৪৮৭০৫৪২৫, ইমেল- ​nemaidas0785@gmail.com

চিঠি-৬: বৃদ্ধা মা বেহালায় আটকে আছেন, ওঁর খাবার, ওষুধ লাগবে

আমার মা ৭০ বছর বয়সি বৃদ্ধা। বেহালায় একটি ভাড়া বাড়িতে একা পড়ে আছেন। আমি তার মেয়ে দুরে থাকি, তাই কোনও রকম সাহায্য করতে পারছি না। মায়ের রেশনকার্ড ছয় মাস আগে হারিয়ে গিয়েছে, তাই রেশনের চাল বা অন্যান্য খাবার সামগ্রী কেউ এনে দিতে পারছেন না। আন্তরিকভাবে অনুরোধ করি, যদি আপনাদের মাধ্যমে কোনও রকম সহায়তা কেউ করতে পারেন, খাবার এবং ওষুধপত্র সরবরাহ করে তবে আমি ও মা কৃতজ্ঞ থাকব। মায়ের ফোন নম্বর- ৯০০৭৭৮৭৭০৯।

বন্দনা আচার্য, ফোন নম্বর-৯৩৩০৪০৮৯২৫, ইমেল-acharjeebandana@gmail.com

চিঠি-৭: মুম্বইয়ে আটকে আছি, হোটেল ভাড়া দিতে পারছি না!

ক্যানসারের চিকিৎসার জন্য আমরা পরিবারের তিন জন মুম্বইয়ে আটকে রয়েছি। হাতে টাকা নেই আর। হোটেলের ভাড়া গুনতে পারছি না। যে ভাবেই হোক আমাদের বাড়িতে ফেরানোর ব্যবস্থা করুন।

সায়ন মুখোপাধ্যায়, আসানসোল, বর্ধমান, মোবাইল-৯৮৩২৭৭৭৪৬০, ইমেল- mkhrj.sndp@gmail.com

চিঠি-৮: টাকাপয়সা শেষ, ফিরতেই হবে মুর্শিদাবাদে

আমি সিটি কলেজ অফ কমার্স অ্যান্ড বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কলেজের ছাত্র। বাড়ি মুর্শিদাবাদ জেলার রেজিনগর থানা এলাকায়। আমি এয়ারপোর্ট এরিয়ার একটা ফ্লাটে ভাড়া দিয়ে থাকি। সঙ্গে আমার বোন ও মা থাকেন। বোন দমদম মতিঝিল কলেজের ছাত্রী। আমরা পড়াশোনা করতে এসে আটকে গিয়েছি। আমার বাবা আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসে এখানেই আটকে গিয়েছেন। খুব অসুবিধাতে আছি, টাকাপয়সা সব শেষ, কোনও রকমে অল্প কিছু খেয়ে দিন কাটছে। মুর্শিদাবাদ ফিরে যাওয়াটা খুব দরকার। আমাদের একটু অনুমতি দরকার, তা হলে মুর্শিদাবাদ থেকে গাড়ি এসে আমাদের নিয়ে যাবে। এ ব্যাপারে আপনাদের কাছে সাহায্যের অনুরোধ রইল।

শতদল ঘোষ, মোবাইল- ৮৭৫৯২৮৫৮৯০, ইমেল- ghoshshatadal08@outlook.com

চিঠি-৯: স্যান্ডিয়েগোতে সকলেই নিয়ম মেনে চলছেন লকডাউনে

আমি গত চোদ্দ বছর আমেরিকাতে ছাত্র ছিলাম। বর্তমানে কর্মরত। এই দীর্ঘ সময়ে এটা একটা ভয়াবহ অভিজ্ঞতা আমার জীবনের। আমি ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান্ডিয়েগোতে থাকি। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাকে সবচেয়ে চিন্তায় রেখেছেন আমার মা, বাবা। কারণ বর্তমানে ওঁরা আমার কাছে। এখানে পুরোপুরি লকডাউন চলছে তবে আমাদের বাড়িই এখন কর্মস্থল। তবে লকডাউন কিন্তু কঠোর ভাবে মেনে চলছে সকলে। একদম শুরুতে সামান্য আলগা ছিল কিন্তু মৃত্যুর হার যত বেড়েছে লকডাউন সার্বিক ভাবে সফল করতে যেন জনতাও বদ্ধপরিকর। রাস্তাঘাট ফাঁকা, রেস্টুরেন্টে এ শুধু

টেক-অ্যাওয়ে আর খাদ্যসামগ্রীর দোকানে সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য নির্দিষ্ট সময় করা আছে, সেই সময়ে আমাদের প্রবেশ নিষেধ। সব কিছুই নির্দিষ্ট দামে পাওয়া যাচ্ছে। তবে আমাদের বিনা কারণে অতিরিক্ত কেনাকাটা করার মানসিকতা দোকানে গেলে দেখা যাচ্ছে। ভারতীয় দোকানে সমস্ত কিছুই সঠিক দামে পাওয়া যাচ্ছে। আশা করি, আমরা ঠিক মত লকডাউন মেনে চললে নিশ্চয়ই এর থেকে মুক্তি পাব। ভারতবাসীর কাছেও একই অনুরোধ রইল। লকডাউন মেনে চলুন। তা হলে আমরা সকলেই ভাল থাকব।

ডাঃ নীলোৎপল রায়, গবেষক, ক্যালিফোর্নিয়া, আমেরিকা

চিঠি-১০: কবে ফিরব? ঢাকায় ভারতীয় দূতাবাস কিছুই বলছে না!

গত প্রায় ২ বছর অফিসের কাজে বাংলাদেশের ঢাকাতে আছি। আছেন বেশ কিছু ভারতীয়। লকডাউনের আগে থেকেই প্লেন বন্ধ, লকডাউনের সময় থেকে স্থলবন্দরগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বহু ভারতীয় বেনাপোল সীমান্তে আটকে আছেন। এ দিকে বাংলাদেশেও লকডাউন চলছে।

বৃদ্ধ বাবা, মা আছেন নদিয়ার চাকদহে, স্ত্রী-পুত্র আছে কলকাতায়। লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধি করায় কত দিনে বাড়ি ফিরতে পারব তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এখানে ভারতীয় দূতাবাসে ফোন করলে কোনও খবর দিতে পারছে না, নেই কোন সহায়তা, তাদের ওয়েবসাইটে দায়সারা কিছু নির্দেশ টাঙিয়েই দায়িত্ব শেষ করছে। আপাতত ভাল আছি, বিদেশে আটকে পড়া ভারতীয়দের দেশে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব বা তাদের খোঁজখবর নেওয়ারর দায় কি দেশের বিদেশ মন্ত্রকের নয়?

আশুতোষ ভট্টাচার্য, ঢাকা, বাংলাদেশ, ইমেল- ashutoshb1970@gmail.com

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus lockdown Covid-19 editorial sampadak samipeshu
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy