Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

কালা কানুন

বিজেপি জমানার বিগত পাঁচ বছরে কংগ্রেসকৃত কড়া আইনগুলোকেই ঘষেমেজে আরও কড়কড়ে শাণিত করা হয়েছে। 

দেশভক্তির নতুন ছাঁচে ফেলে ইউএপিএ’র এই সংশোধনী এনেছে সরকার। ফাইল চিত্র

দেশভক্তির নতুন ছাঁচে ফেলে ইউএপিএ’র এই সংশোধনী এনেছে সরকার। ফাইল চিত্র

চন্দ্রপ্রকাশ সরকার
বিবেকানন্দ পল্লি, মুর্শিদাবাদ শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৯ ০০:২৯
Share: Save:

‘গণতন্ত্রের অন্তর্জলি যাত্রা’ (১২-৮) শীর্ষক তাপস সিংহের নিবন্ধটিতে লেখক বিস্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘‘সংখ্যার জাদুখেলায় অমিত শাহরা ইতিমধ্যে এই সংশোধনী (ইউএপিএ) রাজ্যসভাতেও পাশ করিয়ে নিয়েছেন। এবং কী আশ্চর্য কংগ্রেসও এই সংশোধনীতে সায় দিয়েছে!’’ এতে আশ্চর্যের কী আছে, বুঝলাম না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এ দেশে যতগুলি কালা-কানুন প্রণীত হয়েছে, তার প্রায় সবগুলিরই জনক কংগ্রেস। ইউএপিএ, এসমা, মিসা, নাসা, টাডা, আফস্পা ইত্যাদি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী প্রতিটি কালা কানুনই তো কংগ্রেসেরই কীর্তি! বিজেপি জমানার বিগত পাঁচ বছরে কংগ্রেসকৃত কড়া আইনগুলোকেই ঘষেমেজে আরও কড়কড়ে শাণিত করা হয়েছে।
৩৭০ বিলোপের ঠিক আগেই, ইউএপিএ’র এই শাণিতকরণ বা মোদী-শাহি সংস্করণ অবশ্যই বিশেষ উদ্দেশ্যমূলক। প্রতি কুড়ি জন লোক পিছু এক জন সেনা লেলিয়ে দিয়েও স্বাধিকার চাওয়া যে-কাশ্মীরিদের দমন করা যাচ্ছে না, তাদের জন্য এই নবতর ইউএপিএ হতে পারে মোক্ষম দাওয়াই! তাপসবাবু লিখেছেন, ‘‘২০০৪ সালে ইউএপিএ কার্যকর হওয়ার পরে এই ২০১৯ সাল পর্যন্ত এই আইনটির প্রয়োগ বা ভাল-মন্দ নিয়ে সংসদে কোনও রিপোর্ট পেশ করা হয়নি ছোটখাটো প্রশ্নোত্তরে এর প্রসঙ্গ ওঠা ছাড়া।’’ আসলে আইনটি প্রণীত হয়েছে ১৯৬৭ সালে, ইন্দিরা জমানায়। পরবর্তী কালে বিভিন্ন সময় তা সংশোধিত হয়েছে। ২০০৪ সালের পর ২০০৮ সালে এবং সর্বশেষ এ বছর সংশোধিত হল।
আইনটির অপপ্রয়োগ যে হচ্ছে, তা বলা বাহুল্য। শুধুমাত্র ২০১৮ সালেই অন্তত আট জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে এই আইনে গ্রেফতার করা হয়েছে, যার মধ্যে কবি ভারাভারা রাও, সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী গৌতম নওলাখা, দলিত ও জনজাতি অধিকার আইন বিশেষজ্ঞ সুরেন্দ্র গ্যাডলিং, জনজাতি অধিকার আন্দোলনের বিশিষ্ট কর্মী সুধা ভরদ্বাজ রয়েছেন। এঁদের কাউকেই কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত প্রমাণ করে দেশদ্রোহী প্রতিপন্ন করা যাচ্ছে না! এটা শাসক বিজেপির বড় দুঃখের জায়গা। সেই দুঃখ মোচনকল্পেই দেশভক্তির নতুন ছাঁচে ফেলে ইউএপিএ’র এই সংশোধনী। শাসকের বিরোধী মানেই দেশদ্রোহী— নবীকৃত ইউএপিএ’র খাঁড়ায় বলি হওয়ার যোগ্য!


অন্য বিষয়গুলি:

Misa Tada BJP Congress
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy