অ-মাইক নাট্যাচার্য
মফস্সলের একটি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রিত হয়ে এসেছেন এক প্রখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব। তাঁর কথা শোনার জন্য প্রচুর শ্রোতা উপস্থিত হয়েছেন স্থানীয় পুরসভা প্রাঙ্গণে। শিল্পী মঞ্চে প্রবেশ করে দর্শক-শ্রোতাদের অভিবাদন জানিয়ে মঞ্চের সামনে রাখা মাইক্রোফোনটিকে সরিয়ে নিতে বললেন। সকলে মুখ চাওয়া-চাওয়ি করতে লাগল। ঈষৎ হেসে তিনি বললেন, ‘আমাদের দেশে যাঁরা বাগ্মিতার জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন, তাঁদের অনেকেই খালি গলায় বলে গেছেন। কারণ তখন এই যন্ত্রটির ব্যাপক প্রচলন হয়নি। আমি আশ্বস্ত করছি মাইক ছাড়াই আমার কথা আপনারা সকলেই শুনতে পাবেন।’
তিনি বলা শুরু করলেন। উদাত্ত কণ্ঠস্বরে ও বাচনিক ব্যঞ্জনায় অগণিত উৎকর্ণ শ্রোতাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখলেন শিল্পী। ঘটনাটি ঘটেছিল পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি সময়ে কৃষ্ণনগর শহরে নদিয়া জেলা সম্মেলনের অনুষ্ঠানে। আর সে দিনের সেই ‘অ-মাইক’ ভাষণের বক্তা ছিলেন নাট্যাচার্য শিশিরকুমার ভাদুড়ি (ছবিতে), যাঁর জন্মদিন নীরবে পার হয়ে গেল গত ২ অক্টোবর, জন্মমাসও শেষ হওয়ার মুখে। তাঁর স্মরণে কোথাও কোনও অনুষ্ঠান, সভার খবর পাওয়া যায়নি, নাট্যদলগুলিও নিশ্চুপ। যাঁরা তাঁর সান্নিধ্য লাভ করেছেন বা একসঙ্গে অভিনয় করে গৌরবান্বিত হয়েছেন, তাঁরাও আশ্চর্য রকম নীরব। গত ২ অক্টোবর তাঁর ১২৮-তম জন্মদিনে একটি বাংলা চ্যানেলে কয়েক জন বিশিষ্ট মানুষের ছবিসহ পরিচিতি উল্লেখ করা হল। নাট্যচার্য সেখানে অনুপস্থিত দেখে ভীষণ বিস্মিত হলাম। বঙ্গ রঙ্গমঞ্চের নবযুগের প্রবর্তক শিশিরকুমার ভাদুড়ি বঙ্গবাসীর কাছে প্রায় বিস্মৃত হতে চলেছেন।
ভবানী মোদক কলকাতা-৯৩
অনুব্রতর হুমকি
আবার সংবাদের শিরোনামে অনুব্রত মণ্ডল। ওঁর কুকথার হুমকি অনেক তৃণমূল কর্মীও অনুমোদন করেন না। যে ভাষায় উনি পুলিশের এক জন ডিএসপি-কে সবার সামনে ধমকধামক দিয়েছেন এবং মিডিয়ার কল্যাণে সারা দেশের মানুষ তা দেখেছে, তাতে তিনি আমাদের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর মাথা হেঁট করে দিয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে যখন উন্নয়নের চাকা গড়ানো শুরু হয়েছে, সেই সময় শাসক দলের এক জন দায়িত্ববান নেতার এই আচরণ নিশ্চয়ই সমর্থনযোগ্য নয়। বিদেশি লগ্নির জন্য মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী দিনরাত যে পরিশ্রম করে চলেছেন, সেটা বৃথা হয়ে যাবে কিছু নেতার এই রকম আচরণের জন্য। তর্কের খাতিরে অনেক যুক্তি দিয়ে অনুব্রতবাবুর হুমকিকে গ্রহণযোগ্য করে তোলা যায়। যেমন, বামফ্রন্ট আমলে এর থেকেও বেশি পুলিশ-প্রশাসনের উপর রাজনৈতিক চাপ থাকত, বিজেপির দিলীপ ঘোষও পুলিশকে অনেক হুমকি দেন ইত্যাদি। কিন্তু এই সব থেকে মুক্তি পেতেই তো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ক্ষমতায় আনা হয়েছে। তাই জনতার কথা মাথায় রেখে, দলের ঊর্ধ্বে উঠে খারাপকে খারাপ বলতে হবে। তাতেই দলেরও মঙ্গল, রাজ্যেরও মঙ্গল।
সমীরবরণ সাহা কলকাতা-৮১
রসগোল্লার রস
মন্দ লাগছে না রসগোল্লা নিয়ে দড়ি টানাটানি। সন্ত্রাস, রক্তপাত, ধর্ষণ কিংবা রাজনৈতিক আকচা-আকচির মধ্যে ক’দিন রসসিক্ত রিলিফ দিচ্ছে কাগজ। এর পর সন্দেশ থেকে নিখুঁতি— সব কিছু নিয়েই চর্চা চলুক। ডায়েটিং নিয়ে ব্যতিব্যস্ত থেকে ডায়াবেটিক— সবাই অন্তত মানসভক্ষণে তৃপ্ত(?) হয়ে উঠুন। বিজয় উৎসবটা চলুক বেশ কিছু দিন। তবে একটা আশঙ্কার মেঘ উঁকি দিচ্ছে। আমাদের ঘরের আদরের বস্তুটি এক বার জিএসটি-র গুঁতো সয়েছে। লেবেল-ছাপ্পা গায়ে আবার এক প্রস্ত দাম বেড়ে সাধারণের নাগালের বাইরে না চলে যায়। আর একটা সাবধানবাণী। ছবিতে দেখলাম (১৬-১১), হাঁ-মুখে গোটা রসগোল্লা। দাঁত দিয়ে অথবা আঙুলে টুকরো করে, রসনার রসের সঙ্গে রসগোল্লার রস মাখামাখি করে তবে গলাধঃকরণ করতে হবে। উৎসবের মেজাজে ভুললে চলবে না, গোটা রসগোল্লা গলায় ঠেকলে সমূহ বিপদ।
বিশ্বনাথ পাকড়াশি শ্রীরামপুর-৩, হুগলি
সামলে কিন্তু
বেশ কিছু দিন ধরে লক্ষ করছি, টিভির সাংবাদিকরা যখন কথা বলছেন বা সংবাদচিত্র দেখাচ্ছেন, তখন প্রতিটি বাক্যে একাধিক বার ‘কিন্তু’ শব্দটি ব্যবহার করছেন অনেকটা মুদ্রাদোষের মতো। যেমন বলছেন, ‘দার্জিলিং কিন্তু ক্রমশ স্বাভাবিক হয়ে আসছে। দোকানপাট খুললেও কিন্তু ক্রেতাদের ভিড় এখনও তেমন দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় প্রশাসন কিন্তু দাবি করছে, সব স্বাভাবিক।’ বাংলা ভাষার দুর্দশা নিয়ে বিদ্বজ্জনেরা সকলেই চিন্তিত। কিন্তু দৃশ্য-সংবাদমাধ্যমের একটি অংশ সচেতন ভাবে কি না জানি না, এই মুমূর্ষু ভাষাটির প্রতি উদাসীন। একটি ভাষা অন্য ভাষার থেকে শব্দ সংগ্রহ করে তা আত্তিকরণ করে সমৃদ্ধ হয়। বাংলাও তার ব্যতিক্রম নয়। চেয়ার-টেবিল-কাপ-ডিশ প্রভৃতি আরও বহু শব্দের বঙ্গীকরণ হয়েছে। নতুন একটি শব্দ ‘ভাইরাল’ এখন যত্রতত্র বাংলা বাক্যে ব্যবহৃত হচ্ছে। এটা মেনে নিলেও ‘কিন্তু’ শব্দটিকে যে ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা বাংলা ভাষাকে সমৃদ্ধ করছে না। কারণ, শব্দটি নতুন আমদানি নয়, বাংলা ভাষারই অন্তর্গত একটি শব্দ। কথ্য ভাষায় এর অপপ্রয়োগ বড়ই ‘কর্ণকটু’ মনে হচ্ছে। যে সব সাংবাদিক বন্ধু এই শব্দটি মুদ্রদোষের মতো ব্যবহার করছেন, তা তাঁদের কানে কী রকম ঠেকছে জানি না, তবে ‘কিন্তু’ ব্যবহারে তাঁদের একটু সংযত হওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।
নন্দদুলাল রায়চৌধুরী বিধানপল্লি, খরিদা, খড়্গপুর
সীমান্তে দুর্ভোগ
আমি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সম্পাদক। গত ৮ অক্টোবর বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহ-সভাপতি সুবিমল মিশ্র এবং প্রকাশনাধ্যক্ষ অভিজিৎ রায়-সহ বিশেষ কাজে বাংলাদেশ যাই। সঙ্গে ছিলেন আমাদের স্ত্রী-রা। সকলেই প্রবীণ নাগরিক। সীমান্ত অতিক্রমের সময় প্রয়োজনীয় কাজকর্ম সম্পন্ন করতে গিয়ে চরম অব্যবস্থার সম্মুখীন হই। আমাদের যেতে হয়েছিল বেনাপোল-পেট্রাপোল বর্ডার হয়ে। নিরাপত্তা সীমারেখার প্রথম স্তরটি অতিক্রম করার পর দেখা গেল বিশাল লাইন। কয়েক হাজার মানুষ সেখানে দাঁড়িয়ে। মাথার উপর প্রয়োজনীয় আচ্ছাদন নেই। নেই কোনও শৌচালয় বা পানীয় জলের ব্যবস্থা। প্রায় ৬ ঘণ্টা দাঁড়িয়ে, সঙ্গের ব্যাগ ও জিনিসপত্র বহন করে পাসপোর্টে ছাপ মেরে ও-পারে যেতে হল। ফেরার সময় আরও দুর্বিষহ অবস্থা। এ বার দাঁড়াতে হল দু’বার। প্রথম বার সেই কয়েক হাজার মানুষের ভিড়। দাঁড়াতে হল খোলা মাঠে। প্রচণ্ড রোদে প্রবীণরা তো বটেই, অল্পবয়সিরাও অসহনীয় যন্ত্রণার সম্মুখীন হয়েছে। উল্লেখ্য যে, এই মানুষগুলিই সীমান্ত পার হয়ে ও-পারে বাংলাদেশে
যাচ্ছে এবং বাংলাদেশ থেকে এ-পারে আসছে। সেখানে সময় লাগছে আধ ঘণ্টা। বাংলাদেশে ব্যবস্থাপনা প্রশংসনীয়, আছে উন্নতমানের শৌচালয়ও।
প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি কেদারনাথের সামনে বক্তব্য রাখার সময় শৌচালয়কে ‘ইজ্জৎ ঘর’ বলেছেন। এই ‘ইজ্জৎ ঘর’ ও প্রয়োজনীয় পানীয় জলের ব্যবস্থা কি ভারত সরকার আন্তর্জাতিক সীমান্তে করতে পারে না?
রতনকুমার নন্দী কলকাতা-৬
দুর্ঘটনা বাড়ছে
দীর্ঘ দিন ধরে কৈখালি থেকে রাজারহাট (৯১ বাস রুট) পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা শোচনীয়। নিয়মিত দুর্ঘটনা ঘটছে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হওয়ায় দুর্ঘটনার সংখ্যা ক্রমবর্ধমান। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপের আবেদন জানাই।
নির্মাণ গঙ্গোপাধ্যায় রাজারহাট
চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা
সম্পাদক সমীপেষু,
৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট, কলকাতা-৭০০০০১।
ই-মেল: letters@abp.in
যোগাযোগের নম্বর থাকলে ভাল হয়
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy