Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

সম্প্রতি প্রয়াত শিল্পী সুহাস রায়ের সংক্ষিপ্ত জীবনালেখ্যটিতে (শিল্পীর সঙ্গেই হারিয়ে গেল তাঁর ‘রাধা’ ২০-১০) দু’-একটি তথ্যগত অসঙ্গতি আছে। সুহাস রায় নন্দলাল বা রামকিঙ্করের ছাত্র ছিলেন না।

শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share: Save:

সুহাস রায়ের শিল্পশিক্ষা ও সৃষ্টি

সম্প্রতি প্রয়াত শিল্পী সুহাস রায়ের সংক্ষিপ্ত জীবনালেখ্যটিতে (শিল্পীর সঙ্গেই হারিয়ে গেল তাঁর ‘রাধা’ ২০-১০) দু’-একটি তথ্যগত অসঙ্গতি আছে। সুহাস রায় নন্দলাল বা রামকিঙ্করের ছাত্র ছিলেন না। তাঁর শিল্পের পাঠগ্রহণ কলকাতায় ও পরে ফরাসি দেশে। চিত্রকলার শিক্ষক হিসেবে তিনি কলাভবনে যোগদান করেন সত্তরের দশকের গোড়ায়। আচার্য নন্দলাল তার আগে প্রয়াত হয়েছেন। রামকিঙ্করও সত্তরের দশকের শুরুতে প্রথাগত অবসর নিয়েছিলেন। কলাভবনে তিনি প্রায় আসতেন, তবে শিক্ষক সুহাস রায় তাঁর ছাত্র হতে পারেন না। ১৯৬৭ সালে বিশ্বভারতীর আচার্য ইন্দিরা গাঁধীর প্রচেষ্টায় কলাভবনের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন বিশিষ্ট শিল্পী, শিল্প সংগঠক, শিল্প আলোচক তথা কলাভবনের প্রাক্তনী দিনকর কৌশিক। তিনি নতুন করে কলাভবনকে সাজিয়ে তুলতে চাইছিলেন। কৌশিকের নিরলস প্রয়াসে ক্রমে কলাভবনে এসে জড়ো হচ্ছিলেন সোমনাথ হোর, শর্বরী রায়চৌধুরী, জয়ন্ত চক্রবর্তী, সুহাস রায় প্রমুখ শিল্পশিক্ষক। তৈলচিত্রে সুহাসের দক্ষতা ছিল প্রশ্নাতীত। যদিও পরবর্তী কালে তিনি বিচিত্র শিল্পমাধ্যমে কাজ করেছেন। আশির দশকে সুব্রহ্মণ্যনের প্রেরণায় অজস্র গ্লাস পেন্টিং করেছেন, তবে তা পরম্পরাগত আঙ্গিকের চেয়ে একেবারে আলাদা। শিল্পীর নিজস্ব টিপছাপ সে সব ছবিতে সুস্পষ্ট।

সত্তরের দশকের মাঝামাঝি কলাভবনে আমার ছাত্রাবস্থায় দেখেছি তিনি কাকের ছবি আঁকায় মগ্ন ছিলেন। দুধ-সাদা চিত্রপটে কুচকুচে কালো বায়সকুলের সেই অসাধারণ প্রাণবান চিত্রমালা আজও অনেকের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। কারও মনে পড়তে পারে অনেকটা জাপানি কায়দায় আঁকা গগনেন্দ্রনাথের কাকের ছবির কথা। গগনের সেই সিরিজের দ্বারা সুহাস হয়তো প্রেরণা পেয়েছিলেন। তাঁর ছবিতেও সাদা কালোর স্পেস বিভাজনে জাপানি চিত্রবিন্যাসের ছায়া লক্ষ করা যায়। তবে তাঁর ক্যানভাসে কাকের দল সম্পূর্ণ অন্য চেহারায় উপস্থিত। এর পর সুহাস রায়ের কিছু ছবিতে মৃতদেহের একটা আভাস যেন ফুটে উঠতে দেখি। কোথাও বা পুকুরের কালো জলে ফুটে থাকা রক্তলাল শালুক ফুলের আড়ালে ভেসে ওঠা পরিত্যক্ত শব— যা তাঁর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার দলিল। সত্তরের দশকে রক্তে স্নাত নকশাল আন্দোলনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ছাপ সেখানে সুস্পষ্ট হানা দিয়েছে। আর তাঁর জনপ্রিয় ‘রাধা’ সিরিজের ছবি এসেছে তার বেশ পরে। এখানে বলতে দ্বিধা নেই, এর পর তিনি নিজের শৃঙ্খলেই নিজেকে কিছুটা বন্দি করে ফেলেছিলেন। বিভিন্ন মাধ্যমে উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখে যাওয়া এই শিল্পী নিজেকে আর অর্গলমুক্ত করতে চাইলেন না। তবে স্বীকার করতে হবে, তেলরঙের ছবিতে তাঁর প্রসিদ্ধি হলেও অভিব্যক্তির চাহিদায় প্রথাগত পদ্ধতিকে নিজস্ব আঙ্গিকের খাতে বদলে নিয়েছিলেন, সেখানেই চিত্রীর সার্থকতা। তাঁর তেলর‌ং ব্যবহারের অনন্য দক্ষতার এক নজির ভাটিকানের জন্য তাঁর আঁকা যিশুখ্রিস্টের ছবি। ভারতীয় শিল্পীর সে এক বিশেষ সম্মানও বটে।

সুশোভন অধিকারী। কলাভবন, শান্তিনিকেতন

সুরঙ্গ নয়, পরিখা

সুয়েজ ক্যানেলের দ্বিতীয় শাখা তৈরির প্রসঙ্গে মিশরের একজন ব্যাঙ্ককর্মী দেবদূত ঘোষঠাকুরকে বলেছেন, ‘আমরাও ক্যানেলের বালি তোলার কাজ করেছি অন্যদের সঙ্গে, আমাদের মনে হয়েছে, মদিনাকে শত্রুদের হাত থেকে বাঁচাতে হজরত মহম্মদ যেমন সুরঙ্গ কেটেছিলেন... (খুলে গেল সুয়েজের দ্বিতীয় পথ ৬-১০)।’ কথাটিতে একটু ভুল আছে। ওটা সুরঙ্গ নয়, পরিখা হবে।

৫ম হিজরীর জেল্কদ মাসে (ফেব্রুয়ারি, ৬২৭ খ্রি) মক্কার কোরেসরা মদিনা অভিযান করেছিল। সেই সময় সলমন নামে এক পারসিক মদিনার চার দিকে গভীর পরিখা খোঁড়ার পরামর্শ দেন। পরিখা খুঁড়ে যুদ্ধ করার রীতি আরবে জানা ছিল না। কিন্তু নবী তাঁর পরামর্শ নিয়ে দশ হাত চওড়া দশ হাত গভীর পরিখা খনন করেছিলেন। ফরাসিতে পরিখাকে ‘খন্দক’ বলা হয়। সেই কারণে, ওই যুদ্ধ খন্দক বা পরিখার যুদ্ধ নামে খ্যাত। প্রসঙ্গত, নবী নিজে অন্যান্য শ্রমিকের মতো ওই পরিখা খোঁড়ার কাজে হাত লাগিয়েছিলেন।

বিমলেন্দু ঘোষ। কলকাতা-৬০

পিওন থেকে প্রকাশক

বাদল বসুর (সঙ্গের ছবিতে) স্মৃতিকথা ‘পিওন থেকে প্রকাশক’ গ্রন্থের সমালোচনায় (সেই বাদল মেঘের মানুষটি ৫-১১) চিন্ময় গুহ ওই গ্রন্থের কয়েকটি ত্রুটির বিষয় উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কে আমাদের বক্তব্য জানাতে চাই।

১) কল্যাণ মজুমদার একাধিক বার ‘চৌধুরী’ হয়েছেন (পৃ-১০৮)।

— উত্তরে জানাই, সমগ্র গ্রন্থটিতে কোথাও ‘কল্যাণ মজুমদার’ ব্যক্তিনামটির উল্লেখ নেই। একাধিক বার কল্যাণদা/কল্যাণ চৌধুরী সঠিক ভাবেই উল্লিখিত হয়েছেন গ্রন্থটিতে।

২) রমাপদ চৌধুরীর জায়গায় ‘পণ্ডিতমশাই’ ছাপা হয়েছে (পৃ-৮৫)।

— ‘পণ্ডিতমশাই’ যথার্থ কারণেই ছাপা হয়েছে। রমাপদবাবুর উদ্দেশে পণ্ডিতমশাই (জ্যোতিষী) বলেছিলেন, ‘আপনি সবই জানেন, আমাকে পরীক্ষা করছেন’।

৩) নবনীতা দেব সেন বিষয়ক লেখার সঙ্গে সুকুমার সেনের ছবি কেন? (পৃ-১৮২)

— বাদল বসুকে লেখা নবনীতা দেব সেনের চিঠিতে (পৃ-১৮১) একাধিক বার সুকুমার সেন মহাশয়ের প্রসঙ্গ এসেছে, সেই প্রাসঙ্গিকতায় সুকুমার সেনের ছবি ছাপা হয়েছে।

এ ছাড়া সমালোচক মহাশয় দুটি ছাপার ভুলের কথা উল্লেখ করেছেন, বিমল করের জায়গায় বিমল মিত্র এব‌ং গোপাল হয়েছে গোলাপ। পরবর্তী মুদ্রণে এই ত্রুটি সংশোধন করা হয়েছে।

শেষে জানাই, মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজ সম্পর্কিত তথ্যটি সমালোচকের নিজের। গ্রন্থটিতে কোথাও তার উল্লেখ নেই।

সুবীর মিত্র। প্রকাশক, আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা-৯

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy