ছবি পিটিআই।
সামাজিক বিকাশ ও বস্তুগত অবস্থার উন্নতি সাধনে শিক্ষা সব সময়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। শাসক শ্রেণিও শিক্ষার এই গুরুত্বকে অনুধাবন করেছে। তাই শিক্ষাব্যবস্থা ও জ্ঞানের পরিধিকে নিজেদের কায়েমি স্বার্থে কয়েদবন্দি করার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে যুগে যুগে। তারই প্রতিফলন ঘটেছে জেএনইউ-এ ছাত্রছাত্রীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের উপরে ফ্যাসিস্ট সরকারের বর্বরোচিত আক্রমণে, যাদবপুরের শিক্ষার্থীদের উপরে পুলিশের লাঠিচার্জে, আবার কখনও ক্যাম্পাসে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলনরত সুদীপ্ত গুপ্ত, স্বপন কোলের হত্যালীলার মাধ্যমে। শাসকের চোখে চোখ রেখে ছাত্রছাত্রীরা যত বার গণতন্ত্র ছিনিয়ে আনার আন্দোলনে শামিল হয়েছে, তত বার শাসকের বেয়নেটের আঘাতে রক্তাক্ত হয়েছে ক্যাম্পাস।
সঙ্ঘ পরিবার ও বিজেপি মূলত ত্রিশূলের তিন ফলায় বিঁধতে চাইছে দেশের মগজকে। প্রতিনিয়ত তারা শিক্ষায় ব্যয়বরাদ্দ কমাচ্ছে। ফলে, শিক্ষক সংখ্যা হ্রাস, স্কলারশিপ বন্ধ, শিক্ষা পরিকাঠামো ধ্বংস ইত্যাদি ক্রমাগত ঘটে চলেছে। কিছু দিন আগেই স্কুল শিক্ষাক্ষেত্রে ৩০০০ কোটি টাকা বাজেট ছেঁটে ফেলল মোদী সরকার। যার ফলে বন্ধ হতে চলেছে দেশের কয়েক লক্ষ স্কুল।
প্রায় ৭০ দিন ধরে ফি বৃদ্ধির বিরুদ্ধে আন্দোলনরত জেএনইউ-এর ছাত্রছাত্রীদের উপর পরিকল্পিত ভাবে মুখ ঢেকে হাতে লাঠি, লোহার রড নিয়ে আক্রমণ চালিয়েছে আরএসএস-এর ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষ সহ অন্য ছাত্রছাত্রীদের উপরে নির্মম অত্যাচার চালায় সঙ্ঘ বাহিনী। পুলিশের সামনে দিয়েই লুম্পেনবাহিনী ক্যাম্পাসে ঢুকেছে। আবার, তাণ্ডব চালিয়ে পুলিশের সামনে দিয়েই বেরিয়ে গিয়েছে বিনা বাধায়। কিন্তু জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে এই দিল্লি পুলিশই প্রবল তৎপর ছিল। ক্যাম্পাসের লাইব্রেরিতে ঢুকে কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়তেও পিছপা হয়নি। ছাত্রদের যে শিক্ষকেরা রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছিলেন, বর্বর আক্রমণের শিকার হয়েছেন তাঁরাও।
জাতীয় শিক্ষানীতির মাধ্যমে কেন্দ্রের সরকার শিক্ষায় বেসরকারিকরণ, কেন্দ্রিকরণ, সাম্প্রদায়িকীকরণের মাধ্যমে এ দেশের শিক্ষাকে প্রাথমিক থেকে গবেষণা— পুরোই লাটে তোলার ছক কষছে। আর তার বিরুদ্ধে যখন দেশের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি জনস্বার্থ বিরোধী সরকারের বিরুদ্ধে চোখে চোখ রেখে রাজপথ জুড়ে আন্দোলন করছে, তখনই আক্রমণ নেমে আসছে। এই রাজ্যের ক্ষেত্রেও পরিস্থিতি একই। আমরা সে দেশ চাই না, যার ৫০ কোটি তরুণের শিক্ষা, কাজ নেই, মুক্তচিন্তার অধিকার নেই। তাই এই লড়াই দেশের ভবিষ্যৎ রক্ষা করার লড়াই। এবং শাসকের চোখে চোখ রেখে এই লড়াই আমরা লড়বই।
লেখিকা এসএফআই-এর নদিয়া জেলা সম্পাদক
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy