Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Film Hubba by Bratya Basu

হুব্বাতন্ত্র! সব দুষ্টু লোক

আমরা তো প্রত্যেকেই এক একজন আধা-মানুষ। যাদের প্রত্যেককে মাঝ-বরাবর ছিঁড়ে ফেলা যায় একটা কাগজের মতো। যার একটা দিকে একটা কথা লেখা থাকে। অন্য দিকটায় লেখা থাকে ঠিক তার উল্টোটা।

Hubba: a feature film by Bratya Basu based on the life of murdered Hooghly Don Hubba Shyamal

(বাঁ দিক থেকে) পরিচালক ব্রাত্য বসু এবং ‘হুব্বা’র চরিত্রে মোশারফ করিম। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

অনিন্দ্য জানা
অনিন্দ্য জানা
শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:০০
Share: Save:

মোশারফ করিমকে সামনে থেকে দেখে ভারী আশ্বস্ত লাগল। জনপ্রিয় তারকা। শক্তিশালী অভিনেতা। বিখ্যাত মানুষ। কিন্তু উচ্চতা একেবারে আমার মতো! ভাবা যায়?

পরবর্তী ১৩৫ মিনিটের অনেকটা অংশ জুড়ে সেলুলয়েডে তাঁকে দেখতে দেখতে মনে হচ্ছিল...।

হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকায় একটু কম বুদ্ধির, গোঁয়ারগোবিন্দ গোছের (শহুরে এবং চালু ভাষায় ‘গাম্বাট’) লোকজনকে ‘হুব্বা’ বলা হয়। কোন্নগরের শ্যামল দাসের নাম যে কালক্রমে ‘হুব্বা শ্যামল’ হল, তার পিছনেও ওই একই কারণ। কৈশোর থেকেই শ্যামল, যাকে বলে, ডাকাবুকো। যার মুখের থেকে হাত বেশি চলে। একটু গাঁট গোছের।

ডানপিটেদের শেষমেশ ঠাঁই হয় গাছের আগায়। হুব্বা শ্যামলদের বৈদ্যবাটির খালে। যেমন হয়েছে ব্রাত্য বসুর সাম্প্রতিক ছবিতেও। সেখানে অবশ্য হুব্বা ‘শ্যামল’ নয়। ‘বিমল’। তার নন্দী-ভৃঙ্গী সাঙ্গোপাঙ্গদের নামও একটু একটু বদলে দেওয়া হয়েছে। যেমন সত্য কাহিনির আধারে চলচ্চিত্রায়িত গল্পে হয়ে থাকে। তবে ‘বিধিসম্মত সতর্কীকরণ’-এর আবডাল থেকে তারা উঁকি মারতে থাকে অহরহ।

২০১১ সালে রাজ্যে ‘পরিবর্তন’-এর সরকার ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস পরেই খুন হয়ে গিয়েছিল খবরের কাগজের ভাষায় হুগলির ‘ত্রাস’ (‘হুগলির দাউদ ইব্রাহিম’ও বলা হত বলে জনশ্রুতি) হুব্বা শ্যামল। বাড়ি কোন্নগরের ধর্মডাঙায়। বাবা চাকরি করতেন স্থানীয় একটি কারখানায়। যেখানে এক সময়ে পারিবারিক সূত্রে চাকরি হত। বাবা চাকরি করতে করতে ছেলেকে ঢুকিয়ে দিতে পারতেন। হুব্বার ক্ষেত্রেও তেমনই হতে পারত। হয়নি। হুব্বারা চাকরি করতে ভালবাসে না। কারণ, চাকরি মাসমাইনের নিগড়ে বাঁধা থাকে। চাকরি বাঁধা থাকে বিবিধ শৃঙ্খল এবং শৃঙ্খলায়। প্রতিভা, ইতিবাচক বা নেতিবাচক, কখনও অনুশাসনে বাঁধা থাকতে চায় না। প্রতিভাদের জীবন সাধারণের মতো হয় না।

হুব্বাও একটি প্রতিভা। তার দু’টি বিবাহ। প্লাস সোনাগাছিতে ঘর। তার নিয়ন্ত্রণে দিল্লি রোডে ডানকুনি থেকে পোলবা পর্যন্ত একাধিক পানশালা। সে টেনিস বলের ক্রিকেট টিমের চালক। শীতকালে তার টিম বিবিধ টুর্নামেন্টে খেলতে যেত। চ্যাম্পিয়ন হলে উড়ত নোটের ফোয়ারা।

ব্রাত্যের ছবিতে একটা সংলাপ হুব্বার মুখে ঘুরেফিরে আসে— গাড়িটা আমি চালাচ্ছি! অর্থাৎ, স্টিয়ারিং আমার হাতে। নিয়ন্ত্রণ আমার হাতে।

আলো-আঁধারির জগতে হুব্বার প্রবেশ আশির দশকের শেষ দিকে। ১৮-১৯ বছর বয়সে। প্রথম পেশা লোকাল ট্রেনে চুরি। রাত ১১টার পরে আপ এবং ডাউন লোকাল ট্রেনে সিলিং ফ্যান আর লাইটের খাঁচা চুরি করে বিক্রি করত হুব্বা এবং তার স্যাঙাতরা। আপ ট্রেনে উঠে কোন্নগর থেকে শ্রীরামপুরে। আবার ডাউন ট্রেনে শ্রীরামপুর থেকে কোন্নগর। অপারেশন শেষ! লোহা বিক্রির সেই কাঁচা টাকা হুব্বাকে আরও অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল। ট্রেনে চুরির ছিঁচকেমি ছেড়ে ‘টিম হুব্বা’ শুরু করেছিল কোন্নগর এবং তার লাগোয়া এলাকার বিভিন্ন বন্ধ কারখানার যন্ত্রাংশ চুরি। সম্পত্তি বাড়ছিল। বাড়ছিল হুব্বার দলও।

এই সমস্ত দাপুটে এবং ডাকাবুকোদের রাজনৈতিক দল ঠিক খুঁজে নেয়। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি সময়ে হুব্বার সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিলেন রিষড়ার এক কংগ্রেস নেতা। রিষড়ার এক বন্ধ কারখানার শেডের যন্ত্রাংশ বিক্রি করে বিপুল টাকা রোজগার হয়েছিল এই জুড়ির।

তত দিনে একাধিক ডাকাতি এবং ছিনতাইয়ের ঘটনায় নাম জড়িয়েছে হুব্বার। নাম জড়িয়েছে একাধিক খুনের মামলাতেও। অপরাধীদের মানদণ্ডে তখন সে ‘এলিট’ শ্রেণির। ক্রমশ হুগলি শিল্পাঞ্চলে নিজের কর্মক্ষেত্র বিস্তৃত করতে শুরু করে হুব্বা। প্রত্যাশিত ভাবেই জুটে যায় তৎকালীন শাসকদল সিপিএমের একাংশের নেতার সমর্থনও। কোন্নগরে সিপিএমের এক শিক্ষক নেতার ‘স্নেহধন্য’ হয়ে ওঠে সে। হুব্বা যখন হুগলি শিল্পাঞ্চলে আরও ‘নাম’ করেছে, তখন মানস চৌধুরী নামে এক নেতাকে সিপিএম দল থেকে বহিষ্কার করে। তিনিও, যাকে বলে, ওই ‘ডাকাবুকো’ই ছিলেন। সিপিএম থেকে বহিষ্কৃত হয়ে সোমেন মিত্রের হাত ধরে কংগ্রেসে যান মানস। এবং ক্রমে কোন্নগর এবং রিষড়া এলাকায় নিজের দাপট বাড়াতে শুরু করেন। প্রত্যাশিত ভাবেই হুব্বার সঙ্গে তাঁর ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়। এক জঙ্গলে দুটো বাঘ থাকতে পারে না। যেমন একই খাপে দুটো তলোয়ার থাকতে পারে না। খুন হয়ে যান মানস। তাঁর একটি মূর্তি অবশ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জিটি রোডের উপর কোন্নগর বাটার মোড়ে। ঘটনাচক্রে, মানস ছিলেন সিপিএমের অন্য একাংশের ‘স্নেহধন্য’। যাঁরা আবার ওই শিক্ষকনেতার বিরোধী গোষ্ঠীভুক্ত। পরে অবশ্য হুব্বাও সিপিএমের জেলার নেতাদের ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে। হুগলির এক প্রাক্তন সাংসদের সঙ্গেও হুব্বার ‘ঘনিষ্ঠতা’ ছিল।

রাজনীতির ছত্রছায়ায় চলে গেলে যে কোনও পেঁচো মস্তানেরও হাত-পায়ের গুলি ফুলে যায়। হুব্বা ব্যতিক্রম হতে যাবে কোন দুঃখে! হুব্বাও মাঠ বাড়াতে থাকে। হুগলি থেকে তার কর্ষিকা বিস্তৃত হয় উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চল, বাগুইআটি এবং সল্টলেকে। হাতকাটা দিলীপ, বেনারসী বাপিদের বস্ হয়ে ওঠে হুব্বা। উত্তর ২৪ পরগনার প্রভাবশালী সিপিএম নেতাদের অনেকে তার মাথায় প্রশ্রয়ের ছাতা ধরেন।

কর্মক্ষেত্রের পরিধি বাড়াতে গিয়ে হুগলির জমি ফাঁকা পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু কে না জানে, অপরাধের জমি কখনও ফাঁকা থাকে না। হুব্বার জায়গায় উত্থান হয় রমেশ মাহাতোর। হুব্বার দল ভাঙিয়েই দল গড়ে রমেশ। বাকিটা যে কোনও ক্ষমতা হস্তান্তরের ইতিহাস। যেখানে রক্তক্ষয় অনিবার্য। বৈদ্যবাটির খালের জলে নিজেরই ট্রেডমার্ক ‘পৈতে কাট’ (ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাঁধ থেকে পেট পর্যন্ত আড়াআড়ি পৈতের মতো করে কেটে দেওয়া) নিয়ে হুব্বার প্রাণহীন দেহ যে ভেসে উঠেছিল, তার পিছনেও রমেশের অবদান ছিল বলেই মনে করে পুলিশ।

এ তো গেল বাস্তবের হুব্বা শ্যামলের জীবনকাহিনি। ব্রাত্যের ছবিতে যে হয়েছে হুব্বা বিমল। সেই ভূমিকাতেই অভিনয় করেছেন বাংলাদেশের অভিনেতা মোশারফ। যাঁর ফেসবুকের কভার ছবি বলছে, ‘ডু দে লভ ইউ অর দ্য মাস্ক ইউ পুট অন এভরিডে!’ ওরা কি তোমায় ভালবাসে, না কি তুমি যে মুখোশটা রোজ পরো, সেটাকে!

কাকে ভালবাসা যায় বেশি? হুব্বার চরিত্রে মোশারফকে? না কি জনপ্রিয় অভিনেতা হয়েও যাঁর পা মাটিতে এবং মাথা কাঁধের উপর থাকে, যিনি যে কারও সঙ্গে ছবি তুলতে দাঁড়িয়ে পড়েন, যাঁর মধ্যে কোনও ‘আমাকে দেখুন’ সিনড্রোম নেই, সেই নির্মুখোশ মানুষটিকে? বলা কঠিন!

ব্রাত্যের হুব্বা মোটামুটি বাস্তবের হুব্বার জীবনের রাস্তা ধরেই চলেছে। এমনকি, সল্টলেক সিটি সেন্টারে সিনেমা দেখতে গিয়ে ধরা পড়া পর্যন্ত। এমনই হওয়ার কথা। হাজার হোক, গবেষণালব্ধ কাজ। তবে মোশারফকে পর্দায় দেখে মনে হল, হতে পারে শারীরিক উচ্চতায় তিনি আমার মতো। কিন্তু তাতে উদ্বাহু হয়ে নাচার কিছু নেই। আশ্বস্ত হওয়ারও কিছু নেই। কাজের উচ্চতায় তিনি অনেক, অনেক উঁচু!

হুব্বার মুখোশে কিঞ্চিৎ চড়া দাগের অভিনয়ই করেছেন মোশারফ। ছোট শহরের উচ্চাকাঙ্ক্ষী মস্তান সম্ভবত সেই মোটা দাগই দাবি করে। ঈষৎ পৃথুল চেহারা, কব্জিতে সোনালি মেটাল স্ট্র্যাপের ঘড়ি, আঙুলে গ্রহরত্ন সম্বলিত আংটি, গলায় মোটা সোনার চেন, চোখে খুনিয়া কাটিংয়ের রোদচশমা। মোশারফের (আসলে ব্রাত্যের। কারণ, পরিচালক ব্রাত্য বলেছেন, মুশারফ একেবারেই ‘ডিরেক্টর্‌স অ্যাক্টর’) হুব্বা একেবারে গাঁ-গঞ্জ-মফস্‌সলের অপরাধ জগৎ থেকে উঠে-আসা। যে কাঁচা পয়সায় ডুবকি দেয়। যার তুমুল আসক্তি সিনেমার নায়িকাকে শয্যাসঙ্গিনী করার। যে পুলিশি হেফাজতে থার্ড ডিগ্রি খেয়ে ভেউ ভেউ করে কাঁদে আর অফিসারের পা জড়িয়ে ধরে নিজের ভবিতব্যের কথা বলে। জামিন পাওয়ার পরে যার উচ্চকিত সেলিব্রেশন হয় গলায় গাঁদাফুলের মালা আর পরনে চকরাবকরা শার্ট পরে। যে নিজেকে ‘ডন’ ভেবে কথায় কথায় বচ্চনের ‘ডায়ালগ’ বলে। অর্থাৎ, তাকে পাকড়ানো ‘মুশকিল’ই নয়, ‘নামুমকিন’। আর বলে, ‘‘মনে রাখিস, গাড়িটা কিন্তু আমি চালাচ্ছি।’’

‘হুব্বা’ ব্রাত্যের পঞ্চম ছবি। ছবিটি নিয়ে ব্রাত্য উত্তেজিতও বটে। বললেন, ২৯ দিনে শুটিং শেষ করেছেন। ইদানীং বাংলা ছবির শুটিং গড়পড়তা ১২ থেকে ১৪ দিনে শেষ হয়। রাজ্যের ব্যস্ত মন্ত্রী হয়েও ব্রাত্য তার চেয়েও বেশি সময় এবং যত্ন নিয়েই ছবিটি বানিয়েছেন। বাংলাদেশে মোট ১০০টি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে ‘হুব্বা’। এপার বাংলায় মোট ৭০টি স্ক্রিনে। বাংলা ভাষায় সম্ভবত এই প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্যের একটি ‘গ্যাংস্টার’ ছবি হল। সেদিক দিয়ে ‘হুব্বা’ একটি মাইলফলক ছবি তো বটেই। এই ছবি বাংলায় আরও অনেক গ্যাংস্টার ছবির জন্ম দেবে। বাংলা ভাষায় এর আগে আমরা এত রক্ত, এত ধড়াদ্ধড় খুন দেখিনি। অতএব ব্রাত্যের ছবিটি দ্রষ্টব্য। ছবির গুণাগুণ বিচার করার চলচ্চিত্র সমালোচক সুলভ যোগ্যতা আমার নেই। তবে পেশাদার রিপোর্টার হিসেবে একটা বিষয় চোখে পড়েছে বৈকি— ডিটেলের কাজ। স্মার্টফোন-পূর্ব যুগের নকিয়া ফোন, স্মার্ট এলইডি টিভি-রহিত যুগের বাক্স টেলিভিশন, টিভিতে তখনকার ক্রিকেট ম্যাচ, সঞ্জয় দত্ত অভিনীত ‘বাস্তব’, মাল্টিপ্লেক্সের স্ক্রিনে নানা পটেকর অভিনীত ‘অব তক ছপ্পন’, ঊষা উত্থুপের ‘রাম্বা হো হো’ গান— সময়টাকে হুবহু ধরেছেন সমসময়ের অন্যতম সেরা নাট্যকার ব্রাত্য।

তরুণ হুব্বার ভূমিকায় যিনি অভিনয় করেছেন, তিনি বড্ড ভাল। ডিআইজি-সিআইডি (অপারেশন্‌স)-র ভূমিকায় ছমছমে চেহারার ইন্দ্রনীল সেনগুপ্তকে খুবই পুলিশ-পুলিশ লেগেছে। যদিও সন্দেহবাতিকগ্রস্ত স্ত্রীর (পৌলমী বসু) সামনে তিনি গর্তে ঢুকে যান এবং প্রেমিকাকে বারান্দায় একঝলক দেখার জন্য খানিকটা হুব্বা (তবে এ হুব্বা সে হুব্বা নয়) হয়েই প্রেমিকার আবাসনের নীচে পুলিশের গাড়িতে বসে থাকেন। সিভিল ড্রেসের অন্য পুলিশকর্মীরাও যথাযথ। হুব্বার শাগরেদরা ভাল। নিজের নিজের খাপে দিব্যি লাগসই হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। যেমন খাপে খাপ হুব্বার প্রথম স্ত্রী। যাঁকে নিয়ে ছবির শেষে একটা ‘শেষ হয়ে হইল না শেষ’ মোচড়ও আছে।

১৩৫ মিনিটের ছবিতে মোশারফকে হুব্বার ভূমিকায় দেখতে দেখতে ভিতরে একটা কথা কিটকিট করছিল...।

আমাদের প্রত্যেকের মধ্যেই কি একটা করে হুব্বা বাস করে? যে লোকটা যে কোনও সময়ে ‘হালুম’ করে বেরিয়ে আসতে পারে? আমরা তো প্রত্যেকেই আসলে এক একজন আধা-মানুষ। যাদের প্রত্যেককে মাঝ-বরাবর ছিঁড়ে ফেলা যায় একটা কাগজের মতো। যার একটা দিকে একটা কথা লেখা থাকে। অন্য দিকটায় লেখা থাকে ঠিক তার উল্টোটা। আমাদের মধ্যে সেই শুম্ভ-নিশুম্ভের লড়াই চলতে থাকে অনাদি অনন্তকাল।

যে আমরা সামাজিক জীব হিসেবে বিরাজ করি, যে আমরা দৈনন্দিনতায় আসলে খুব সাধারণ, তারাও কি চাই না গাড়ির স্টিয়ারিংটা শুধু আমাদের হাতেই থাকুক শুধু? আমরা কি সকলেই নিজেদের জামা-প্যান্ট-বুক-পাঁজর এবং মস্তিষ্কে একজন করে হুব্বাকে লালন করি না? যার মধ্যে একটা নিঘিন্নে যাপনের লোভ থাকে, মোহ থাকে, মাৎসর্য থাকে, রিরংসা থাকে, দুই বিবাহের মৌতাত থাকে, সোনাগাছিতে ঘর রাখার লকলকে ইচ্ছে থাকে। যে আমাদের পথে কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়, আমরাও কি তার মধ্যে দানা ভরে দিতে চাই না? আমরা প্রত্যেকেই কি আসলে ব্রাত্যের ছবিতে শিলাজিতের গানের ‘দুষ্টু লোক’ নই?

ব্রাত্যর ‘হুব্বা’ দেখে মনে হল, আমরা প্রত্যেকে এক হুব্বাতন্ত্রের মধ্যে থাকি। আমরা সব দুষ্টু লোক!

(ঋণ: শোভন চক্রবর্তী)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy