Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
coronavirus

এই নম্বর কাজে আসবে কি

প্রকৃত মেধাবী এবং মনোযোগী পরীক্ষার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্তে যথেষ্ট হতাশ এবং উদ্বিগ্ন।

তূর্য বাইন
শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২১ ০৪:৪১
Share: Save:

আর পাঠশালা নাই— হীরক রাজার দেশে ছবির সেই বিখ্যাত সংলাপ মনে পড়ে? গত বছরের ২৫ মার্চ দেশ জুড়ে লকডাউন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রে ওই সংলাপ যে এ ভাবে সত্যি হয়ে উঠবে, সে কথা হয়তো স্বয়ং সত্যজিৎ রায়ও ভাবেননি। দু’একটি নাতিদীর্ঘ ব্যতিক্রমী পর্যায় বাদ দিলে প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষাঙ্গনের দরজা সেই যে রুদ্ধ হয়েছে, আজও তা উন্মুক্ত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

সবচেয়ে বড় কথা, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এক প্রহসন শুরু হয়েছে। গত বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মাঝপথে লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর অনিবার্য কারণবশত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। টেস্ট পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে সেই বিষয়গুলির মূল্যায়ন করা হয়েছিল। তবে তাতে হিতে বিপরীত হয়েছিল। যথেষ্ট ভাল নম্বর পেয়েও কাঙ্ক্ষিত বিষয় নিয়ে পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রীকেই যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল।

এ বছর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করার আগে অবশ্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অভিভাবকদের মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। শোনা যাচ্ছে, প্রযুক্তি ব্যবহারে অপারগতা বা ঔদাসীন্যের কারণে বেশির ভাগ অভিভাবকের হয়ে মতামত জানিয়েছে পরীক্ষার্থীরাই। শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই জানেন, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পড়ুয়াদের মধ্যে মেধাবী এবং যথেষ্ট মনোযোগী শিক্ষার্থীদের তুলনায় মাঝারি মাপের শিক্ষার্থীরা সংখ্যাগুরু এবং এদের বৃহদংশই পরীক্ষা-ভীত। তদুপরি, দীর্ঘ কাল ক্লাস-বঞ্চিত হওয়ায় অনেকেই আশানুরূপ প্রস্তুতি নিতে পারেনি। ফলে পরীক্ষা না দিয়েই যদি পরবর্তী ধাপে উত্তরণের সুযোগ থাকে, তবে সংখ্যাগরিষ্ঠরা যে সেই সুযোগ হাতছাড়া করবে না, এটা প্রত্যাশিতই ছিল। ফলত, প্রকৃত মেধাবী এবং মনোযোগী পরীক্ষার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্তে যথেষ্ট হতাশ এবং উদ্বিগ্ন। পরীক্ষা দিতে না পারার দুঃখে ইতিমধ্যে এক মেধাবী ছাত্রীর আত্মহত্যা সেই সামগ্রিক হতাশারই বহিঃপ্রকাশ।

এ বার আসা যাক মূল্যায়ন প্রসঙ্গে। এ বছর ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ এপ্রিল সাময়িক ভাবে স্কুল চলাকালীন এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ১০ নম্বরের একটা অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন হয়েছিল। এই মূল্যায়নে প্রতিটি বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরকে পাঁচ গুণ করে এবং এর সঙ্গে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় বিষয়-প্রতি প্রাপ্ত নম্বরের পঞ্চাশ শতাংশ যোগ করে মাধ্যমিকের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষিত হতে যাচ্ছে।

উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে যে সব বিষয়ে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা আছে, সেই বিষয়গুলিতে ১০০-র মধ্যে ২৮ নম্বরের মূল্যায়ন হবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত সেরা চারটি বিষয়ের নম্বরের ভিত্তিতে, ৪২ নম্বর একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে এবং ৩০ নম্বর প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার ভিত্তিতে। প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নেই, এমন বিষয়ের ক্ষেত্রে সূত্রটা হল, প্রজেক্টে ২০ শতাংশ, মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত সেরা চারটি বিষয়ের নম্বরের ভিত্তিতে ৩২ শতাংশ এবং একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ৪৮ শতাংশ। প্রশ্ন উঠছে, এ ভাবে প্রাপ্ত নম্বর পরবর্তী জীবনে চাকরিবাকরি কিংবা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সত্যিই কি কোনও কাজে আসবে?

সমস্যাটা উচ্চতর শ্রেণিতে পাঠরতদের কাছে কতটা গভীর, তা জানতে কথা বলেছিলাম ফরেন্সিক সায়েন্সের স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত বর্ষের এক ছাত্রের সঙ্গে। সে জানাল, দু’বছরের পাঠক্রমে তারা মাসছয়েক ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছিল। এই কোর্সটি অনেকটাই প্র্যাক্টিক্যাল-নির্ভর এবং শেষের দিকে বিভিন্ন ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে ইন্টার্নশিপও এই কোর্সের অঙ্গ। অথচ, প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস এবং ইন্টার্নশিপ ছাড়াই চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা দিতে চলেছে সে। অন্যান্য বছর ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি চাকরিতে নিয়োগ হলেও এ বছর কোনও ক্যাম্পাসিং হয়নি। কোর্স শেষ হলে সে হয়তো একটা ডিগ্রি পাবে, কিন্তু সেই ডিগ্রি আদৌ কোনও কাজে আসবে কি না, তা নিয়ে সে যথেষ্ট সন্দিহান। একই দুশ্চিন্তা এ বছরে রাজ্যের আর একটি নামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য ডিগ্রি পাওয়া ইঞ্জিনিয়ারের। লকডাউন-পরবর্তী সময়ে তাদের ক্লাস হয়েছে অনলাইনে। এমনকি প্র্যাক্টিক্যালও। সে জানাল, প্রকৃতপক্ষে শিক্ষকদের করা হাতে-কলমে পরীক্ষানিরীক্ষা ওরা অনলাইনে দেখেছে এবং শিক্ষকদের দেওয়া ডেটা নিয়ে ঘরে বসে বিশ্লেষণ করেছে।

শিক্ষা প্রসঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “আমরা সেই শিক্ষা চাই যা দিয়ে চরিত্র গঠন হবে, মনের জোর বাড়বে, বুদ্ধির প্রসার ঘটবে, এবং যা দিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানো যাবে।”

স্বামীজি বেঁচে থাকলে আজ শিক্ষার অবস্থা দেখে কী যে বলতেন, অনুমান করা দুষ্কর।

আর পাঠশালা নাই— হীরক রাজার দেশে ছবির সেই বিখ্যাত সংলাপ মনে পড়ে? গত বছরের ২৫ মার্চ দেশ জুড়ে লকডাউন কার্যকর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এ রাজ্যের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রে ওই সংলাপ যে এ ভাবে সত্যি হয়ে উঠবে, সে কথা হয়তো স্বয়ং সত্যজিৎ রায়ও ভাবেননি। দু’একটি নাতিদীর্ঘ ব্যতিক্রমী পর্যায় বাদ দিলে প্রাথমিক থেকে স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীদের কাছে শিক্ষাঙ্গনের দরজা সেই যে রুদ্ধ হয়েছে, আজও তা উন্মুক্ত হওয়ার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

সবচেয়ে বড় কথা, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে এক প্রহসন শুরু হয়েছে। গত বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার মাঝপথে লকডাউন ঘোষিত হওয়ার পর অনিবার্য কারণবশত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের পরীক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। টেস্ট পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে সেই বিষয়গুলির মূল্যায়ন করা হয়েছিল। তবে তাতে হিতে বিপরীত হয়েছিল। যথেষ্ট ভাল নম্বর পেয়েও কাঙ্ক্ষিত বিষয় নিয়ে পছন্দের কলেজে ভর্তি হতে গিয়ে অনেক মেধাবী ছাত্রছাত্রীকেই যথেষ্ট বেগ পেতে হয়েছিল।

এ বছর মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা বাতিল ঘোষণা করার আগে অবশ্য গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে অভিভাবকদের মতামত নেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছিল। শোনা যাচ্ছে, প্রযুক্তি ব্যবহারে অপারগতা বা ঔদাসীন্যের কারণে বেশির ভাগ অভিভাবকের হয়ে মতামত জানিয়েছে পরীক্ষার্থীরাই। শিক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলেই জানেন, মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরে পড়ুয়াদের মধ্যে মেধাবী এবং যথেষ্ট মনোযোগী শিক্ষার্থীদের তুলনায় মাঝারি মাপের শিক্ষার্থীরা সংখ্যাগুরু এবং এদের বৃহদংশই পরীক্ষা-ভীত। তদুপরি, দীর্ঘ কাল ক্লাস-বঞ্চিত হওয়ায় অনেকেই আশানুরূপ প্রস্তুতি নিতে পারেনি। ফলে পরীক্ষা না দিয়েই যদি পরবর্তী ধাপে উত্তরণের সুযোগ থাকে, তবে সংখ্যাগরিষ্ঠরা যে সেই সুযোগ হাতছাড়া করবে না, এটা প্রত্যাশিতই ছিল। ফলত, প্রকৃত মেধাবী এবং মনোযোগী পরীক্ষার্থীরা সংখ্যাগরিষ্ঠের মতামতের ভিত্তিতে গৃহীত সিদ্ধান্তে যথেষ্ট হতাশ এবং উদ্বিগ্ন। পরীক্ষা দিতে না পারার দুঃখে ইতিমধ্যে এক মেধাবী ছাত্রীর আত্মহত্যা সেই সামগ্রিক হতাশারই বহিঃপ্রকাশ।

এ বার আসা যাক মূল্যায়ন প্রসঙ্গে। এ বছর ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ এপ্রিল সাময়িক ভাবে স্কুল চলাকালীন এ বারের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ১০ নম্বরের একটা অভ্যন্তরীণ মূল্যায়ন হয়েছিল। এই মূল্যায়নে প্রতিটি বিষয়ে প্রাপ্ত নম্বরকে পাঁচ গুণ করে এবং এর সঙ্গে নবম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় বিষয়-প্রতি প্রাপ্ত নম্বরের পঞ্চাশ শতাংশ যোগ করে মাধ্যমিকের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষিত হতে যাচ্ছে।

উচ্চমাধ্যমিকের ক্ষেত্রে যে সব বিষয়ে প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা আছে, সেই বিষয়গুলিতে ১০০-র মধ্যে ২৮ নম্বরের মূল্যায়ন হবে মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত সেরা চারটি বিষয়ের নম্বরের ভিত্তিতে, ৪২ নম্বর একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে এবং ৩০ নম্বর প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষার ভিত্তিতে। প্র্যাক্টিক্যাল পরীক্ষা নেই, এমন বিষয়ের ক্ষেত্রে সূত্রটা হল, প্রজেক্টে ২০ শতাংশ, মাধ্যমিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত সেরা চারটি বিষয়ের নম্বরের ভিত্তিতে ৩২ শতাংশ এবং একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ৪৮ শতাংশ। প্রশ্ন উঠছে, এ ভাবে প্রাপ্ত নম্বর পরবর্তী জীবনে চাকরিবাকরি কিংবা উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সত্যিই কি কোনও কাজে আসবে?

সমস্যাটা উচ্চতর শ্রেণিতে পাঠরতদের কাছে কতটা গভীর, তা জানতে কথা বলেছিলাম ফরেন্সিক সায়েন্সের স্নাতকোত্তরের চূড়ান্ত বর্ষের এক ছাত্রের সঙ্গে। সে জানাল, দু’বছরের পাঠক্রমে তারা মাসছয়েক ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছিল। এই কোর্সটি অনেকটাই প্র্যাক্টিক্যাল-নির্ভর এবং শেষের দিকে বিভিন্ন ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে একটা নির্দিষ্ট সময় ধরে ইন্টার্নশিপও এই কোর্সের অঙ্গ। অথচ, প্র্যাক্টিক্যাল ক্লাস এবং ইন্টার্নশিপ ছাড়াই চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষা দিতে চলেছে সে। অন্যান্য বছর ক্যাম্পাসিংয়ের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরাসরি চাকরিতে নিয়োগ হলেও এ বছর কোনও ক্যাম্পাসিং হয়নি। কোর্স শেষ হলে সে হয়তো একটা ডিগ্রি পাবে, কিন্তু সেই ডিগ্রি আদৌ কোনও কাজে আসবে কি না, তা নিয়ে সে যথেষ্ট সন্দিহান। একই দুশ্চিন্তা এ বছরে রাজ্যের আর একটি নামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য ডিগ্রি পাওয়া ইঞ্জিনিয়ারের। লকডাউন-পরবর্তী সময়ে তাদের ক্লাস হয়েছে অনলাইনে। এমনকি প্র্যাক্টিক্যালও। সে জানাল, প্রকৃতপক্ষে শিক্ষকদের করা হাতে-কলমে পরীক্ষানিরীক্ষা ওরা অনলাইনে দেখেছে এবং শিক্ষকদের দেওয়া ডেটা নিয়ে ঘরে বসে বিশ্লেষণ করেছে।

শিক্ষা প্রসঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দ বলেছিলেন, “আমরা সেই শিক্ষা চাই যা দিয়ে চরিত্র গঠন হবে, মনের জোর বাড়বে, বুদ্ধির প্রসার ঘটবে, এবং যা দিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানো যাবে।”

স্বামীজি বেঁচে থাকলে আজ শিক্ষার অবস্থা দেখে কী যে বলতেন, অনুমান করা দুষ্কর।

অন্য বিষয়গুলি:

Student coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy