Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

বাংলায় ডাক্তারি বই! নয়া উদ্যোগ ইংরেজি-বলা চিকিৎসকের বদলে তার কাকতাড়ুয়া বানাবে না তো?

ডাক্তারি শিক্ষাকে দেশে বিত্তশালী, শহুরে ও কেন্দ্রীয় বোর্ডশাসিত বিদ্যালয়ে পাঠরতদের উপযোগী ক্ষেত্র হিসাবে বানানো হয়েছে।

মাতৃভাষা নামের মাতৃদুগ্ধ সেবন করে এ দেশে ডাক্তারি শিক্ষার পর চলার পথ সত্যিই কি দ্রুততর হবে?

মাতৃভাষা নামের মাতৃদুগ্ধ সেবন করে এ দেশে ডাক্তারি শিক্ষার পর চলার পথ সত্যিই কি দ্রুততর হবে? প্রতীকী ছবি।

অভিজিৎ চৌধুরী
অভিজিৎ চৌধুরী
শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০২২ ০৮:০৭
Share: Save:

লক্ষ্য দুটো। প্রথমত, ডাক্তারি শিক্ষার সুযোগ যাতে সম্প্রসারিত হতে পারে। এবং দ্বিতীয়ত, ইংরেজি ভাষার বেড়াজালে এ দেশের ডাক্তারি ছাত্রেরা যাতে হোঁচট না খায়। তাই এ দেশের সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, দেশের সমস্ত আঞ্চলিক ভাষায় এখন থেকে ডাক্তারি পঠনপাঠনের সুযোগ পাওয়া যাবে। অর্থাৎ কি না যুগ যুগ ধরে চলতে-থাকা ইংরেজি ভাষায় বাধ্যতামূলক শিক্ষার বদলে ডাক্তারি ছাত্রছাত্রীরা সুযোগ পাবেন নিজ নিজ ভাষায়, মাতৃভাষায় পড়াশোনার। যে ভাষায় কথা বলি, সেই ভাষাতেই যদি জীবনের প্রতিটা মুহূর্তের প্রয়োজন মেটানো যায়, উচ্চশিক্ষা, এমনকি চিকিৎসাবিজ্ঞান শিক্ষার সুযোগ পাওয়া যায়, তা হলে তো তা যে কোনও জাতির সৌভাগ্য!

ইংরেজরা ঐতিহাসিক ভাবে রাজনৈতিক আধিপত্যের ঘোড়ায় চেপে সে সুখ ভোগ করেছে। তার রেশ বজায় আছে এখনও। চিন, জাপান এ সবের উল্টোদিকে পথ হেঁটে নিজের নিজের ভাষার প্রয়োজনীয় প্রায়োগিক শ্রীবৃদ্ধি ঘটিয়ে ভাষাগত স্বাধিকার বিজ্ঞানশিক্ষার ক্ষেত্রেও যথেষ্ট মুন্সিয়ানার সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেছে। যারা তা করতে পারেনি, তারা আমাদের মতো ভাষা সামন্ততন্ত্র, ঔপনিবেশিকতা প্রভৃতির জোয়াল কাঁধে নিয়ে প্রতিনিয়ত গুমরে কেঁদে মরারা। বিভিন্ন সময়ে মাতৃভাষা হয়ে দাঁড়িয়েছে দেশাত্মবোধ এবং আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার ভাবনার অন্যতম নিশান।

মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা বিভিন্ন সময়ে সামাজিক আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে। আর এ বিষয়ে আমরা বাঙালিরা অন্যদের থেকে বেশ কিছুটা এগিয়ে রয়েছি বলে বুক ঠুকতে পারি। ক’টা জাতি আছে পৃথিবীতে যারা মাতৃভাষাকে বুকে নিয়ে রক্ত ঝরিয়েছে? কাজেই ‘আত্মঘাতী’ই বলুক বা ভাবুক ‘আত্মরতি’প্রমত্ত, বাংলা ভাষায় ডাক্তারি পড়া যাবে খবরটা শোনার পর থেকেই অনেক বাঙালিরই বুকের ভিতরে আবেগের ঢেউ উঠছে। দ্রাবিড় বা উৎকলভূম কিংবা বাণিজ্যসফল গুজরাতনন্দনদের হৃদয়ে মাতৃভাষার সানাই এরকমভাবে বাজে না, সে কথা বলছি না। কিন্তু ‘মাতৃভাষা’ শব্দটা বাঙালির হৃদ্‌মাঝারে যে দোলা তোলে, তার জুড়ি মেলা সত্যিই মুশকিল।

পাশাপাশিই, ভাবতে ইচ্ছা করছে, সরকারের এই ইচ্ছা চিকিৎসাবিজ্ঞানে পড়াশোনার সুযোগ এবং ক্ষমতায়নের দৃষ্টিভঙ্গিতে চালু নানা ভেদাভেদ দূর করার দুর্নিবার লক্ষ্যে ধাবিত হবে। মাতৃভাষা চিকিৎসাবিজ্ঞান শিক্ষার ক্ষুধিত পাষাণের বুকেও ঢেউ তুলবে। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘এনসিওরিং ইক্যুইটি’, মানে বৈষম্যের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ হবে। তা সম্ভব হবে একমাত্র মাতৃভাষার তুলির টানে। দারিদ্র দূরীকরণের প্রায় প্রাত্যহিক প্রেসক্রিপশন পেতে অভ্যস্ত ভারতীয় ভাবনায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের আকাঙ্ক্ষা এ ভাবে মুক্তির জায়গা খুঁজে পাবে, আগে বোঝা যায়নি। তথাকথিত মেধার সাধনাই যে যজ্ঞের একমাত্র আরাধ্য বলে বার বার ঘোষণা করা হয়, সেখানেও মেধার বৈষম্যনাশ এবং সুযোগের সাম্য আনার এমন চেষ্টার কথা আগে ভাবা যায়নি। আগে কখনও কেউ এ রকম এগিয়ে এসে বলেননি যে, মাতৃভাষাই একমাত্র পারে চিকিৎসাবিজ্ঞানের জটিল দুনিয়াটাকে মানুষের হাতের নাগালে নিয়ে আসতে।

কিন্তু মাতৃভাষা নামের মাতৃদুগ্ধ সেবন করে এ দেশে ডাক্তারি শিক্ষার পর চলার পথ সত্যিই কি দ্রুততর হবে? দেশের চলমান চিকিৎসাবিদ্যা শিক্ষার ম্যাপলিথো কাগজে যে কালো দাগগুলো জ্বলজ্বল করছে, শুধু মাতৃভাষার পরশেই তার মলিন রূপে নতুন রং ফুটে উঠবে? মাতৃভাষার মোহন বাঁশিতেই কি ডাক্তারি শিক্ষার প্রচলিত আঁধারের জায়গাগুলোয় আলো জ্বেলে তাকে আরও বিশ্বচিন্তা উপযোগী, প্রযুক্তিসমৃদ্ধ, সময় অনুসারী এবং দেশের মানুষের প্রয়োজন মেটানোর মূল গুরুত্বের সঙ্গে ছন্দবদ্ধ করা যাবে? চিকিৎসাশিক্ষায় ভাষার মাধ্যম কি আদৌ এ দেশে কোন অগ্রাধিকারের বস্তু? নাকি ভাষার স্বাধিকারের প্রলেপ দিয়ে আরও বৃহত্তর সামাজিক বঞ্চনা এবং বৈষম্যকে মাটি চাপা দেওয়ার একটা চেষ্টা মাত্র! দেশের বৃহত্তর অংশের মানুষের প্রয়োজন মেটানোর বদলে ক্রমশ একটা নির্দিষ্ট ছোট্ট সুখভোগী শ্রেণির নিতান্তই যান্ত্রিক, চিকিৎসা বৈতালিক ভাবনার দিকে বয়ে চলা ব্যবস্থায় এই উদ্যোগ কোন প্রভাব ফেলবে কি?

উল্টোদিকে, ভাষার ডোবায় স্নান করতে গিয়ে চিকিৎসাবিজ্ঞানের বিশ্ববীক্ষার রূপসাগরে সাঁতার কাটার ক্ষমতাটাই লোপ পেয়ে যাবে না তো? সব মিলিয়ে মূল প্রশ্ন এটাই যে, টাই-দুরস্ত ইংরেজি বলিয়ে চিকিৎসকের বদলে এই নতুন উদ্যোগ চিকিৎসার কাকতাড়ুয়া বানাবে না তো?

প্রশ্নের শেষ নেই। কিন্তু কিছু প্রশ্নের উত্তর তো খুঁজতেই হবে! মাতৃভাষায় কে পড়বে চিকিৎসাবিজ্ঞান? হিসেবটা পাল্টে যাচ্ছে এবং তা পাল্টাচ্ছে ভীষণই দ্রুত। মিথ্যা, ডাহা মিথ্যা বলে যতই গাল পাড়ি, হালফিলের পরিসংখ্যানে যে ছবি পরিষ্কার হয়েছে তা এটাই যে, ইদানীং কালে ডাক্তারি প্রবেশিকার খুড়োর কল ডিঙোতে গেলে রণপা লাগে। আর তা অবশ্যই ইংরেজি মাধ্যমে কেন্দ্রীয় বোর্ডের স্কুলে পড়াশোনা করার মধ্যে দিয়েই পাওয়া যায়। মাতৃভাষা প্রচলিত ব্যবস্থায় সাফল্য পাওয়ার ক্ষেত্রে আদৌ পটু কি না সে সন্দেহ জাগে।

‘নিট’ নামের মহাভারতীয় গেরিলা যুদ্ধে নামার আগে বর্ম পরতে হয়, চোখে লাগাতে হয় অভ্রভেদী সানগ্লাস। এগুলো সবই কনকমূল্যে কিনে নিয়ে আকাশ-বাতাস দাপিয়ে তার পরেই ‘নিট’ গ্ল্যাডিয়েটরের সম্মান মেলে। এর পর রিংয়ের মধ্যে ঘণ্টা কয়েকের যুদ্ধ। যেখানে প্রাধান্য পায় কৌশলগত ব্যুৎপত্তি। বিষয়ের গভীরতা যেখানে হয়ে দাঁড়ায় বর্জ্যপদার্থ। বাড়িতে বসে একা পড়ে টিউশনবিহীন শুধু বিষয়চর্চা ইদানিং কালে চিকিৎসাবিজ্ঞান শিক্ষা প্রত্যাশীর কাছে নিতান্তই নাকি দিবাস্বপ্নের মতো।

‘একলব্য’ তৈরি গোছের এই প্রবেশিকার পথে প্রাধান্য পায় কৌশল মাধুর্য্য শিক্ষা। এই টোলগুলিতে আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া অংশের ধীমানেরা ঢোকার ক্ষমতা হারায়। রাজস্থানের কোটা শহরের কড়িগোনা গুরুগেহে (দুর্জনে আবার এ ছপ্পরগুলোকে বলেন ‘নিট পোল্ট্রি’) বছর দুয়েক কাটিয়ে উঠতে পারলে মল্লযুদ্ধে সাফল্য আসবে— এ ভাবনা অনেক মধ্যবিত্তকেও সন্তানের মঙ্গলকামনায় নির্ধন করে তোলে। অবস্থাটা এ রকমই যে সেখানকার প্রতিযোগিতামূলক শিক্ষাদানের ‘খোসবাগানের’ নিষিদ্ধপল্লিতে যে শিল্প বিকশিত হচ্ছে, তার বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকারও বেশি। জিভ কেটে এটাও বলতে ইচ্ছে করে যে, সেই পল্লির সিদ্ধপুরুষরাই হয়ে ওঠেন এমন দেশটির আইনসভার মুখ্য নিয়ন্ত্রক।

এই যে ‘নিট ভৈরবী’, তাতে গলা মেলাতে গেলে প্রারম্ভিক সুরসাধনা করতেই হবে এবং তা কনকমূল্যে। এই ব্যবস্থা এখন চার পাশে গেড়ে বসেছে। মনে রাখা দরকার, সেখানে ভাষার মাধ্যম কিন্তু সেই ইংরেজি। আপত্তি নেই তাতে। কিন্তু প্রশ্নটা হল, পরিব্যপ্ত এ দেশে ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ছাত্রছাত্রীরাই চিকিৎসা প্রবেশিকায় সাফল্যের সোপানে যখন সংখ্যাগুরু, তখন সেখানে মাতৃভাষা আদৌ কি কোনও ব্যবহারের হয়ে উঠতে পারবে?

ডাক্তারি শিক্ষাকে গত দশ-বিশ বছরে এ দেশে ক্রমাগত বিত্তশালী, শহুরে এবং কেন্দ্রীয় বোর্ডশাসিত বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করা ছাত্রছাত্রীদের উপযোগী ক্ষেত্র হিসাবেই বানানো হয়েছে। এক অদ্ভুত অর্থনৈতিক, সামাজিক বৈষম্যের বাতাবরণ তৈরি করা হয়েছে মেডিক্যাল কলেজগুলোতে। গ্রামের ছেলে, পিছিয়ে-পড়া অংশের থেকে উঠে আসা পড়ুয়া, মাতৃভাষায় কথা বলা ছাত্রছাত্রীরা সেখানে সিঁটিয়ে থাকে। সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলগুলিও মেডিক্যাল কলেজে এমন হয়ে উঠেছে, যেখানে, লোকসঙ্গীত ‘এথনিক কিউরিওসিটি’ মাত্র। নতুন যুগের সঙ্গে নাকি সেগুলো বেমানান। এ রকম ভাবনার চিল্লামিল্লিতে গ্রামীণ জীবন এবং সভ্যতা গ্রামভিত্তিক দেশে ডাক্তারি শিক্ষার অঙ্গনগুলিতে এখন নিতান্তই নতজানু। এমন একটা অবস্থার মধ্যে গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো সম্পূর্ণ অর্থ-বিনিয়োগ নির্ভর বেসরকারি চিকিৎসা শিক্ষার কেন্দ্রগুলি ‘বুড়ির ঘর’ হয়ে গজিয়ে উঠছে পাড়ায় পাড়ায়।

নানান রঙের এই নতুন যুগের ভোরের সামনে চিকিৎসাবিজ্ঞান শিক্ষার যে বিষয়মুখী ধারা, তা যখন বাজারমুখীনতার জগঝম্পের সামনে নিতান্তই ‘কাঙালিনী’ মেয়ের মতো মলিন রূপে দেখা দিচ্ছে, তখন মাতৃভাষার নির্বিকল্প মুকুট সেখানে আলো জ্বালতে পারে কি না, সে প্রশ্ন থেকেই যায়।

এ এক দুঃসহ মরুঝড় চারপাশে। মাতৃভাষার ছেঁড়া কাঁথা জড়িয়ে এর সামনে দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষা করা যাবে বলে মনে হয় না। ভাষা এ ক্ষেত্রে দৃষ্টিমধুর প্রলেপ হতে পারে। দেশের সরকারের দেশমাতৃকার সঙ্গে টান কতটা দৃঢ়, তা বোঝানোর নতুন ক্ষেত্র হতে পারে। কিন্তু আসল রোগ সারিয়ে চিকিৎসাশিক্ষাকে দেশের বেশির ভাগ মানুষের উপযোগী করে তোলার কাজে তা আদৌ কোনও কাজে আসবে কি না, সে সন্দেহ থেকেই যায়।

আরও বড় বিপদ ‘কূপমণ্ডুকতা’ তৈরি করা। চিকিৎসাবিজ্ঞান প্রতি দিন এগোচ্ছে। এই দ্রুততালে এগিয়ে চলা, বিশ্বায়িত পৃথিবীতে যে ভাষা সংযোজনের কাজ করে দুনিয়া জুড়ে, তা অবশ্যই ইংরেজি। আত্মমর্যাদা বোধে ধাক্কা লাগলেও উচ্চশিক্ষায়, বিশেষত বিজ্ঞানের অঙ্গনে, ইংরেজি সারা পৃথিবীর যোগাযোগের মূল ধারা। উল্লেখ করা যেতে পারে যে চিন, জাপান প্রভৃতি যারা মাতৃভাষায় বহু দিন ধরে বিজ্ঞানচর্চা করছে, তারাও দুনিয়ার সঙ্গে তাল মেলানোর লক্ষ্যে ইংরেজির চর্চা ব্যাপকতর করার ক্ষেত্রে মনোযোগী হয়েছে। এটা গ্লানির নয় বরং বাস্তববোধের। এ রকম একটা সময়ে হঠাৎ এ দেশে যদি শীতঘুম থেকে জেগে উঠে ডাক্তারি শিক্ষায় বৈষম্যনিবারক এবং দেশের অন্তঃপুরের প্রবেশের অধিকারের অভিযোজক হিসাবে মাতৃভাষাকেই একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রক হিসাবে তুলে ধরা হয়, তা হলে তা নির্বোধের দুধপুকুরে স্নান করার মতো হবে না তো?

প্রশ্নের শেষ নেই। আমাদের দুর্ভাগ্য, এ দেশে চিকিৎসাশিক্ষা নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা যত ঘন ঘন হয়, তা যদি ধান মাঠে হত বা বাজরার ক্ষেতে হত, তা হলে দেশে নতুন এক বিপ্লব হতে পারত। বড় লোকের বাচ্চারা ডাক্তারি পড়বে— এই চিরায়ত সত্য নানা ফাঁকফোকর গলে এখন গণতান্ত্রিক ভারতে আরও জোরদার শামিয়ানার নীচে ‘র‍্যাপ’ সঙ্গীত গাইছে। দেশীয় ব্যবস্থা যে সংবেদনশীল এবং দুর্বলতর শ্রেণির প্রতি সহানুভূতিশীল, তা বোঝানোর জন্য জমিদারের বারান্দার মতো চিকিৎসাশিক্ষার অঙ্গনে মাতৃভাষার খুদ বিতরণ করে এতে খুব একটা পরিবর্তন আনা যাবে না। সুসজ্জিত, বলিয়ে-কইয়ে, কর্পোরেট ব্যবহার উপযোগী চিকিৎসক তৈরি করার রাজসূয় যজ্ঞে এখন এ দেশ মেতে আছে। সেখানে মাতৃভাষার জল সিঞ্চন আদতে টেরেস গার্ডেনের ফুলদানিতে জল ঢালার মতো।

আম-আঁটির ভেঁপু বাজিয়ে যতই ফিলহারমনিক অর্কেষ্ট্রাকে ‘এথনিক’ বলে প্রমাণ করার চেষ্টা হোক, তা সফল হবে না বলেই মনে হয়। কোনটা প্রগতির বার্তাবহ আর কোনটাই বা তার পরিপন্থী, এটা যদি ঠিক করা না যায়, তা হলে ‘বাঘারু বর্মণ’রা তৈরি হবে। যারা অমিত রায়ের ‘ম্যাসকট’ হিসাবে দেখা দেবে। গাঁ দেশে একটা প্রচলিত কথা আছে ‘কানার খালে পা’। আমরা সে রকমই একটা কিছু করার দিকে এগোচ্ছি না তো? না হলেই মঙ্গল!

(লেখক চিকিৎসক, লিভার ফাউন্ডেশনের সচিব। মতামত নিজস্ব।)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy