প্রতীকী ছবি।
কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্প বাতিল হউক, এই দাবিতে আবারও সরব হইলেন মুখ্যমন্ত্রীরা। সম্প্রতি নীতি আয়োগের বৈঠকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পি বিজয়ন দাবি করিয়াছেন, গ্রামীণ রোজগার নিশ্চয়তা প্রকল্প বা ‘স্বচ্ছ ভারত’-এর মতো কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলির সম্পূর্ণ ব্যয় কেন্দ্রকেই বহন করিতে হইবে। রাজ্য তাহার ভার বহন করিবে কেন? রাজ্যের এই আপত্তি নূতন নহে। পঞ্চাশের দশক হইতেই বার বার আপত্তি উঠিয়াছে যে, কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্প যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পরিপন্থী। সংবিধান যে বিষয়গুলিকে রাজ্য তালিকায় রাখিয়াছে, ওই সকল প্রকল্পের মাধ্যমে কেন্দ্র সেই বিষয়গুলিতে নাক গলাইতেছে। কেন্দ্র একাই করিবে পরিকল্পনা, তাহা রূপায়ণ করিতে হইবে রাজ্যকে, উপরন্তু খরচের একটি অংশও জুগাইতে হইবে, এই প্রত্যাশা কি অন্যায় নহে? রাজ্যবাসীর প্রয়োজন বুঝিয়া উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা এবং রূপায়ণ করিবে রাজ্য সরকার, ইহাই সঙ্গত। রাজ্যগুলির দাবি লইয়া জাতীয় উন্নয়ন পর্ষদে বহু বিতর্ক হইয়াছে, যোজনা কমিশন বিশেষজ্ঞ কমিটি নির্মাণ করিয়াছে। সুপারিশ অনুসারে বহু কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পকে রাজ্য প্রকল্প করা হইয়াছে, সেগুলির সংখ্যা কমানো হইয়াছে। এই সব প্রকল্প ঘোষণার পূর্বশর্তও নির্ধারণ করা হইয়াছে। শেষ অবধি অবশ্য কোনও ব্যবস্থাই স্থায়ী হয় নাই, কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পের সংখ্যা ফের বাড়িয়াছে।
সম্প্রতি এই ব্যবস্থার বিরুদ্ধে যুক্তি আরও শক্তিশালী হইয়াছে। চৌদ্দতম আর্থিক কমিশনের সুপারিশ অনুসারে, করের অর্থে রাজ্যগুলির ভাগ বাড়িয়া বত্রিশ শতাংশ হইতে বিয়াল্লিশ শতাংশ হইয়াছে। আক্ষেপ, রাজ্যের উপর অধিক ব্যয়ভারও চাপিয়াছে। কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলিতে কেন্দ্র নিজের ব্যয়ের ভাগ কমাইয়াছে— পূর্বের পঁচাত্তর শতাংশ হইতে এখন ষাট, এমনকি পঞ্চাশ শতাংশেও ঠেকিয়াছে। ফলে খরচ বাড়িয়াছে রাজ্যের। নীতি আয়োগের বৈঠকে নীতীশ কুমার বলিয়াছেন, ২০১৫-১৬ সালে কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পের জন্য বিহার সরকার সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা খরচ করিয়াছিল, এখন তাহা একুশ হাজার কোটি ছাড়াইয়াছে। ফলে রাজ্যের নিজস্ব প্রয়োজনে নির্মিত প্রকল্পের বরাদ্দে ঘাটতি পড়িতেছে। একই সুরে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করিয়াছেন, কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলির চল্লিশ শতাংশ ব্যয় জুগাইতে গিয়া রাজ্যের আর্থিক স্বাধীনতা ব্যাহত হইতেছে, কিন্তু নীতি আয়োগ প্রতিকারের চেষ্টা করে নাই।
এই মুখ্যমন্ত্রীরা যাহা উল্লেখ করেন নাই— রাজ্য তাহার ভাগের অর্থ দিতে না পারিলে উন্নয়ন প্রকল্পগুলি অর্ধপথে থামিয়া যায়। তাই, তুলনায় সম্পন্ন রাজ্যগুলিই বরাবর কেন্দ্রীয় অনুদানপ্রাপ্ত প্রকল্পের অধিক লাভ পায়। অসাম্যের আরও একটি কারণ ক্রমশ স্পষ্ট। উন্নয়ন প্রকল্প দিয়া জনসমর্থন আদায় করিতে সব দলই উদ্গ্রীব। তাই কেন্দ্রের প্রকল্পগুলি বর্জন করিতেছে পশ্চিমবঙ্গ-সহ নানা রাজ্যের শাসকদল। ইহার ফলে রাজ্যবাসী প্রচুর অনুদান হারাইতেছেন, যাহা তাঁহাদের প্রাপ্য ছিল, প্রয়োজনও ছিল। অর্থাৎ রাজনৈতিক বিরোধিতার কারণেও বঞ্চনা ও অসাম্য ঘটিতেছে। অতএব উন্নয়নের প্রয়োজনেও যুক্তরাষ্ট্রীয়তার নীতিকে সম্মান করিয়া প্রকল্প পরিকল্পনা ও রূপায়ণ রাজ্যের উপর ছাড়া জরুরি।
শঙ্করের ‘চৌরঙ্গী’ উপন্যাসের পটভূমি শাজাহান হোটেল আসলে কলকাতার কোন হোটেলের গল্প? ১৯৬১-৬২ সালে ‘দেশ’ পত্রিকায় প্রকাশের পর থেকেই এ নিয়ে পাঠকমহলে অদম্য কৌতূহল। উপন্যাসের স্বর্ণজয়ন্তী বর্ষে লেখক ফাঁস করলেন, তা আসলে ‘স্পেন্সেস হোটেল’— যা নাকি শুধু কলকাতা বা ভারতের প্রথম হোটেল নয় গোটা এশিয়াতেও, সাহেবদের ভাষায় ‘টু দি ইস্ট অব সুয়েজ়’। ১৮৩০-এর স্পেন্সেস হোটেল আজ আর নেই, কিন্তু রমরমিয়ে ব্যবসা করছে চৌরঙ্গির গ্র্যান্ড হোটেল। কারও খেয়াল আছে কি, এ বছর তার ১২৫তম বার্ষিকী? গ্র্যান্ডের উত্তরে ছিল হোটেল কন্টিনেন্টাল, দক্ষিণে ফারপোজ় রেস্তোরাঁ। কলকাতা কথকতার উদ্যোগে পুরনো কলকাতার এই সব হেরিটেজ হোটেল-রেস্তোরাঁর টুকরো টুকরো ইতিহাস শোনাবেন এবং দুর্লভ ছবি দেখাবেন প্রবীণ সংগ্রাহক ও গবেষক গোপাল বিশ্বাস, ২৫ জুলাই সন্ধে সাড়ে ৬টায় থিয়েটার রোডের শ্রীঅরবিন্দ ভবনে। সঙ্গে স্পেন্সেস হোটেলের লাগেজ লেবেল, তাঁরই সৌজন্যে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy