নৌকা ভেঙে এই অবস্থায় রয়েছে। নিজস্ব চিত্র
মাছের প্রজননকাল হওয়ায় প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধ থাকে সুন্দরবনের নদী খাঁড়িতে। এ বার লকডাউনের জন্য আরও আগে থেকে বন্ধ মাছ ধরা। ১৫ জুন থেকে মাছ ধরার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা উঠেছে। তবে আমপানে নৌকোর ক্ষতি হওয়ায় সুন্দরবনের বহু মৎস্যজীবী এখনও মাছ ধরতে যেতে পারছেন না।
আমপানে সুন্দরবন এলাকায় বহু নদীবাঁধ ভেঙেছে। ভেঙে পড়েছে বহু বাড়ি, গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। নদী-খাঁড়িতে নোঙর করে রাখা মৎস্যজীবীদের নৌকোও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঝড়ে। কোনও কোনও নৌকো নদীর ঢেউয়ে তলিয়ে গিয়েছে। আবার কোনও নৌকো ঢেউ আর ঝড়ের ঝাপটায় ভেঙে চুরমার। মৎস্যজীবীদের দাবি, নদী বা খাঁড়িতে নোঙর করে রাখা বেশিরভাগ নৌকোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কিছু কিছু মৎস্যজীবী নিজেদের উদ্যোগে নৌকো সারিয়ে মাছ ধরতে নদীতে গেলেও গোসাবা, বাসন্তীর বেশিরভাগ মৎস্যজীবী নৌকার অভাবে এখনও নদীতে মাছ ধরতে যেতে পারছেন না।
গোসাবার পুঁইজালি গ্রামের বাসিন্দা সমীর জানা, রবি গায়েন, কুমিরমারির মৎস্যজীবী নিত্যানন্দ মণ্ডলরা বলেন, “নদীতে মাছ ধরেই সংসার চলে, কিন্তু আমপানের ফলে নৌকো একেবারে ভেঙে গিয়েছে। সরকারি ক্ষতিপূরণও কিছু পাইনি। ফলে নতুন করে নৌকো তৈরি করতে পারিনি। জানি না, কবে ফের নৌকো নিয়ে মাছ ধরতে যেতে পারব।” বাসন্তীর ভরতগড়, বিরিঞ্চিবাড়ি, ঝড়খালি এলাকার মৎস্যজীবীদেরও অবস্থাও একই।
প্রশাসন সূত্রের খবর, আমপানের ফলে গোসাবা ব্লকে সম্পূর্ণ ও আংশিক ভাবে প্রায় বারোশো নৌকোর ক্ষতি হয়েছে। যাঁদের নৌকো সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের ১০ হাজার ও যাঁদের আংশিক ক্ষতি হয়েছে, তাঁদের ৫ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ সরকারি ভাবে দেওয়া হচ্ছে। তবে সরকারি ভাবে মাত্র ২০ জনের ক্ষতিপূরণের টাকা আপাতত এসেছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। যাতে দ্রুত বাকি ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ আসে, সে বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে আবেদনও জানানো হয়েছে ব্লকের তরফে। বিডিও সৌরভ মিত্র বলেন, ‘‘যে সমস্ত মৎস্যজীবীদের নৌকো ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাঁদের জন্য সরকারি সাহায্যের আবেদন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে রাজ্য মৎস্য দফতরের সঙ্গেও এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হয়েছে।”
অন্য দিকে, বাসন্তী ব্লকে ৮২টি নৌকো আমপানের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিডিও সৌগত সাহা। তার মধ্যে ২০টি নৌকো সম্পূর্ণ ও ৬২টি নৌকোর আংশিক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবীরা ক্ষতিপূরণের টাকা ইতিমধ্যেই পেতে শুরু করেছেন বলে বাসন্তী ব্লক প্রশাসনের তরফ থেকে জানা গিয়েছে।
তবে সরকারি হিসেবে সংখ্যাটা ৮২ হলেও আরও অনেক নৌকো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি বাসন্তীর মৎস্যজীবীদের। বিরিঞ্চিবাড়ি গ্রামের বাসিন্দা রবিউল গায়েন, ঝড়খালির বাসিন্দা মুকুন্দ সর্দারদের দাবি, “আমাদের নৌকো ঝড়ে ভেঙে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও সরকারি ক্ষতিপূরণ পাইনি। নৌকো ভাঙা থাকায় নদীতে মাছ ধরতেও যেতে পারছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy