কার্টুন
লেখক: শৈল চক্রবর্তী
মূল্য: ১৫০.০০
প্রকাশক: কারিগর
দীর্ঘ লেখা যা করতে পারে না ক’টি রেখা তা করে ফেলতে পারে। সহজ, সরল রেখার খেলায় কখনও নিখাদ মজা, কখনও সমাজ, রাজনীতি, চারপাশ নিয়ে তীব্র শ্লেষ। ভাব বিনিময়ের এই মাধ্যমটিকে ইংরেজিতে কার্টুন বললেও বাংলায় এর ঠিক প্রতিশব্দ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ব্যঙ্গচিত্র শব্দটি এর পুরো বিস্তার ধরতে পারে না। কার্টুনের সেই বিপুল বিস্তার একটি ছোট্ট বইয়ে ধরার চেষ্টা করেছিলেন শৈল চক্রবর্তী। ছোট ছোট অধ্যায়ে নানা ধরনের কার্টুনের সঙ্গে সাধারণ পাঠকের শুধু পরিচয় করিয়েই দেননি সহজে কী ভাবে কার্টুন আঁকা যায় তাও শিখিয়েছেন। ক্যারিকেচার, ম্যাজিক কার্টুন, সাময়িক, রাজনৈতিক, খেলার কার্টুন, নিছক ব্যঙ্গমূলক কার্টুন, ছোটদের কার্টুন, স্ট্রিপ কার্টুন এমনকী অ্যানিমেশন নিয়েও আলোচনা করেছেন। বার বার বলেছেন, কার্টুন আঁকা কঠিন নয়। তবে একে চারুকলার মর্যাদা দেওয়া উচিত। সেই না পাওয়ার বেদনা লেখার প্রচ্ছন্নে রয়ে গিয়েছে। প্রায় ৭১ বছর আগে প্রথম প্রকাশিত বইটিতে ‘মুখ দেখার বিচিত্র ভঙ্গী’ ও ‘শুধু পটে লিখা’— শৈল চক্রবর্তীর দু’টি লেখা সংযোজিত হয়েছে। বইয়ে লেখকের একটি ছবি থাকলে ভাল লাগত।
আম দরবার
লেখক: শতরূপা বন্দ্যোপাধ্যায়
মূল্য: ২০০.০০
প্রকাশক: আনন্দ পাবলিশার্স
শুধুমাত্র আমের দিকে তাকিয়েই গরমের অসহ্য দিনগুলি সহনীয় হয়ে ওঠে। তাই ঘাম-ঝরা গরমে আপনি যখন ক্লান্ত ও বিধ্বস্ত, তখন কাঁচা আমের শরবত ছাড়া মন প্রাণ জুড়োবার মতো আর কী-ই বা হতে পারে? কাঁচা আমের সবচেয়ে বড় গুণ হজমশক্তি বাড়িয়ে দেওয়া ও হিট স্ট্রোক প্রতিরোধ করা। যকৃৎ ও লিভারকেও তা সুস্থ সক্রিয় রাখে। উৎকৃষ্ট ফলটির এত গুণ থাকা সত্ত্বেও আমরা তো স্রেফ কেটে খাওয়া বা খুব জোর চাটনি কী আমপোড়া শরবত— এর বাইরে বড় একটা যাই না। অথচ কাঁচা বা পাকা আম দিয়ে কত সুস্বাদু রান্না হতে পারে। সেই খোঁজই দিয়েছেন রন্ধন বিষয়ক গ্রন্থ রচনায় সুপরিচিত শতরূপা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বইয়ে। আম দিয়ে বানানো পানীয়, রুটি-লুচি-পরটা, ভাত, স্যালাড, আমিষ-নিরামিষ পদ, জলখাবার, আচার-চাটনি, মিষ্টি, একেবারে লা-জবাব। বইটিতে আছে তিন শতাধিক রান্নার সুলুকসন্ধান— আমের লস্যি, আমের পরটা, আমের বিরিয়ানি, ম্যাঙ্গো রাইস স্যালাড, মুরগি আম মালাই, আম পোস্ত, আমের টিকিয়া, আমপোড়ার চাটনি, আমের কাবাবের মতো পদের রন্ধনপ্রণালী।
চলচ্চিত্র চলচ্চিত্র
লেখক: সৌম্যেন্দু রায়
মূল্য: ২৫০.০০
প্রকাশক: দে’জ পাবলিশিং
তখন উন্নত মানের রঙিন ফিল্ম অর্থাৎ হাই স্পিড ফিল্ম পাওয়ার সুবিধে ছিল না, নর্মাল স্পিডের নয়, স্লো স্পিডের ফিল্মই শুধু ছিল। ফলে ফিল্মের দুরূহ শট তোলার বিস্তর বাধা। সময়টা সত্তর দশকের শুরু। কোনও আলোর সরঞ্জাম বা জেনারেটর ছাড়া, বাইরের বাড়তি কোনও আলো ব্যবহার না করে একেবারে স্বাভাবিক আলোয় ‘অশনি সংকেত’-এর একটি অসাধারণ দৃশ্যের শট নিয়েছিলেন সৌম্যেন্দু রায়। সূর্য ডুবছে, পড়ন্ত আলোও প্রায় শেষ, অনঙ্গ বউ খিড়কি দরজায় দাঁড়িয়ে রয়েছে, মুখে উৎকণ্ঠার ছাপ। সত্যজিৎ রায় চেয়েছিলেন ওই অনির্বচনীয় মুহূর্তটিকে পর্দায় ধরে রাখতে, তাই সৌম্যেন্দুকে বললেন পড়ন্ত আলোর শটটি নিতে। ‘একসপোজার মিটারে আলোর পরিমাণ মাপলাম। কিন্তু আলো এত কম যে ফিল্মে ওই দৃশ্যটি তোলা মুশকিল।’ লিখেছেন সৌম্যেন্দু। সত্যজিৎকে সমস্যাটির কথা জানালেও তিনি কিন্তু ওভাবেই শটটি নিতে বললেন। ‘আমিও সাহসের সঙ্গে শটটি নিয়েছিলাম। বলাই বাহুল্য শটটি রি-টেক করতে হয়নি। পরে প্রজেকশন দেখে আমরা সবাই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।’ সৌম্যেন্দুর তোলা সেটিই ছিল প্রথম রঙিন ছবি। নিজের সিনেমাটোগ্রাফির হরেক রকম অভিজ্ঞতা লিখেছেন তিনি এই বইটিতে, আছে কিছু সাক্ষাৎকার আর স্মৃতিচারণও। যা থেকে সিনেমার রসিক কিংবা গবেষক সকলেই উপকৃত হবেন প্রভূত। ফিল্মের শিল্পরূপটি পরিচালকের সমবায়ে একজন আলোকচিত্রী কী ভাবে গড়ে তোলেন, তার প্রামাণ্য তথ্যনথি যেন এ বই। ‘পথের পাঁচালী’ থেকেই ক্যামেরার সহযোগী দায়িত্বসঙ্গী হিসেবে ছিলেন সত্যজিতের সঙ্গে, ‘তিনকন্যা’ থেকে হয়ে উঠলেন তাঁর ছবির স্বাধীন চিত্রগ্রাহক— কাহিনি-তথ্যচিত্র মিলিয়ে ১৯টি ছবিতে। তপন সিংহ তরুণ মজুমদার বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত উৎপলেন্দু চক্রবর্তী নিত্যানন্দ দত্ত হরিদাস ভট্টাচার্য সলিল সেন রাজা সেন সন্দীপ রায়— বহু বিশিষ্ট পরিচালকের ছবিতেই ক্যামেরা চালিয়েছেন তিনি। শ্রেষ্ঠ চিত্রগ্রাহক হিসেবে একাধিক বার পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। ভারতীয় সিনেমাটোগ্রাফিকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এনে দেওয়ার অন্যতম কারিগরও তিনি। তাঁর আর তাঁর ছবি তোলার দুর্লভ কিছু স্থিরচিত্র বইটিতে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy