গান নিয়ে
লেখক: অম্লান দাশগুপ্ত
মূল্য: ১৮০.০০
প্রকাশক: তালপাতা
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় মার্গ সঙ্গীতের সংগ্রহশালা সম্পর্কে নিবিষ্ট শ্রোতা ও রসিক অম্লান দাশগুপ্তের কথোপকথনটি থেকে হিন্দুস্তানি শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের রেকর্ডিং, সংগ্রহ ও আর্কাইভ বিষয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের নিরসন পাওয়া গেল। বলেছেন ‘আর্কাইভ দু’রকমের হয়। এক হচ্ছে যেগুলো অ্যাক্টিভ আর্কাইভ, আর হল রিপজিটরি আর্কাইভ। এসআরএ-র আর্কাইভ হল লিভিং আর্কাইভ। যতদিন এসআরএ থাকবে ততদিন সেখানে গান হবে এবং সেখানে কী গান হবে নির্ধারণ করবে এক জন কিংবা একাধিক মানুষ। কিংবা আমি সেইখানে একটা কমিউনিটির কথা ভাবতে পারি...’। সঙ্গে অম্লানের আরও তিনটি প্রয়োজনীয় লেখা বইটিতে। ‘খেয়াল গানের গোড়ার কথা’ বা ‘কলকাতায় মল্লিকার্জুন মনসুরের গান’ নিয়ে লেখার পাশাপাশি লিখেছেন ‘ওস্তাদ আমীর খাঁসাহেব ও খেয়াল গানের আধুনিকতা’ নিয়েও: ‘আব্দুল করিম নিশ্চয়ই আধুনিক খেয়ালের একজন প্রধান পুরুষ আর আমীর খাঁসাহেব যে বড়ো অর্থে তাঁরই সৃষ্ট ঘরানার শরিক সেটাও খুব একটা বিস্ময়কর নয়।’ ছড়িয়ে থাকা লেখাগুলি এ বার গ্রন্থবদ্ধ হওয়ায় পাঠক উপকৃত হবেন।
বিচিত্র লোকায়ত
লেখক: সুধীর চক্রবর্তী
মূল্য: ১৭৫.০০
প্রকাশক: পুস্তক বিপণি
গভীর নির্জন পথের পদাতিক সুধীর চক্রবর্তী-র পর্যটন পর্যবেক্ষণ এখনও সমান ভাবে সক্রিয়, অবতলের জীবনধারা আর তার আশ্চর্য অন্তর্বর্তী সমাজকে ঘিরে। ‘ফকিরালি কথা’, ‘কখনও পুরুষ কখনও নারী’, ‘সুগন্ধার কত কথা’, ‘বাউল পন্থ: বিদেশিনী ও প্রবাসিনী’— তাঁর নতুন বইয়ের এই চারটি রচনা জুড়ে বাংলার গ্রামের মানুষজনের কথা, তাঁদের জীবনযাপনের পরিসরে গাঁথা বিচিত্র ও বর্ণরঙিন অন্দরবাহির কথা। কখনও লোকধর্মের মগ্ন সাধকদের জগৎ, কখনও বাস্তুহারা লৌকিক দেবতা, আবার কখনও নারীস্বাতন্ত্র্যকামী চারিত্র্যমূর্তি। সারাক্ষণ মাধবের কথা স্মরণ করতে-করতে সুন্দরী রাধা কী ভাবে হয়ে ওঠে মাধব, ছাত্রজীবনে পড়া বৈষ্ণবপদের সেই চরণ স্মরণ করিয়ে ‘কখনও পুরুষ কখনও নারী’তে তিনি লিখছেন যেন তার ঠিক বিপরীত ছবি: ‘সবকিছুর ওপর সর্বদাই যাঁর খরদৃষ্টি আর তত্ত্বাবধান তাঁর নাম কৃপাময়ী। দেহগঠনে আর বাস্তবে পুরুষ, কিন্তু বেশবাসে বাক্যে ও লীলাবিলাসে নারী।’ নিজের এই অবিশ্রান্ত ক্ষান্তিহীন পরিক্রমা সম্পর্কে সুধীরবাবু এ বার শুরুতেই খেয়াল করিয়ে দিয়েছেন— ‘শুধু দেখার চোখটা পাল্টেছে।’
ফন্টস অব নলেজ
সম্পাদক: অভিজিৎ গুপ্ত ও স্বপন চক্রবর্তী
মূল্য: ৭৫০.০০
প্রকাশক: ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসোয়ান
প্রথম বাংলা সাময়িকপত্র ‘দিগ্দর্শন’-এ (১৮১৮) ‘ইয়োরোপের পূর্ব্বকালের বিবরণ’ লেখায় জানান হয়েছিল মুদ্রণযন্ত্রের প্রভাবে জ্ঞান পাশ্চাত্যে ‘অবিনাশী’ হল আর সে জ্ঞান ছড়িয়ে পড়ল। দিশি যুবকদের মাথায় মুদ্রণযন্ত্রের মহিমা ঢুকিয়ে দেওয়া কেবল মিশনারিদের উদ্দেশ্য ছিল না, বিলিতি শাসকদেরও উদ্দেশ্য ছিল। শাসিতদের মুদ্রিত জ্ঞানের সীমায় আনলে নিয়মতান্ত্রিক শাসন কায়েম করা যায়। ইংরেজি-শিক্ষিত শাসিত ভদ্রলোকেরা অবশ্য মুদ্রণযন্ত্রকে ভিন্ন অভিমুখ থেকে প্রয়োগ করে সাংস্কৃতিক আত্মতা নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন, স্বাদেশিক আবেগসঞ্চারও তাঁদের লক্ষ্য ছিল। তবে ভারত তো একভাষার দেশ নয়— সেখানে নানা ভাষা, নানা সংস্কৃতি। ইংরেজি ভাষা-সাহিত্যের দুই বিশিষ্ট শিক্ষক অভিজিৎ গুপ্ত ও স্বপন চক্রবর্তী ভারতীয় ভাষার ক্ষেত্রে নানা ভাবে মুদ্রণ সংস্কৃতি কী ভাবে ক্রিয়াশীল ছিল তার বিচিত্র বহুমাত্রিক ইতিহাস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন। মুদ্রণের প্রযুক্তি, মুদ্রণ-সংস্কৃতির সঙ্গে মুদ্রণ-পূর্ব সংস্কৃতির সম্পর্ক, সাময়িকপত্র, পাঠ্যগ্রন্থ, অলংকরণ, মুদ্রণকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা নগর-সংস্কৃতি এমন নানা বিষয় তাঁদের আগ্রহের কেন্দ্রে। তাঁদের উদ্যোগে ও সম্পাদনায় বই ভাবুকদের লেখা দুই মলাটের মধ্যে ধরা পড়ছে।
‘বুক হিস্টরি অব ইন্ডিয়া’ গ্রন্থমালার এই বইটিতে সাতটি নিবন্ধ রয়েছে। বেনারসের অলিগলিতে মুদ্রণ-সংস্কৃতি ঢুকে পড়ে কী ভাবে আধুনিকতার বিচিত্র বহর তৈরি করল, বঙ্গদেশে পবিত্র ভাগবতপুরাণ কী ভাবে নানা উৎকণ্ঠার মধ্য দিয়ে মুদ্রণ পরিসরে এল, আধুনিক শিক্ষার স্পর্শে নবনির্মিত শৈশবে উত্তর ভারতের শিশু-কিশোরপাঠ্য হিন্দি সাময়িকপত্রের জগৎ কেমন ছিল, বঙ্গদেশে চিন্তার জগতে কেমন ভাবে আন্দোলন তুলেছিল বঙ্কিম-সম্পাদিত ‘বঙ্গদর্শন’, ১৯২০-’৪০ কালপর্বে শাসক কী ভাবে ও কেন মুদ্রণের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতেন, ১৮৩০-১৯০০ পর্বে বঙ্গদেশে পাঠ্যবই নির্মাণ ও ব্যবহারের ইতিহাস— এমন নানা বিষয় নিয়ে বিশিষ্ট নিবন্ধকারেরা আলোচনা করেছেন। সুখপাঠ্য-তথ্যনিষ্ঠ এই আলোচনা বইরসিকদের ভাল লাগবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy