সাজার মেয়াদ শেষে কারাবন্দিদের কাজ পেতে কালঘাম ছুটে যায়। সামাজিক নানা কারণে তাঁদের চট করে নিয়োগ করতে চান না কেউ। কাজের সুযোগ না-মেলায় অনেকেই হয় মানসিক অবসাদের শিকার হন, বা তাঁদের অপরাধ জগতের অন্ধকারেই ফিরে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। রাজ্য চায়, সেই সব কারাবন্দিদের কর্মসংস্থানমুখী প্রশিক্ষণ ও কাজের সুযোগ তৈরির জন্য এগিয়ে আসুক কর্পোরেট জগত। এমসিসি চেম্বারের এক সভায় সম্প্রতি ওই আর্জি জানান রাজ্যের কারামন্ত্রী হায়দার আজিজ সফি।
জেলবন্দিদের জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আরও তিনটি মুক্ত সংশোধনাগার তৈরি করছে রাজ্য। সফি জানান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া ও পূর্ব মেদিনীপুরে সেগুলি তৈরি হবে। উল্লেখ্য, এখন দুর্গাপুর ও লালগোলায় দুটি মুক্ত সংশোধনাগার রয়েছে।
‘বন্দিদের আর্থিক ক্ষমতায়ন’ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনাচক্রের আয়োজন করেছিল এমসিসি চেম্বারের মহিলা শাখা। সেখানেই সফির বক্তব্য, সংশোধনাগারে থাকার সময়ে কারাবন্দিদের পরিবার কার্যত সামাজিক বয়কটের মুখে পড়ে। ছাড়া পাওয়ার পরেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সহজে কাজ পান না বলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতেও পারেন না। ইতিমধ্যেই সংশোধনাগারে নানা ধরনের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ শুরু করেছে রাজ্য। সেটাকেই আরও প্রসারিত করতে কর্পোরেট দুনিয়া ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির কাছে আহ্বান জানান সফি। দু’এক মাসের মধ্যে যাঁরা বিভিন্ন সংশোধনাগার থেকে ছাড়া পাবেন, তাঁদের তালিকা ইচ্ছুক সংস্থাগুলির হাতে তুলে দেবেন বলেও জানিয়েছেন তিনি।
কারাবন্দিদের নিয়ে এ রাজ্যে নৃত্য ও অভিনয়ের জগতে উল্লেখযোগ্য অবদান বিশিষ্ট নৃত্যশিল্পী অলকানন্দা রায়ের। তাঁর মতে, পেশাদার সংস্থায় কাজের সুযোগ পাওয়ার জন্য কারাবন্দিদের যথাযথ ও স্বীকৃত প্রশিক্ষণ থাকা জরুরি।
ব্রিটেনে জেলবন্দিদের কর্মসংস্থানমুখী প্রশিক্ষণে যুক্ত ব্রিটিশ শিল্পোদ্যোগী জিলিয়াম হাসলামও উপস্থিত ছিলেন সভায়। কলকাতায় জন্ম হওয়া হাসলাম জানান, ব্রিটেনে যাঁরা এক সময়ে কারাবাস করেছেন, তাঁদের গোড়ায় মূল্যায়ন করা হয়। যাঁদের দক্ষতা রয়েছে, তাঁদের জন্য সরাসরি কর্মসংস্থানের চেষ্টা করেন হাসলামের সংস্থা রেমেডিয়া ট্রাস্ট ফাউন্ডেশন। যাঁদের কোনও দক্ষতা নেই, তাঁদের তিন থেকে ছ’মাস বিভিন্ন ধরনের পরিষেবা সংস্থায় কিছু দিনের চাকরির বন্দোবস্ত করা হয়। সেখান থেকে উপার্জন করলে তাঁদের নিজেদের সম্পর্কে আস্থা বাড়ে। এক অর্থে ক্ষমতায়ন হয়। ফের তাঁদের ওই ট্রাস্টের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
এ রাজ্যেও একই ভাবে কাজ করতে আগ্রহী হাসলাম জানিয়েছেন, এ জন্যই ইতিমধ্যে এ শহরে এ জন্য তাঁদের পাঁচটি দল প্রাথমিক কাজ শুরু করছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy