বিমান ডানাই মেলেনি। সেই সকাল থেকে বাতিল হয়ে যাচ্ছে একের পর এক উড়ান। অথচ তার পরেও বিমানবন্দরের বাইরের বোর্ডে জ্বলজ্বল করছে লেখা স্পাইসজেটের উড়ান চলছে নির্ধারিত সময়েই! এমনকী কাউন্টার থেকে সদ্য উড়ান বাতিলের খবর পেয়ে চুল ছিঁড়ছেন যে যাত্রী, চেক ইনের সময় জানিয়ে এসএমএস আসছে তাঁর মোবাইলেও। একে উড়ান বাতিলের ভোগান্তি, তার উপর দিনভর বিভ্রান্তির জেরে ধৈর্যের বাঁধ ভাঙল যাত্রীদের। বিমানবন্দরে ক্ষোভে ফেটে পড়লেন কয়েকশো যাত্রী।
এমনিতে আরও ১৫ দিন উড়ান চালাতে কেন্দ্রের ছাড়পত্র পেয়েছে স্পাইসজেট। তাদের কিছুটা স্বস্তি দিয়ে মঙ্গলবারই বিমান পরিষেবা নিয়ন্ত্রক ডিজিসিএ জানিয়েছে, আপাতত ৩০ দিনের বেশি দূরের টিকিট দেওয়ার নিষেধাজ্ঞাও ধুঁকতে থাকা সংস্থাটির উপর থেকে তুলছে তারা। ফলে আগামী মার্চ পর্যন্ত যে কোনও দিনের জন্য টিকিট বেচতে পারবে স্পাইসজেট। সংবাদসংস্থার খবর ধুঁকতে থাকা এই বিমান সংস্থাটিকে কিছুটটা স্বস্তি দিতে দেশের ব্যাঙ্ক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে স্পাইসজেটকে ৬০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋ
ণ দিতে অনুরোধ জানাতে পারেন বিমান পরিবহণ মন্ত্রী। সংস্থাটির জন্য বিদেশ থেকে টাকা নেওয়ার রাস্তা প্রশস্ত করতে অর্থ মন্ত্রকের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন তাঁরা। কিন্তু প্রশ্ন, এই মুহূর্তে সংস্থার যা আর্থিক অবস্থা এবং পরিষেবার যা হাল, তাতে ভরসা করে উড়ানের টিকিট কাটবেন ক’জন যাত্রী?
বিমানবন্দর সূত্রে খবর, এ দিন কলকাতা থেকে স্পাইসজেটের একটি মাত্র উড়ান মুম্বই গিয়েছে। বাতিল হয়েছে বাকি ৮টি উড়ান। যাত্রীদের অভিযোগ, তাঁরা টিকিট কেটে রেখেছিলেন অনেক (এক থেকে চার মাস) আগে। কিন্তু তা সত্ত্বেও নাকাল হতে হয়েছে তাঁদের। সংস্থা উড়ান বাতিলের খবর আগাম তো জানায়ইনি, উপরন্তু তা বাতিলের পরে চেক ইনের এসএমএস এসেছে। বিমানবন্দরের বাইরের বোর্ডে লেখা, স্পাইসজেটের উড়ান চলছে নির্ধারিত সময়ে।
কারও আত্মীয়ের দেহ পড়ে সৎকারের অপেক্ষায়, তো কেউ আশঙ্কিত নতুন কাজে প্রথম দিনই যোগ দিতে না-পারা নিয়ে। স্পাইসজেটের উড়ান বাতিল নিয়ে হয়রানির সাতকাহন শোনাচ্ছিলেন যাত্রীরা। যেমন উড়ান বাতিল হওয়ায় শিলচর যাওয়া হয়নি কলকাতার সোমেশ দেবরায়ের। তিনি বলেন, “ছোট ভাইয়ের স্ত্রী মারা গিয়েছেন। আমি গেলে সৎকার করা হবে।” বুধবারই বেঙ্গালুরুতে গবেষণার কাজে যোগ দেওয়ার কথা প্রিয়ঙ্কা সাহার। অসহায় মুখে তাঁর বক্তব্য, “এখন চড়া দামে অন্য উড়ানের টিকিট পাওয়ার চেষ্টা করছি।”
এ ভাবে হয়রানির কারণে বিক্ষোভ দানা বাঁধছিল শুরু থেকেই। দুপুর পৌনে তিনটের পর তা চরমে ওঠে। সংস্থার কাউন্টারে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন যাত্রীরা। দাবি তোলেন, অন্য উড়ানে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়ার। যাত্রীরা জানান, এরপরই তড়িঘড়ি যাত্রীদের বোর্ডিং পাসের উপর স্ট্যাম্প লাগিয়ে স্পাইসজেটের এক কর্মী। সেখানে লিখে দেন সাত দিনের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যায়নি। বিমানবন্দর ম্যানেজারের ঘরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন যাত্রীরা। ডাকতে হয় বিমানবন্দর থানার পুলিশকে। তবে এই পুরো ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি স্পাইসজেট কর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy