আয়তনে বাড়ছে ভারতীয় অর্থনীতি। তবে তা পুরোপুরি ধরা পড়ে না পরিসংখ্যানে, যেহেতু বাদ যায় হাল আমলে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠা বহু ক্ষেত্র। এর মধ্যে রয়েছে অসংগঠিত এবং প্রথাগত ক্ষেত্রের বাইরে থাকা বিস্তীর্ণ আর্থিক কর্মকাণ্ড। সেই অধরা অংশকে হিসাবের মধ্যে আনলে আর্থিক বৃদ্ধি নতুন মাত্রা পাবে বলেই মনে করছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। আর, সেই লক্ষ্যে জাতীয় আয় সংক্রান্ত হিসাব-নিকাশ তড়িঘড়ি সংশোধন করছে তারা। পরিসংখ্যান মন্ত্রক সূত্রে এই ইঙ্গিত দিয়ে জানানো হয়েছে, হিসাবের জন্য ভিত্তিবর্ষও ধরা হবে ২০১১-’১২। এত দিন তা ছিল ২০০৪-’০৫, যা চালু হয়েছিল ২০০৬ সালে।
সাধারণত মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) বা জাতীয় আয় সংক্রান্ত যাবতীয় পরিসংখ্যানের হিসাব পদ্ধতি পাঁচ বছর অন্তর সংশোধন করে কেন্দ্রীয় সরকার। তখনই নয়া ভিত্তিবর্ষ চালু করা হয় এবং পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অর্থনীতির নতুন নতুন ক্ষেত্রকে কিছুটা ধরা-ছোঁয়ার মধ্যে আনা হয়। এর আগে শেষ বার তা করা হয় ইউপিএ সরকারের আমলে ২০১০ সালের মার্চ মাসে। সে যাত্রায়ও জাতীয় আয়, বার্ষিক বৃদ্ধির হার ইত্যাদি অনেকটাই বেড়েছিল নয়া হিসাবে ৮০ থেকে ১৭০ বেসিস পয়েন্ট। সে সময়ে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল নির্মাণ শিল্প, বাণিজ্য ও আতিথেয়তা শিল্পকে। দ্বিগুণ গুরুত্ব দেওয়া হয় ব্যক্তিগত শিক্ষকতার পেশা বা টিউশনকে। আবার যোগাযোগ, রেলের মতো ক্ষেত্রের গুরুত্ব কমেছিল। অর্থনীতিবিদদের মতে, পরবর্তী চার বছর ধরে তার ফায়দা তুলেছিল মনমোহন সিংহ সরকার, যার জেরে দেশে আর্থিক বৃদ্ধির হার একটানা সর্বোচ্চ স্তরে ধরে রাখার কৃতিত্বও দাবি করে তারা। এ বার সেই একই পথে হেঁটে রাজকোষ ঘাটতিতে রাশ টেনে বৃদ্ধির হারকে ২০১৫ সালেই এক লাফে অনেকটা টেনে তুলতে কৃতসংকল্প প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই কারণেই সংশ্লিষ্ট সূত্রের মতে, পাঁচ বছর পেরোনোর আগেই তড়িঘড়ি হিসাব পদ্ধতি বদল করে অর্থনীতির নতুন গড়ে ওঠা ক্ষেত্রগুলিকে ধরে উন্নয়নের রথকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চান তিনি।
ভারতের প্রাক্তন মুখ্য পরিসংখ্যানবিদ এবং বর্তমানে জাতীয় পরিসংখ্যান কমিশনের চেয়ারম্যান প্রণব সেন বলেছেন, নতুন পদ্ধতি চালু হলে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির আয়তন অনেকটাই ফুলে-ফেঁপে উঠবে। যে-সব এলাকাকে বর্তমান পরিসংখ্যান এড়িয়ে গিয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে প্রথার বাইরে থাকা বেশ কিছু উৎপাদন শিল্প, পরিষেবার বিস্তীর্ণ ক্ষেত্র এবং নতুন গড়ে ওঠা আরও কিছু কর্মকাণ্ড। প্রণববাবুর হিসাব অনুযায়ী, এই পরিবর্তন আসার আগে পুরনো হিসাবেও চলতি ২০১৪-’১৫ আর্থিক বছরে বৃদ্ধি ৬ শতাংশ ছোঁবে। প্রসঙ্গত, এপ্রিল থেকে জুন ত্রৈমাসিকেই তা ৫.৭% ছুঁয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy