আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (আইএমএফ) পরে এ বার বিশ্ব ব্যাঙ্ক। নতুন বছরেও বিশ্ব অর্থনীতির আকাশ মেঘলা থাকার পূর্বাভাস দিল তারা। ছাঁটাই করল ২০১৬ সালে বিশ্ব অর্থনীতির সম্ভাব্য বৃদ্ধির হার। এবং তার জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর রক্তাল্পতায় ভোগা উন্নত দুনিয়ার সঙ্গে ‘কাঠগড়ায় তুলল’ ঝিমিয়ে পড়া উন্নয়নশীল দেশগুলিকেও। গত বছরের একেবারে শেষে এই একই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন আইএমএফের কর্ণধার ক্রিস্টিন ল্যাগার্দেও। বলেছিলেন, ২০১৬ সালে বিশ্ব অর্থনীতির চাকা গড়াবে সেই ঢিমে তালেই।
বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, নতুন বছরে বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধির হার সম্ভবত দাঁড়াবে ২.৯%। যা ২০১৫ সালের ২.৪ শতাংশের তুলনায় বেশি, কিন্তু গত জুনে তাদেরই করা ৩.৩% পূর্বাভাসের তুলনায় অনেকটাই কম।
বৃদ্ধির হার এ ভাবে ঝিমিয়ে পড়ার জন্য প্রথমেই আঙুল উঠছে উন্নয়নশীল দেশগুলির দিকে। চিনের শেয়ার বাজার টালমাটাল। চিনা মুদ্রা ইউয়ানের দামও পড়ছে হুড়মুড়িয়ে। এর পিছনে অন্যতম কারণ চিনা অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ। বিশ্ব ব্যাঙ্কের মতে, ২০১৬ সালে ওই দেশে বৃদ্ধি দাঁড়াবে ৬.৭%। জুনে যে পূর্বাভাস ছিল ৭%। দক্ষিণ আফ্রিকার বৃদ্ধির পূর্বাভাস ২.১% থেকে কমে হয়েছে ১.৪%। একমাত্র মন্দের ভাল ভারত। জুনের তুলনায় তার বৃদ্ধির সম্ভাবনা মাত্র ০.১% হলেও বেড়েছে। দাঁড়িয়েছে ৭.৮ শতাংশে।
তবে একেবারেই বেহাল দশা ব্রিকস গোষ্ঠীর বাকি দুই দেশ ব্রাজিল এবং রাশিয়ার। বিশ্ব ব্যাঙ্কের মতে, চলতি বছরে সম্ভবত বৃদ্ধির মুখই দেখবে না তারা। জুনে মনে করা হয়েছিল, গত বছর অর্থনীতি সঙ্কুচিত হলেও এ বার ওই দুই দেশের বৃদ্ধির হার হবে যথাক্রমে ১.১ এবং ০.৭ শতাংশ। কিন্তু এখন তাদের গতি সুবিধার ঠেকছে না বিশ্ব ব্যাঙ্কের। ২০১৬ সালে ব্রাজিল ও রাশিয়ার মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) বরং যথাক্রমে ২.৫ এবং ০.৭ শতাংশ কমে যাবে বলে আশঙ্কা করছে তারা। তাদের মতে, আজকের খোলা অর্থনীতির যুগে একসঙ্গে এতগুলি উন্নয়নশীল দেশের (যাদের বাজারের মাপও বিশাল) বৃদ্ধি যদি ঝিমিয়ে যায়, তবে তার প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতির উপরে পড়তে বাধ্য। আর এখন ঠিক সেটাই হচ্ছে।
উন্নয়নশীল দুনিয়ার এই খামতি হয়তো কিছুটা দূর হত ২০০৮ সালের বিশ্বজোড়া মন্দার রেশ কাটিয়ে উন্নত দেশগুলি পুরোদস্তুর ঘুরে দাঁড়াতে পারলে। কিন্তু বিশ্ব ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে, সে গুড়েও বালি। তাদের মতে, ২০১৬ সালে মার্কিন অর্থনীতিতে বৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ২.৭%। অথচ জুনে মনে করা হয়েছিল, তা হবে অন্তত ২.৮%। একই দশা অধিকাংশ ইউরোপীয় দেশের। বিশ্ব ব্যাঙ্কের হিসেব অনুযায়ী, ইউরোপীয় অঞ্চলে এ বছর বৃদ্ধি হবে ১.৭%। জুনের ১.৮% পূর্বাভাসের থেকেও কম।
উল্লেখ্য, বিশ্ব অর্থনীতির চাকা ঢিমে তালে গড়ানোর সম্ভাবনার কথা সম্প্রতি বলেছেন ল্যাগার্দেও। সম্প্রতি একটি জার্মান সংবাদপত্রে নিজের এক লেখায় এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর মতে, ২০১৬ সালেও বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধির হার হবে হতাশাজনক। এমনকী মাঝারি মেয়াদেও তা পুরোদস্তুর ছন্দে ফিরতে পারবে কি না, সে বিষয়ে সন্দেহ আছে তাঁর।– সংবাদ সংস্থা
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy