কৌশিক বসু
দুনিয়া জুড়ে অর্থনীতি নিয়ে হতাশার ছবিই তুলে ধরল বিশ্বব্যাঙ্ক। আর, সেই সঙ্গেই ভারতের মতো দ্রুত উন্নয়নশীল রাষ্ট্রকে কঠিন সময়ের জন্য কোমর বাঁধতে বলল এই আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থা। এর কারণ হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সুদ বাড়ার সম্ভাবনা ক্রমে আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠার দিকেই ইঙ্গিত করেছে তারা। যার প্রভাবে বাড়বে এই সব দেশের আন্তর্জাতিক ঋণ নেওয়ার খরচ, কমবে শেয়ার বাজারে বিদেশি আর্থিক সংস্থার লগ্নি। এই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ব অর্থনীতির বৃদ্ধির হারও কাটছাঁট করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক।
২০১৫ সালের জন্য জানুয়ারিতে বিশ্ব অর্থনীতির ৩% বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিলেও এখন তা কমিয়ে ২.৮% করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক। দুনিয়া জুড়ে আর্থিক বৃদ্ধি নিয়ে ‘গ্লোবাল ইকনমিক প্রসপেক্টস’ শীর্ষক রিপোর্ট পেশ করে বিশ্বব্যাঙ্কের মুখ্য অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু এ কথা জানিয়েছেন। এর জন্য আমেরিকার সুদ বাড়ানোর পথে এগোনো ছাড়াও বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম গত বছরের তুলনায় ৪০% পড়ে যাওয়াকে কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন কৌশিকবাবু। তিনি জানান, এই জন্যই সংশ্লিষ্ট রফতানিকারী দেশগুলি মার খেয়েছে। কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের প্রাক্তন প্রধান আর্থিক উপদেষ্টা কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘এই কারণেই উন্নয়নশীল দুনিয়াকে বিশেষ করে সজাগ হওয়ার সঙ্কেত দিচ্ছি। এটাই ‘সিট বেল্ট’ বাঁধার সময়।’’ পাশাপাশি, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের ধাঁচেই মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভকে তাঁর পরামর্শ, আগামী বছরের আগে তারা যেন সুদ বাড়ানোর পথে না-হাঁটে। কারণ, তা হলে বিশ্ব জুড়ে আর্থিক বৃদ্ধি আরও নিম্নমুখী হবে। ডলারের দাম বাড়বে, পড়বে ভারতীয় টাকা সমেত অন্য মুদ্রাগুলির দর। কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘এ বছর সুদ না-বাড়িয়ে আগামী বছর তা করার পরামর্শ অবশ্য আমার ব্যক্তিগত। সার্বিক ভাবে এটা বিশ্বব্যাঙ্কের মত নয়। দুনিয়া জুড়ে অর্থনীতির যে-ছবি ফুটে উঠছে, তার পরিপ্রেক্ষিতেই এই পরামর্শ। আর, বিশ্বের উন্নয়ন ব্যাহত হলে তার প্রভাব এড়াতে পারবে না আমেরিকা।’’
মার্কিন বৃদ্ধির হারও কমবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। যা ২.৭ শতাংশে দাঁড়াবে। জানুয়ারিতে এই পূর্বাভাস ছিল ৩.২%। আগামী বছরের হার ২.৮% হবে বলে মনে করছে তারা, এর আগে ইঙ্গিত ছিল ৩%। তবে কৌশিকবাবুর মন্তব্য, এই প্রথম বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুতগতিতে এগোবে ভারতের অর্থনীতি। ২০১৫ সালে ভারতে ৭.৫% আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাঙ্ক। আগের হিসাব ৬.৪%। কিন্তু ২০১৫-এ গোটা উন্নয়নশীল বিশ্বের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৪.৮% থেকে কমিয়ে ৪.৪% করেছে তারা। এ জন্য ব্রাজিল ও রাশিয়ার সম্ভাব্য মন্দাকেই দায়ী করেছে বিশ্বব্যাঙ্ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy