সস্তা হলেও বিমানে জ্বালানি লাগে অনেক বেশি। গ্রাফিক: সৌভিক দেবনাথ
জ্বালানির দাম তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার কলকাতায় লিটার প্রতি পেট্রলের দাম ১০৮ টাকা ৭৮ পয়সা। ডিজেলের দরও ১০০ টাকার উপরে। লিটার প্রতি দাম ১০০ টাকা ১৪ পয়সা। অথচ বৃহস্পতিবার বিমানের জ্বালানি এয়ার টারবাইন ফুয়েল (এটিএফ)-এর দর লিটার প্রতি ৭৬ টাকা ৫৯ পয়সা। ফলে লিটার প্রতি জ্বালানির দর অনুযায়ী মজা করে এমনটা মনে হতেই পারে, মোটরসাইকেল চালানোর চেয়ে উড়োজাহাজে ওড়া সস্তার!
ভারতে প্রায় সব কিছুতেই জিএসটি কার্যকর হলেও এখনও পর্যন্ত তার বাইরে রয়েছে জ্বালানির দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে ওঠাপড়ার উপরে নির্ভর করেই প্রতি দিন দাম কমে বা বাড়ে। তবে পেট্রল-ডিজেলের এত বেশি দামের পিছনে একটা বড় কারণ কেন্দ্রীয় সরকার ও বিভিন্ন রাজ্য সরকারের করের বোঝা। এখন কেন্দ্র যে পরিমাণে কর চাপায় তাতে প্রতি লিটার পেট্রলে কেন্দ্র নেয় ৩২.৮০ টাকা আর ডিজেলের ক্ষেত্রে ৩১.৮০ টাকা। এর উপরে বিভিন্ন রাজ্য সরকার বিভিন্ন হারে কর, সেস, ভ্যাট বসায়। যার ফলে পেট্রল, ডিজেল কেনার সময় জ্বালানির মূল দামের থেকে কর দিতে হয় বেশি। মোটামুটি এই দুই জ্বালানিতে কেন্দ্র ৬৩ শতাংশ এবং রাজ্য ৩৭ শতাংশ কর চাপায়। আর এই করের হারটাই বিমানের জ্বালানির ক্ষেত্রে অনেকটা কম।
তবে অনেক দেশের তুলনায় ভারতে বিমান-জ্বালানির দাম বেশি। এর পিছনেও কারণ করের হার। কেন্দ্রের ১১ শতাংশ কর তো রয়েছেই তার উপরে বিভিন্ন রাজ্য মোটামুটি শূন্য থেকে ৩০ শতাংশ হারে ভ্যাট বসায়। করোনাকালে বিমান সংস্থাগুলি লোকসানে চলায় সম্প্রতি কেন্দ্রীয় অসামরিক বিমান পরিবহণ মন্ত্রক সব রাজ্যকে ভ্যাট কমানোর আর্জি জানায়। বলা হয়, সর্বত্র ১ থেকে ৪ শতাংশ করা হোক ভ্যাটের পরিমাণ। কেরল সরকার ভ্যাটের হার কমিয়ে ১ শতাংশ করেছে। এর ফলে সেই রাজ্যে এখন বিমানের জ্বালানি অন্য রাজ্যের তুলনায় সস্তা।
বিমানের জ্বালানি অবশ্য পেট্রল, ডিজেলের তুলনায় মানের দিক থেকেও কিছুটা কমা। ইন্ডিয়ান অয়েলের ওয়েবাসইট অনুযায়ী, আনলেটেড কেরোসিন (জেট এ ১) বা নেফথা-কেরোসিন মিশ্রণ (জেট বি)-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি হয় এটিএফ। বিমানের জ্বালানির কোনও রং হয় না।
বিমানে জ্বালানির প্রয়োজনও হয় বেশি। তাই লিটার নয়, কিলোলিটার হিসেবেই বিক্রি হয় এটিএফ। বৃহস্পতিবার এক কিলোলিটারের দাম ছিল ৭৬,৫৯০ টাকা। বিমানে কোন ধরনের ইঞ্জিন এবং সেটি কতটা উচ্চতায় উড়বে, তার ওপর নির্ভর করে জ্বালানির পরিমাণ। পেট্রল, ডিজেলের মতো এটিএফ-কে জিএসটি-র আওতায় আনার দাবিও উঠেছে দেশে। এটা হলে দাম যেমন কমবে, তেমন দেশের সর্বত্র একই দরে পাওয়া যাবে।
তবে তখনও কি পেট্রল-ডিজেল ও এটিএফ এর জন্য একই হারে জিএসটি দিতে হবে? এর উত্তরের জন্য দেশের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী প্রয়াত অরুণ জেটলির একটি কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী যখন সব কিছুতেই ১৮ শতাংশ জিএসটি বসানোর দাবি জানিয়েছিলেন, তখন জেটলি বলেছিলেন, ‘‘হাওয়াই চপ্পল আর মার্সিডিজে করের হার কখনও এক হতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy