কমেই চলেছে টাকার দাম। প্রতীকী চিত্র।
ক্রমাগত পড়ছে টাকার দাম। লাফিয়ে বাড়ছে আমেরিকান ডলারের দর। এই প্রথম ডলার প্রতি ভারতীয় টাকার মূল্য পার করল ৭৯ টাকা। ডলারের দামের নিরিখে টাকার দর এই ভাবে বৃদ্ধি পাওয়ার নেপথ্যে কী কারণ থাকতে পারে? বর্তমানে আমেরিকান ডলারের নিরিখে ভারতীয় টাকার মূল্য ৭৮.২৮ টাকা। বলা যেতে পারে রেকর্ড পতন। বিগত কয়েক মাসে ধারাবাহিক ভাবে এই পতনের কারণে প্রমাদ গুনতে শুরু করেছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা।
বছরের শুরু থেকেই মূদ্রাস্খলনের কারণে সমস্যায় পড়েছে আমজনতা। তথ্য অনুযায়ী, বছরের শুরু থেকে প্রায় ৫ শতাংশ কমেছে টাকার দাম। বৃহস্পতিবার আমেরিকান ডলারের নিরিখে ভারতীয় টাকার মূল্য ৭৭.৮৪-এ আটকে যাওয়ার পরে তা আবার ৭৮.১৪ টাকা থেকে শুরু করে। শুক্রবার তা দাঁড়ায় ৭৮.৯৫-এ।
কিন্তু কেন এমন হচ্ছে?
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, টাকার মূল্যের এই অধোগামিতার নেপথ্যে একাধিক বাহ্যিক কারণ রয়েছে। পাশাপাশি এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত অভ্যন্তরীণ প্রচেষ্টার অভাবও রয়েছে বলে মনে করেন অনেকে।
যে পরিস্থিতির কারণে সামগ্রিক অর্থনীতি, স্টক এবং বন্ড বাজার ব্যাপক ভাবে প্রভাবিত হয়ে চলেছে। ফলস্বরুপ উচ্চ এবং ব্যয়বহুল আমদানির তুলনায় বিনিয়োগের পরিমাণ অত্যন্ত কম হয়েছে। পাশাপাশি ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রভাবও পড়েছে ভারতের বাজারে। শুধু ভারতই নয়, এই যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির খোলনলচে বদলে দিয়েছে। অন্য দিকে বিশ্ব জুড়ে রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে প্রায় চার থেকে সাত শতাংশ পতন ঘটেছে মুদ্রার। স্বাভাবিক ভাবেই যা প্রভাবিত করেছে সামগ্রিক অর্থবাজারকে।
২০২২-এর ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন-রাশিয়া সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকে ভারতীয় মুদ্রা একই ভাবে প্রায় চার শতাংশ অবমূল্যায়নের সম্মুখীন হয়েছে। অন্য দিকে আমেরিকান মুলুকের নতুন অর্থনৈতিক নীতির কারণে ডলারের সঙ্গে অন্যান্য বৈশ্বিক মুদ্রার দরের বড় পার্থক্য দেখা যাচ্ছে। যার ফলে প্রভাবিত হয়েছে তেলের দামও।
ক্রমবর্ধমান ডলার সূচক এটাই প্রমাণ করছে যে আমেরিকান ডলার অন্য মুদ্রা যেমন পাউন্ড, ফ্রাঁ, ইউরো, ইয়েন এবং রুপি-কে ছাড়িয়ে যাচ্ছে।
অতীতেও দেখা গিয়েছে, যখন ডলারের দাম বেড়ে যায়, তখন এটি আমেরিকান শেয়ার এবং তেলের ব্যারেলের মতো সমস্ত সম্পর্কিত পণ্যের মূল্যকে প্রভাবিত করে। অন্য দিকে কমে যায় ভারতীয় টাকার মতো মুদ্রার মূল্য।
এই সমস্যার মধ্যেই সম্প্রতি বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ৩৭৯৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। এই বছরই ভারতীয় বাজার থেকে ২,১৫,০০০ কোটি টাকা তুলে নিয়েছে তারা। যা গত ১২ বছরে তাদের মোট বিনিয়োগের সমতুল্য।
তাঁরা মনে করছেন, এই মুহূর্তে বাজারের অবস্থা টালমাটাল। আগামী দিনে সমস্যা বাড়লে বাজারের পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। অর্থনীতির ভাষায় যাকে বলা হয় ঝুঁকিপূর্ণ বাজার। এমন বাজার থেকে অর্থ তুলে নেওয়াই শ্রেয়। ফলে টাকার মানের ক্রমাগত অবমূল্যায়ন হচ্ছে। ডলার সূচকের এমন গতি স্বভাবতই বিনিয়োগকারীদের উদীয়মান বাজারে বিনিয়োগ করতে উৎসাহ যোগায় না। কারণ এই সময় ভারতের মতো বাজারের তুলনায় আমেরিকাকে এই ধরনের বিনিয়োগকারীদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় বলে মনে করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy