Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

‘এতে অচ্ছে দিন কোথায়?’

গত অর্থবর্ষের শুরু থেকে চলতি অর্থবর্ষের মাঝামাঝি, ছ’দফায় ধাপে ধাপে বৃদ্ধির হার নেমে আসার জন্য আজ পি চিদম্বরম দায়ী করেছেন, সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নিয়ন্ত্রণ, নোট বাতিল থেকে ত্রুটিপূর্ণ জিএসটি, আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে বাণিজ্যে রক্ষণশীল নীতি এবং কর সন্ত্রাস, অতিরিক্ত রক্ষণশীলতাকে।

চিদম্বরমের তোপ- রোগ নির্ণয় ভুল হলে প্রেসক্রিপশনও কাজে আসবে না। বরং প্রাণঘাতী হতে পারে।

চিদম্বরমের তোপ- রোগ নির্ণয় ভুল হলে প্রেসক্রিপশনও কাজে আসবে না। বরং প্রাণঘাতী হতে পারে।

নয়াদিল্লি
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৪:৫৫
Share: Save:

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর অস্ত্র, আর্থিক বৃদ্ধির পরিসংখ্যান। বর্তমান অর্থমন্ত্রীর হাতিয়ার, লোকসভার ভোটের ফল।

৮, ৭, ৬.৬, ৫.৮, ৫ এবং ৪.৫-র বৃদ্ধির হার বনাম উনিশের লোকসভা ভোটে বিজেপির ৩০৩ আসনে জয়।

তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আমদানি শুল্ক বাড়িয়ে রক্ষণশীল নীতি নেওয়া, জিডিপি-কে অপ্রাসঙ্গিক বলা যদি বিজেপির সংস্কারের ভাবনা হয়, তা হলে ভগবান এ দেশকে রক্ষা করুন।’’ তাঁর মতে, আর্থিক বৃদ্ধির হারের সংখ্যাগুলি থেকেই অর্থনীতির ছবি সব থেকে ভাল বোঝা যায়। বিজেপি সরকারকে তাঁর প্রশ্ন, এর মধ্যে ‘অচ্ছে দিন’ কোথায়?

সরকারের আর্থিক নীতি নিয়ে এ হেন প্রশ্নের মুখে বর্তমান অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন ২০১৯ সালের ভোটের ফলকে হাতিয়ার করেছেন। রাজ্যসভায় কর আইনে সংশোধন নিয়ে আলোচনায় নির্মলা বলেন, ‘‘মানুষ আস্থা রেখেছেন। আমাদের দল যে ভাবে অর্থনীতি পরিচালনা করেছে, তাতে মানুষ আস্থা রেখেছেন। সেই আস্থাই দলকে বিপুল ভোটে জিতিয়ে ক্ষমতায় এনেছে। আমি মানুষের এই ভোটকে মাথা ঝুঁকিয়ে প্রণাম করি।’’

জুলাই-সেপ্টেম্বরে বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে নেমেছে। আজ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক পূর্বাভাস করেছে, চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধি ৫ শতাংশেই আটকে থাকবে। অথচ এই রিজার্ভ ব্যাঙ্কই বছরের গোড়ায় পূর্বাভাস করেছিল, তা ছোঁবে ৭.৪%। আজ চিদম্বরম বলেন, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ফেব্রুয়ারিতে বলেছিল, বৃদ্ধির হার ৭.৪ শতাংশ হবে। তার পর এপ্রিলে কমিয়ে করল ৭.২%। এক মাসে আগে আরও কমিয়ে করল ৬.১%। আজ তা আবার কমিয়ে করেছে ৫%। সাত মাসে এতখানি। আগে হয়েছে এমন হয়েছে বলে মনে পড়ছে না।’’ তাঁর দাবি, হয় আরবিআই ফেব্রুয়ারির পূর্বাভাসের সময় অযোগ্যতা দেখিয়েছিল, না হলে কেন্দ্র অযোগ্যতার সঙ্গে অর্থনীতি পরিচালনা করেছে।

অর্থনীতির ঝিমুনির জন্য চিদম্বরম আজ দায়ী করেন বাজারে চাহিদা কমে যাওয়াকে। কিন্তু আজ নির্মলার পাল্টা যুক্তি, ‘‘ব্যক্তিগত কেনাকাটার পরিমাণ দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারে জিডিপি-র ৫৬.২% ছিল। মোদী সরকারের প্রথম পাঁচ বছরে বেড়ে ৫৯% হয়েছে। চলতি অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে ৫৮.৫%। এখনও ইউপিএ আমলের চেয়ে বেশি।’’

কিন্তু চিদম্বরমের যুক্তি, চাহিদা নেই। কারণ ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা, ভয় তৈরি হয়েছে। কেউ খরচ করছেন না। চাহিদা না থাকলে কারখানার উৎপাদন বাড়বে না। লগ্নিও আসবে না। শিল্পপতি রাহুল বজাজের উদাহরণ তুলে তিনি বলেন, ‘‘কোনও ব্যবসায়ী মুখ খুললেও বলেন, নাম লিখবেন না। এই ভয়ের কথা রাহুল বলেছেন। সর্বত্র ভয়। প্রতিটি প্রতিষ্ঠান আতঙ্কিত।’’ চিদম্বরমের হুঁশিয়ারি, বিপুল রাজকোষ ঘাটতি হবে। কেন্দ্রকে ফের রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঘরে ডাকাতি করতে হবে। না হলে সরকারি সংস্থা বেচতে হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

P Chidambaram Acche Din Narendra Modi BJP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy