রাজ্য সরকার কলকাতার বিকল্প হিসেবে অন্ডাল বিমানবন্দরকে তুলে ধরেছে আগেই। ছবি: সংগৃহীত।
দেশের অন্য বড় শহরে ইতিমধ্যেই দ্বিতীয় বিমানবন্দর তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। ব্যতিক্রম পশ্চিমবঙ্গ। কারণ, রাজ্যে দ্বিতীয় বিমানবন্দরের জন্য এখনও জমি খুঁজে পাওয়া যায়নি। চার বছর ধরে চলছে টানাপড়েন।
বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের দাবি, যে হারে উড়ান ও যাত্রী সংখ্যা বাড়ছে, তাতে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কলকাতা বিমানবন্দরের ধারণক্ষমতা শেষ হবে। ফলে, বর্তমান বিমানবন্দরের আশপাশে দ্বিতীয় বিমানবন্দর তৈরি করতে হবে। কলকাতা বিমানবন্দরের পূর্ব, পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমে, ৪০-৫০ কিলোমিটারের ভিতরে জমি চান তাঁরা। শহরের অনতিদূরে দিল্লি ও মুম্বই রোডের পাশেও দ্বিতীয় বিমানবন্দর করা যায় বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার কলকাতার বিকল্প হিসেবে অন্ডাল বিমানবন্দরকে তুলে ধরেছে আগেই। আর বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ৫০০ একর জমিতে তৈরি বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হতে পারে না। বিমান মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ— সর্বত্র বিকল্প বিমানবন্দর তৈরি হচ্ছে এবং সেগুলি এখনকার বিমানবন্দর থেকে বড়জোর ৫০ কিলোমিটার দূরে।
কিন্তু কলকাতা থেকে অন্ডালের দূরত্ব ১৮৭ কিলোমিটার। বর্তমান বিমানবন্দরে নামার পরে দ্বিতীয় বিমানবন্দর থেকে পরবর্তী উড়ান ধরতেই হতে পারে যাত্রীদের। সে ক্ষেত্রে অনেক দূরে দ্বিতীয় বিমানবন্দর হলে উড়ান ‘মিস’ করে যেতে পারেন যাত্রী। সমস্যায় পড়বে উড়ান সংস্থাগুলিও।’’ তবে রাজ্য সরকারকে অনড় দেখে, বিমান মন্ত্রক সম্প্রতি চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, সরকার অন্ডাল নিয়ে অনড় থাকলে ওই বিমানবন্দরের পরিসরেই ৪০০০ একর জমি দেওয়া হোক। কারণ, যে ৫০০ একর জমি ওখানে রয়েছে, তাতে পরিকল্পনা মাফিক বিমানবন্দর তৈরি সম্ভব হবে না।
রাজ্যের বক্তব্য
• শহরের আশপাশে চাষযোগ্য ৪০০০ একর জমি নিলে ক্ষতি হবে চাষির।
• এক লপ্তে এতটা জমি পাওয়াও মুশকিল। অন্ডালে চালু বিমানবন্দর রয়েছে।
• তার পরিকাঠামো ব্যবহার করে দ্বিতীয় বিমানবন্দর তৈরি হোক।
কেন্দ্রের বক্তব্য
• ১৮৭ কিলোমিটার দূরে মাত্র ৫০০ একর জমির উপরে দ্বিতীয় বিমানবন্দর করা সম্ভব নয়।
• কলকাতার রানওয়ে উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত, তাই ওই দুই দিকে
১০ কিলোমিটারের ভিতরে
দ্বিতীয় বিমানবন্দর করা সম্ভব
নয়।
• বর্তমান বিমানবন্দরের পূর্ব, পশ্চিম, দক্ষিণ-পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিমে, দিল্লি ও বম্বে রোডের দু’পাশে কোথাও এক লপ্তে ৪০০০ একর জমির প্রয়োজন।
মঙ্গলবার দিল্লি থেকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান অনুজ আগরওয়াল বলেন, ‘‘যা করতে হবে, দু’পক্ষকে সহমত হয়ে করতে হবে। যদি সত্যিই আর কোনও জমি না পাওয়া যায় আর অন্ডালে যদি ৪০০০ একর জমি পাওয়া যায়, তা হলে আমাদেরও ভাবতে হবে।’’
কিন্তু নবান্ন সূত্রে খবর, অন্ডালে এক লপ্তে ৪০০০ একর জমি নেই। প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘অন্ডালের যে জমি রয়েছে, সেখানেই যাতে দ্বিতীয় বিমানবন্দর গড়ে তোলা যায়, সে জন্য নতুন করে তদ্বির করা হচ্ছে।’’ রাজ্য সরকারের তরফে বক্তব্য, ৪০০০ একর জমি অধিগ্রহণ করা সম্ভব নয়। সিঙ্গুরে চাষের জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়ে রাজ্যপাট খোওয়াতে হয়েছে বাম সরকারকে। তা ছাড়া অন্ডালে তৈরি বিমানবন্দর রয়েছে। তা কেন ব্যবহার করবে না কেন্দ্রীয় সরকার?
এ ক্ষেত্রে রাজ্যের যুক্তি, দুর্গাপুর ও কলকাতার মধ্যে হাইস্পিড রেল করিডর গড়লে অন্ডালকে দ্বিতীয় বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। তা হলে দক্ষিণবঙ্গের নগরায়ণে উন্নতি হবে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, হাইস্পিড রেল করিডর নীতি আয়োগের পরামর্শ নিয়ে করতে হবে। অন্ডাল যে হেতু বেসরকারি বিমানবন্দর, তাই সেই বিমানবন্দরের সুবিধার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার হাইস্পিড ট্রেন চালাবে কি না, সে সিদ্ধান্ত নীতি আয়োগই নেবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy