২০২৫-’২৬ আর্থিক বছরে নিরাপত্তা লেনদেন কর (সিকিউরিটিজ় ট্রানজ়াকশান ট্যাক্স বা এসটিটি) বাবদ আদায় হবে ৭৮ হাজার কোটি টাকা। ১ ফেব্রুয়ারি সংসদে পেশ করা বাজেটে এমনটাই ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। গত অর্থবর্ষে (পড়ুন ২০২৩-’২৪) এই কর বাবদ সরকারের কোষাগারে জমা হয় ৩৩ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরে (পড়ুন ২০২৪-’২৫) এসটিটি আদায়ের পরিমাণ প্রায় ৬৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ৩১ মার্চের মধ্যে সংশ্লিষ্ট কর আদায়ের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়াতে পারে ৫৫ হাজার কোটি টাকা। সে ক্ষেত্রে এসটিটির থেকে সম্ভাব্য আয়ের পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে ২৩ শতাংশ। অর্থাৎ, এই কর বাবদ অতিরিক্ত ২৩ হাজার কোটি টাকা হাতে পাবে কেন্দ্র।
এসটিটির অঙ্ক পুরোপুরি শেয়ার বাজারের উপর নির্ভরশীল। স্টকের সূচক ঊর্ধ্বমুখী হলে এই কর বাবদ সরকারের ঘরে জমা হয় বেশি টাকা। আর একই ভাবে সেনসেক্স ও নিফটি নীচে নামলে, আদায় হয় কম কর। বাজেটে নতুন কাঠামোতে ব্যক্তিগত আয়করের ক্ষেত্রে ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড়ের কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা। এতে আমজনতার হাতে থাকবে বেশি টাকা। তার কিছু অংশ শেয়ারে লগ্নি হলেই ফের চাঙ্গা হবে বাজার। ফলে আগামী আর্থিক বছরের (২০২৫-’২৬) এসটিটির লক্ষ্যমাত্রা সহজেই পূরণ করা হবে বলে মনে করছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা।
শেয়ার বাজারে করযোগ্য সিকিউরিটিজ় লেনদেনের উপর ভিত্তি করে নিরাপত্তা লেনদেন কর নিয়ে থাকে সরকার। প্রতিটা সিকিউরিটিজ় বিক্রির উপর লগ্নিকারীদের দিতে হয় এই প্রত্যক্ষ কর। এসটিটি আদায়ের গুরুদায়িত্ব রয়েছে শেয়ার বাজার, মিউচুয়াল ফান্ড, বিমা সংস্থা এবং বড় মার্চেন্ট ব্যাঙ্কারদের উপর।
আগে শেয়ার বাজারের সিকিউরিটিজ় লেনদেনের ক্ষেত্রে দিতে হত স্ট্যাম্প শুল্ক। কিন্তু, বার বার জালিয়াতির অভিযোগ ওঠায় এটিকে বাদ দিয়ে গত বছরের ১ অক্টোবর থেকে নতুন এই কর ব্যবস্থা চালু করেছে কেন্দ্র।
আরও পড়ুন:
নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা লেনদেন কর নিয়ে থাকে সরকার। সেই তালিকায় রয়েছে, কোনও সংস্থার তালিকাভুক্ত ইক্যুইটি শেয়ার এবং ডেরিভেটিভ। এ ছাড়া ইক্যুইটি ভিত্তিক মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট ক্রয় বা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ভাবে দিতে হয় এই কর। ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং বা আইপিও এবং ইউনিট লিঙ্কড ইনশিয়োরেন্স প্ল্যান বা ইউএলআইপির ক্ষেত্রেও গ্রাহককে এসটিটি বাবদ দিতে হবে টাকা। এ বারের বাজেটে অবশ্য এসটিটির স্ল্যাবের কোনও পরিবর্তন করেননি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।