প্রায় দেড় মাস ধরে চলা মহাকুম্ভ উপলক্ষে নজিরবিহীন ব্যবসা হল। বিশেষজ্ঞ মহলের পূর্বাভাস ছিল, এর অঙ্ক হতে পারে ২ লক্ষ কোটি টাকা। বাস্তবে সেই অঙ্ক ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার সর্বভারতীয় ব্যবসায়ীদের সংগঠন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (সিএআইটি)-এর সম্পাদক প্রবীণ খণ্ডেলওয়াল জানান, শুধু প্রয়াগরাজেই ব্যবসার অঙ্ক পেরোতে চলেছে ৩ লক্ষ কোটি টাকার গণ্ডি। এটা রেকর্ড।
সিএআইটি-র তথ্যে প্রকাশ, ছ’সপ্তাহ ধরে এই বিরাট জনসমাগমে স্থানীয় অর্থনীতি উপকৃত হয়েছে। পণ্য-পরিষেবা কিনতে প্রয়াগরাজে যত সংখ্যক মানুষ ভিড় করেছেন, তা বিশ্বের অন্য কোথাও দেখা যায়নি। ফলে অত্যাবশ্যক পণ্য কিংবা পরিষেবা তো বিকিয়েইছে। শুধু মহাকুম্ভ থিমের পেন, জামাকাপড়, খাতা, ঘর সাজানোর পণ্য, ক্যালেন্ডার, ব্যাগের মতো সামগ্রী বিক্রি হয়েছে কয়েকশো কোটি টাকার। প্রবীণ জানান, পূর্বাভাস ছিল ৪০ কোটি মানুষ আসবেন। ব্যবসা হতে পারে ২ লক্ষ কোটি টাকার। কিন্তু ইতিমধ্যেই ৫৫ কোটির বেশি মানুষ এসে গিয়েছেন আর ব্যবসার অঙ্ক প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা ছুঁয়েছে। তাঁর মতে, ২৬ ফেব্রুয়ারি মেলা শেষ হলে এই দুই সংখ্যা যথাক্রমে ৬০ কোটি এবং ৩ লক্ষ কোটি টাকা পেরিয়ে যাবে। যা উত্তরপ্রদেশের অর্থনীতিতেও বড় প্রভাব ফেলবে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, এর সুফল পাবে সংলগ্ন বিহার, উত্তরাখণ্ড ও দিল্লিও।
খণ্ডেলওয়াল জানান, সবচেয়ে বেশি ব্যবসা করেছে হোটেল, লজ, রেস্তোরাঁগুলি। এর পরে রেল, বিমান সংস্থা। পুজোর সামগ্রী, জামাকাপড়, দৈনন্দিন এবং ধর্মীয় পণ্য, টেলিকম, বিজ্ঞাপন, হস্তশিল্পজাত জিনিসও বিকিয়েছে বিপুল। কয়েক কোটি টাকার গাড়ি কেনাবেচা হয়েছে। সিএআইটি-র দাবি, মহাকুম্ভের ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে গোটা উত্তরপ্রদেশে। অযোধ্যা, বারাণসী, কাশী পেয়েছে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী। ফলে সেখানেও ব্যবসায়ীদের ঝুলি ভরেছে।
অর্থনীতিতে মহাকুম্ভের প্রভাব পুরো স্পষ্ট হবে অচিরেই। এ দিন উত্তরপ্রদেশ সরকার আসন্ন অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করার সময় জানিয়েছে, কুম্ভের জন্যেই রাজ্য জুড়ে সড়ক, সেতু, পানীয় জল-সহ পরিকাঠামো উন্নয়নে ৭৫০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৫০০ কোটি খরচ হয়েছে শুধু প্রয়াগরাজেই।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)