ফাইল চিত্র।
অতিমারির তৃতীয় ঢেউ মাথা নামানোর সঙ্গে সঙ্গে দেশে বিধিনিষেধ শিথিল হল বটে, অথচ সম্ভাবনার উল্টো পথে হেঁটে নতুন করে উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ল বেকারত্বের হার। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র সমীক্ষা অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে তা ছ’মাসের সর্বোচ্চ। উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিশেষত গ্রামাঞ্চলের কাজের বাজার। মূলত সেটাই ঠেলে বাড়িয়েছে গোটা দেশের বেকারত্বকে।
সমীক্ষকদের বক্তব্য, করোনা সংক্রান্ত বিধি শিথিল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অর্থনীতির চাকা যেমন গড়াতে শুরু করেছে, তেমনই নতুন আশায় ভর করে কাজের বাজারে পা রাখতেও চেষ্টা করছেন আগের তুলনায় অনেক বেশি মানুষ। আবার গ্রামে বড় ধাক্কা দিয়েছে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ কমানো। ফলে আরও এক দফা বিপাকে পড়েছেন নিজেদের গ্রামে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকেরা।
সিএমআইই-র পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, গত মাসে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৮.১০%। যা গত ছ’মাসে সবচেয়ে বেশি। আর সেই মাসেই গ্রাম এবং শহরে ওই হার ছিল যথাক্রমে ৮.৩৫% ও ৭.৫৫% (সারণিতে)। শহরাঞ্চলে গত কয়েক মাসের তুলনায় বেকারত্ব কিছুটা কমলেও গ্রামাঞ্চলে তা বেড়েছে লাফ দিয়ে। আবার তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শেষ হওয়া সপ্তাহের হিসাবে তা পৌঁছে গিয়েছে ৯.০৮ শতাংশে। ওই মাসেরই প্রথম সপ্তাহে তা ১১.১১% হয়েছিল।
সিএমআইই কর্তা মহেশ ব্যাস জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক সময়ে যে সমস্ত সমীক্ষা হয়েছে তাতে দেখা গিয়েছে কাজের বাজারে পা রাখতে চেয়ে ব্যর্থ হওয়াদের মধ্যে প্রায় ৭৭ শতাংশের বয়স ১৫-২৪ বছর। এঁদের মধ্যে বড় অংশ পড়ুয়া। বেকারদের মধ্যে ১৫% গৃহবধূ। অর্থাৎ, তৃতীয় ঢেউ পার করে অর্থনীতি থেকে বিধিনিষেধ যেমন উঠেছে, তেমনই জীবিকা খোঁজার চেষ্টা করছেন বহু মানুষ। কিন্তু এত সংখ্যায় কাজ অমিল। এঁদের একটা বড় অংশ হয়তো অতিমারির সময়ে সেই চেষ্টা করেননি। তবে শহরে সংগঠিত ক্ষেত্রে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সমীক্ষায়। কিন্তু গ্রামে অসংগঠিত ক্ষেত্র ও ছোট-মাঝারি শিল্প এখনও করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
আইআইটি পটনার অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র প্রামাণিক বলেন, ‘‘কেন্দ্র ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে বরাদ্দ কমিয়েছে। যার বিরূপ প্রভাব পড়েছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। বিপাকে পড়ছেন ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকেরা। ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি সেখানের ছোট-মাঝারি ব্যবসা। সেলুন, হোটেলের মতো যে সমস্ত ব্যবসায় খরিদ্দারদের সংস্পর্শে এসে কাজ করতে হয়, সব চেয়ে খারাপ অবস্থা তাদের।’’ আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্তও ১০০ দিনের কাজের বরাদ্দ কমাকে দায়ী করেছেন। সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘খুচরো মূল্যবৃদ্ধি মাথা তোলায় চাহিদা ও উৎপাদন কমেছে। ফলে কাজ হারাচ্ছেন দৈনিক ভিত্তিতে কাজ করা শ্রমিকেরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy