কয়েক হাজার পরিবারে পাইপে করে রান্নার গ্যাসের সংযোগ চালু হওয়ার সম্ভাবনা। প্রতীকী চিত্র।
আশা ছিল, নতুন বছরের গোড়াতেই ঘটবে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। কিন্তু নানা কারণে তা কিছুটা পিছিয়ে যায়। অবশেষে মে মাসেই কলকাতা এবং দুর্গাপুরের কাছে গোপালপুরে কয়েক হাজার পরিবারে পাইপে করে রান্নার গ্যাসের সংযোগ চালু হওয়ার সম্ভাবনা।
কলকাতা ও হাওড়ার একাংশে রান্নার জন্য পাইপের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের সূত্রপাত দেড়শো বছরেরও বেশি আগে। তৎকালীন ওরিয়েন্টাল গ্যাস কোম্পানির (পরে রাষ্ট্রায়ত্ত গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশন) হাত ধরে। কিন্তু জোগানের অভাবে পরে গতি হারায় সেই পরিষেবা। প্রায় দেড় দশক আগে রাজ্যে গেলের পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাসের জোগানের সম্ভাবনা নিয়ে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির সঙ্গে আলোচনা শুরু করে তৎকালীন বাম সরকার। পালাবদলের পরে প্রকল্পটি নিয়ে এগোয় তৃণমূল সরকারও।
গেলের পাইপলাইন পানাগড় পর্যন্ত এসেছে। সেটিতে উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগাচ্ছে সংস্থাটি। এ ছাড়াও কোল বেড মিথেন (সিবিএম) গ্যাস কলকাতায় জোগান দিচ্ছে তারা। গাড়ির জ্বালানি (সিএনজি) ও রান্নার জন্য পাইপের মাধ্যমে (পিএনজি) বাড়ি বাড়ি সরবরাহের জন্য বিভিন্ন এলাকায় আগে বরাত পেয়েছে আইওসি-আদানি গোষ্ঠীর জোট (আইওএজিপি), হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম (এইচপিসিএল) এবং বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি (বিজিসি)। তারা তাদের এলাকায় এখন কিছু সিএনজি স্টেশন চালু করেছে। এর পর পিএনজি-ও চালু করবে। পরবর্তী ধাপে রাজ্যের আরও কিছু জেলায় এইচপিসিএল-এর সঙ্গে সেই বরাত পেয়েছে ভারত পেট্রোলিয়াম এবং ইন্ডিয়ান অয়েল-ও।
বিজিসি জানুয়ারিতে কলকাতার একটি আবাসন কমপ্লেক্সে (আরবানা) পিএনজি সংযোগ চালু করবে বলে আশাবাদী ছিল। সংস্থা সূত্রের খবর, সেখানে তিনটি টাওয়ারের পাইপের পরিকাঠামো তৈরি। তার মধ্যে একটিতে মিটার বসানোর কাজও চলছে। চূড়ান্ত কয়েকটি ছাড়পত্র পেলে মে মাসেই তা চালু হয়ে যাবে। তবে গেলের পাইপলাইনের গ্যাস কলকাতায় পৌঁছতে এখনও বছরখানেক সময় লাগতে পারে। তাই আপাতত দুর্গাপুর থেকে বিশেষ ট্রাক বা কাসকেডে করে গেল যে কোল বেড মিথেন গেল বিজিসি-কে পাঠাচ্ছে, সেই পদ্ধতিতেই ওই আবাসনে প্রাকৃতিক গ্যাস আনবে সংস্থা। সেই গ্যাসই তার পরে সেখানকার ‘ডিকম্প্রেশন ইউনিট’-এর মাধ্যমে পাইপে বাড়িতে সংযোগ দেওয়া হবে।
আইওএজিপিএল সূত্রের খবর, গেলের মূল পাইপলাইনের গ্যাস এবং চূড়ান্ত ছাড়পত্র পেলেই দুর্গাপুরের কাছে গোপালপুরে হাজার দু’য়েক পরিবারে মে মাস থেকে পিএনজি সংযোগ শুরু হবে। তাদের পরের লক্ষ্য দুর্গাপুজোর সময়ে দুর্গাপুর শহরাঞ্চলে সেই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। পুজোর আগেই নিউটাউন ও হুগলির শ্রীরামপুরের দু’টি আবাসন কমপ্লেক্সে পিএনজি সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে আশাবাদী বেঙ্গল গ্যাসও। সেই কাজ চলছে। এইচপিসিএল আগে জানিয়েছিল, তারাও গেলের মূল পাইপলাইন থেকে গ্যাস পাওয়ার পরে পিএনজি সংযোগ শুরু করবে। সব কিছু ঠিকঠাক চললে আগামী নভেম্বর-ডিসেম্বরে পাণ্ডুয়ার প্রায় সাত হাজার বাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy