দু’দিন ধর্মঘটের ডাক দিল ব্যাঙ্ক অফিসারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশন (আইবক)। — প্রতীকী চিত্র।
ব্যাঙ্ক ইউনিয়নগুলির অভিযোগ, কেন্দ্রে মোদী সরকার আসার পরে ২০১৪ থেকে এ পর্যন্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলিতে সাধারণ কর্মীর সংখ্যা ১.১৪ লক্ষ কমেছে। যার প্রভাবে এক দিকে আশঙ্কাজনক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে গ্রাহক পরিষেবা। অন্য দিকে, তার ধাক্কায় অতিরিক্ত চাপের মুখে পড়ছেন ব্যাঙ্কের কর্মী-অফিসারেরা। এমনকি পরিষেবার বিপুল চাপ সামলাতে গিয়ে অনেকে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন। তাই প্রধানত কর্মী নিয়োগ এবং প্রতি সপ্তাহে পাঁচ দিন কাজের দাবি তুলে আগামী মাসের ২৪ এবং ২৫ তারিখে দেশ জুড়ে টানা দু’দিন ধর্মঘটের ডাক দিল ব্যাঙ্ক অফিসারদের সংগঠন অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশন (আইবক)।
ব্যাঙ্কে সাধারণ কর্মীদের সংগঠন এআইবিইএ-র সভাপতি রাজেন নাগর, আইবক-এর রাজ্য সম্পাদক শুভজ্যোতি চট্টোপাধ্যায় এবং অল ইন্ডিয়া ন্যাশনালাইজ়ড ব্যাঙ্ক অফিসার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় দাসের অভিযোগ, কাজ করার মতো মাথা আগের থেকে অনেক কমে গিয়েছে। অথচ গত কয়েক বছরে কর্মীদের ঘাড়ে নতুন নানা ধরনের দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই তালিকায় সাধারণ গ্রাহকদের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ব্যাঙ্কিং কাজকর্ম তো রয়েছেই। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে একের পর এক সরকারি প্রকল্পের বিপুল কর্মকাণ্ড।
শুভজ্যোতি বলেন, ‘‘ব্যাঙ্কের কাজের সঙ্গে সরাসরি সাধারণ মানুষের স্বার্থ জড়িয়ে। তাতে দক্ষতা লাগে। অথচ অফিসার এবং কর্মীদের বহু পদ খালি হয়ে পড়ে আছে। দক্ষ ভাবে সব কাজ চলবে কী করে? পাশাপাশি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সংগঠন ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কস অ্যাসোসিয়েশনের (আইবিএ) সঙ্গে ইউনিয়নগুলির চুক্তি হওয়া সত্ত্বেও পাঁচ দিনের সপ্তাহ চালু করা হচ্ছে না। এর জন্য আইবিএ কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে তাদের সুপারিশ অনেক দিন আগে পাঠিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র তা কার্যকর করছে না। এগুলি-সহ একাধিক দাবি পূরণ হচ্ছে না বলেই ফেব্রুয়ারিতে টানা দু’দিন ব্যাঙ্ক ধর্মঘট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা।’’
গত ১০ বছরে ব্যাঙ্কে বহু কর্মী অবসর নিয়েছেন। অনেকে চাকরি ছেড়েও দিয়েছেন। কিন্তু কর্মী নিয়োগ হয়েছে সামান্যই, দাবি রাজেনের। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এর ফলে নিট হিসাবে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক শিল্পে এখন অফিসার নন এমন সাধারণ কর্মীদের ১.১৪ লক্ষ পদ খালি পড়ে রয়েছে। যাঁরা কাজ করছেন, তাঁদের উপর চাপ কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। গ্রাহক পরিষেবা ধাক্কা খাচ্ছে। অনেকের সঙ্গেই ব্যাঙ্ক কর্মীদের ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হচ্ছে। পরিষেবা ঠিক মতো না পেয়ে অনেক ক্ষেত্রে তাঁদের একাংশ কর্মীদের উপর চড়াও হচ্ছেন। এই পরিস্থিতি চলতে পারে না। আমরাও কর্মী নিয়োগ, বাইরের লোক দিয়ে কাজ চালানোর বিরোধিতা, পাঁচ দিনের সপ্তাহ চালু ইত্যাদি দাবিতে আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ তিনি জানান, আগামী ১৫ জানুয়ারি সংগঠনের কর্মকর্তাদের বৈঠক কলকাতায় হবে। সেখানেই আন্দোলনের রূপরেখা তৈরি করা হবে। আইবকের ডাকা ধর্মঘটকে সমর্থন করছেন তাঁরা।
সঞ্জয়ের আক্ষেপ, ‘‘বহু কর্মী অতিরিক্ত চাপ সামলাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিশেষত ব্যাঙ্কের কাজে যেহেতু লক্ষ্য পূরণ করতে হয়। অনেকেই মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ছেন। এটা ঠিক হচ্ছে না। তার উপর নতুনদের দক্ষতা বাড়ানোর সময়ও মিলছে না। যেটা খুব জরুরি। ব্যাঙ্ক কর্মীদের ধর্মঘটের ফলে গ্রাহকদের কিছু অসুবিধা হতে পারে। কিন্তু আশা করব গ্রাহকেরা বুঝবেন, তাঁদের স্বার্থ রক্ষাও ধর্মঘটের অন্যতম উদ্দেশ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy