Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
haldia petrochemicals

এইচপিএল নিয়ে নির্দেশকেও চ্যালেঞ্জ রাজ্যের

ইচপিএলের দাবিকেই মান্যতা দিয়ে ট্রাইব্যুনাল রাজ্যকে সেই অর্থ মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট নিয়মে বকেয়া টাকায় সুদ ও মামলার খরচ বাবদ অর্থও পাবে এইচপিএল।

হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস।

হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস। ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:২৩
Share: Save:

সিঙ্গুরের গাড়ি কারখানায় মূলধনী লগ্নির জন্য রাজ্যের বিরুদ্ধে টাটা গোষ্ঠীর ক্ষতিপূরণের দাবিকে মান্যতা দিয়েছে বিশেষ সালিশি আদালত (আরবিট্রাল ট্রাইব্যুনাল)। টাটাদের ৭৬৫.৭৮ কোটি টাকা মেটাতে বলেছে রাজ্যকে, সঙ্গে সুদ এবং মামলার খরচও। একই ভাবে পশ্চিমবঙ্গে শিল্পায়নের অন্যতম মুখ হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস-কে (এইচপিএল) ‘প্রতিশ্রুতি’ মতো আর্থিক সুবিধা না দেওয়ার অভিযোগেও আর এক সালিশি আদালতে সম্প্রতি ধাক্কা খেয়েছে রাজ্য। এইচপিএলের দাবিকেই মান্যতা দিয়ে ট্রাইব্যুনাল রাজ্যকে সেই অর্থ মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছে। সেই সঙ্গে নির্দিষ্ট নিয়মে বকেয়া টাকায় সুদ ও মামলার খরচ বাবদ অর্থও পাবে এইচপিএল। প্রাথমিক হিসাবে সব মিলিয়ে যা ৩০০০ কোটি টাকার বেশি। তবে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, টাটাদের মতো এ ক্ষেত্রেও সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানাবে রাজ্য।

সিঙ্গুরে টাটা গোষ্ঠীর গাড়ি প্রকল্প বাম আমলে রাজ্যের শিল্পায়ন পরিকল্পনার অন্যতম লগ্নি প্রস্তাব ছিল। কিন্তু সেটিকে ঘিরে বিতর্কের জেরে কারখানা প্রায় তৈরি করে ফেলেও প্রকল্পটিকে শেষ পর্যন্ত গুজরাতের সানন্দে সরিয়ে নেয় টাটারা।

তারও আগে রাজ্যে শিল্পায়নের অন্যতম মুখ ছিল অনাবাসী ভারতীয় পূর্ণেন্দু চট্টোপাধ্যায়ের চ্যাটার্জি গোষ্ঠী (টিসিজি) ও রাজ্য সরকারের যৌথ প্রকল্প— এইচপিএল। সেটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দীর্ঘ বিতর্কের পরে প্রায় এক দশক আগে সংস্থাটি রাশ হাতে নেয় টিসিজি। তখন সংস্থায় টিসিজি-র সরকারের শেয়ার ক্রয়ের চুক্তির অন্যতম শর্ত ছিল, রুগ্ণ এইচপিএল- এর পুনরুজ্জীবনে পর্যায়ক্রমে মোট ৩২৮৫.৪৭ কোটি টাকা আর্থিক সুবিধা দেওয়া কিংবা ১৯ বছর ধরে আর্থিক সহায়তা, যেটা আগে হবে সেটাই দেবে রাজ্য।

সেই সময় চালু যুক্তমূল্য করের (ভ্যাট) নিরিখে ওই আর্থিক সুবিধা হিসাব করত সংস্থাটি। ২০১৭-র ৩০ জুন পর্যন্ত সাহায্যের অঙ্ক দাঁড়ায় ৩১৭.১৩ কোটি টাকা। কিন্তু অভিযোগ, ওই বছরের ১ জুলাই জিএসটি চালুর পর থেকে তাদের আর কোনও টাকা দেয়নি রাজ্য। যদিও টিসিজির অধীন এইচপিএলের প্রোমোটার সংস্থা এসেক্সের দাবি ছিল, নতুন কর ব্যবস্থার সঙ্গে ওই সুবিধার শর্তের যোগ নেই। চুক্তি অনুসারেই তা তাদের প্রাপ্য।

সালিশি আদালতে সুপ্রিম কোর্টের তিন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বেঞ্চ (যার মধ্যে দু’জনই দেশের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি) গত সেপ্টেম্বরে এসেক্সের দাবিকেই মান্যতা দিয়েছে। যার নির্যাস হল, বাকি প্রাপ্য ২৯৬৮.৩৩ কোটি টাকা রাজ্য সরকার দেবে এইচপিএল-কে। সেই সঙ্গে ২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে (যখন থেকে আর্থিক সুবিধা বণ্টন বন্ধ করা হয়েছে) যত দিন সংস্থার তা প্রাপ্য, সেই বকেয়ার উপরে প্রতি তিন মাসে ৬% সুদও দিতে হবে। মামলার খরচ বাবদ রাজ্যের থেকে আরও ৬.৫৫ কোটি টাকা পাবে এসেক্স।

দু’টি মামলাতেই টাটা ও টিসিজির পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করে অভিজিৎ দেব পার্টনার্স। এবং রাজ্যের তরফে প্রতিনিধিত্ব করে জেএসএ অ্যাডভোকেট অ্যান্ড সলিসিটর্স। টাটা ও টিসিজির হয়ে সওয়াল করেন সুদীপ্ত সরকার। আর সরকারের তরফে টাটার মামলায় রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল এস এন মুখার্জি এবং টিসিজি-র মামলায় গৌরব ব্যানার্জি সওয়াল করেন।

তবে প্রশাসনিক সূত্রের খবর, আর্থিক সঙ্কটে জর্জরিত রাজ্য এইচপিএলের ক্ষেত্রেও নিয়ম মেনে ৯০ দিনের মধ্যে ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

haldia petrochemicals West Bengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy