ফাইল চিত্র।
চলতি মাসের প্রথমার্ধের মতো পুরো জুন মাস জুড়েও তেলের চাহিদার বিপুল বৃদ্ধির ছবি উঠে এল সংশ্লিষ্ট শিল্পের পরিসংখ্যানে। রবিবার যা জানাল, এই সময়ে গত বছরের চেয়ে পেট্রল বিক্রি বেড়েছে ২৯%। ডিজ়েল ৩৫.২%। শুধু তা-ই নয়, করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ে ২০২০ সালের জুন এবং অতিমারির আগে ২০১৯ সালের এই সময়ের বিক্রির নিরিখেও এ বার দুই জ্বালানির বিক্রি বৃদ্ধির হার অনেকটাই বেশি। তা সামান্য বেড়েছে মে মাসের চেয়েও।
তবে এই পরিসংখ্যানে এখনই স্বস্তি ফেরার কারণ আছে বলে মনে করছে না সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ। তাদের মতে, বিক্রি যতটা বেড়েছে সেটা মূলত দেশে কৃষি মরসুম শুরু হওয়ার কারণে। পরিসংখ্যান তুলে ধরে শিল্প মহল নিজেও সে কথা জানিয়েছে। পাশাপাশি, মে মাসে জ্বালানিতে উৎপাদন শুল্ক ছাঁটাই, করোনা কাটিয়ে আর্থিক কর্মকাণ্ড পুরোদস্তুর চালু হওয়া, মানুষ আবার বেড়াতে যাওয়া শুরু করায় এবং গত বছরের এই সময়ের কম ভিতের উপরে দাঁড়িয়েও বৃদ্ধি অনেকটা বেশি দেখাচ্ছে।
তা ছাড়া এ বছর তীব্র গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে দেশ জুড়েই। ফলে বহু অঞ্চলেই, বিশেষত গ্রামে জেনারেটরের প্রয়োজন হচ্ছে, যা চালাতে জ্বালানির প্রয়োজন হয়। সেটাও তেলের চাহিদা কিছুটা বাড়িয়েছে। এ প্রসঙ্গে রান্নার গ্যাসের বিক্রি সে ভাবে বৃদ্ধি না-পাওয়া এবং বিমান জ্বালানির চাহিদা এখনও করোনার আগের সময়ের চেয়ে কম থাকার তথ্যকেও তুলে ধরছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষত, জুনে কিলোলিটারে প্রায় দেড় লক্ষ টাকায় পৌঁছনো বিমান জ্বালানির দর যথেষ্ট চিন্তার বলেই মনে করা হচ্ছে। তার উপরে ফের বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। যে কারণে এই চাহিদা বৃদ্ধিতে এখনই অর্থনীতির সুদিন ফিরছে বলতে নারাজ তারা।
বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, গত বছর মে-জুন মাসে সারা দেশ জুড়ে চলছিল অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউ। সে সময়ে প্রায় স্তব্ধ ছিল জীবনযাত্রা। বিভিন্ন রাজ্য ছিল বিধিনিষেধের আওতায়। সেই নীচু ভিতের নিরিখে দেখলে এ বারের বৃদ্ধি অর্থনীতির গতি তুলে ধরে না। তার উপরে এ বছরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেল এবং ভারতে পেট্রল-ডিজ়েল মাত্রা ছাড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মে-র প্রথমে শুল্ক ছাঁটাইয়ের পরে যে পরিমাণ বিক্রি বৃদ্ধির আশা ছিল, ততটা হয়নি। আর তার তুলনায় দেখতে গেলে মে মাসের চেয়ে জুনে পেট্রলের বিক্রি বেড়েছে মাত্র ৩.১% এবং ডিজ়েলে সেই হার ১১.৫%। ফলে সে দিক থেকেও এখনই ততটা উচ্ছ্বসিত হওয়ার কারণ নেই বলেই ধারণা তাঁদের।
এ দিকে, আরও বেশ কিছু দেশের পথে হেঁটে গত শুক্রবারই তেল রফতানি এবং তেল উৎপাদকদের উপরে বাড়তি শুল্ক বসানোর কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, মে মাসে উৎপাদন শুল্ক কমানোর ফলে কেন্দ্রের যে ১ লক্ষ কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতির আশঙ্কা ছিল, তার বেশিরভাগটাই পুষিয়ে যাবে নতুন কর বসানোয়। হিসাব বলছে, যদি পরের বছর মার্চ পর্যন্ত তেল উৎপাদক সংস্থাগুলির পণ্যে কর থাকে, সে ক্ষেত্রে সরকারের ঘরে আসবে প্রায় ৫২,০০০ কোটি টাকা। আর রফতানির উপরে শুল্ক চাপায় আয় হবে আরও প্রায় ২০,০০০ কোটি। অর্থাৎ, মোট ৭২,০০০ কোটি টাকাই রাজস্ব বাবদ ফেরত আসবে সরকারের ঘরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy