প্রতীকী ছবি।
চলতি অর্থবর্ষে ৯.২% আর্থিক বৃদ্ধি হবে বলে মনে করছে কেন্দ্র এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু আগামী অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ৮-৮.৫ শতাংশে নামার পূর্বাভাস দিয়েছিল সরকারের আর্থিক সমীক্ষা। বৃহস্পতিবার ঋণনীতি ঘোষণায় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের অনুমান নামল তারও নীচে, ৭.৮ শতাংশে। কাঁটা সেই মূল্যবৃদ্ধিই। শীর্ষ ব্যাঙ্কের বার্তা, অতিমারির প্রভাব এবং বিশ্ব বাজারে পণ্যের চড়া দামের দিকে চোখ রেখেই জিডিপি বৃদ্ধির হার কম হওয়ার আশঙ্কা। কারণ কাঁচামাল আমদানির খরচ বাড়লে, দেশে উৎপাদন খরচও বাড়বে। দামি হবে পণ্য।
আর্থিক মহলের অনেকেরই আশঙ্কা ছিল, চড়তে থাকা মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে সুদ বাড়িয়ে বাজার থেকে বাড়তি নগদ শুষে নিতে পারে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু গত ন’টি ঋণনীতির মতো এ বারও তা বদলায়নি। এমনকি বিশ্ব জুড়ে মূলবৃদ্ধির দৈত্যের সঙ্গে লড়তে আমেরিকা-সহ বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক যখন সুদ বৃদ্ধি এবং ত্রাণ গোটানোর কথা বলেছে, তখন আরবিআই গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের বার্তা, তাঁরা এই নীতিতে বিশ্বাসই করেন না। বরং বিপরীত পথে হেঁটে তা কমানোর রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে আর্থিক বৃদ্ধির চাকায় গতি আনার লক্ষ্যে। যাতে ফের বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি হয়ে উঠতে পারে ভারত।
তবে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বাজেটে আগামী অর্থবর্ষে মূলধনী খরচ বাড়ানোর কথা বলেছে সরকার। এ জন্য বাজার থেকে ধার করতে হবে। অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বেসরকারি লগ্নি টানাও জরুরি। শিল্পের ঋণ নেওয়ার খরচ বাড়লে যা ধাক্কা খেতে পারে। তাই স্থির রইল সুদ। শক্তিকান্তেরও বার্তা, “রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক যে নীতি নিয়ে চলছে, তার থেকে সরে না-আসার সিদ্ধান্তই হয়েছে। তবে পরিস্থিতিতে নজর রেখে প্রয়োজন মতো পদক্ষেপ করতেও পিছপা হবে না।’’ আগামী অর্থবর্ষে বর্ষা ভাল হওয়ার অনুমান করে ৪.৫% মূল্যবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে আরবিআই। যদিও বিশ্ব বাজারে চড়তে থাকা অশোধিত তেলের দরে যে ঝুঁকি বহাল তা মেনেছেন শক্তিকান্ত। ডিসেম্বরে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৫.৫৯%, পাইকারি ১৩.৫৬%।
আরবিআইয়ের সুদ না-বাড়ানোর সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন টাটা ক্যাপিটালের এমডি-সিইও রাজীব সাভারওয়াল। তাকে সাহসী আখ্যা দিয়েছেন পটনা আইআইটির অর্থনীতির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিক। তবে সন্দিহান অনেকেই। ইউনাইটেড ব্যাঙ্কের প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেন বলেন, “অশোধিত তেল চড়া। পাঁচ রাজ্যে ভোটের পরে দেশে তেলের দাম আরও বাড়লে মূল্যবৃদ্ধি তো আরও মাথা তুলবে। ৪.৫% পূর্বাভাস নিশ্চয়ই স্বল্প মেয়াদের ভিত্তিতেই।’’ বন্ডের বাজারে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির লগ্নির ঊর্ধ্বসীমা ১ লক্ষ কোটি টাকা বাড়িয়ে ২.৫০ লক্ষ টাকা করেছে আরবিআই। দেকো সিকিউরিটিজ়ের ডিরেক্টর আশিস নন্দী বলেন, এতে চাঙ্গা হবে বন্ড বাজার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy