রতন টাটা ও সাইরাস মিস্ত্রি। —ফাইল চিত্র
বছরের শুরুতেই ফের নতুন মোড় নিল টাটা গোষ্ঠী ও সাইরাস মিস্ত্রির সংঘাত।
গত ১৮ ডিসেম্বর মিস্ত্রিকে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদে ফেরানোর নির্দেশ দিয়েছিল এনসিএলটির আপিল আদালত (এনএসিএলএটি)। বলেছিল, ওই পদে এন চন্দ্রশেখরনের নিয়োগ বেআইনি। সে দিনের সেই রায়ের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে গেল টাটা গোষ্ঠীর মূল সংস্থাটি।
আর্জিতে টাটাদের দাবি, সব নিয়ম মেনেই সাইরাসকে সরানো হয়েছিল। মিস্ত্রি বাদে পর্ষদের সব সদস্যই তাঁকে সরানোয় সায় দিয়েছিলেন। কিন্তু নিজেদের রায়ে কেন তাঁকে সরানো বেআইনি বলা হয়েছে, তার কোনও কারণ দেখায়নি এনসিএলএটি। টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদে মিস্ত্রির মেয়াদ ২০১৭ সালের মার্চে শেষ হয়ে গিয়েছে। তিনি ওই পদে ফিরতে চেয়ে আর্জিও জানাননি। অথচ তাঁকে পুনর্বহালের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চন্দ্রশেখরনের নিয়োগেও সমস্ত নিয়ম মানা হয়েছিল বলে টাটা গোষ্ঠীর দাবি।
সেই সঙ্গে আবেদনে টাটা সন্স বলেছে, আপিল আদালতের ওই রায় কর্পোরেট ইতিহাসের সঙ্গে খাপ খায় না। এতে কর্পোরেটের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। খর্ব হয়েছে ডিরেক্টরদের অধিকার। এই রায়ে শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে বিবাদ বাড়বে। যা চরম বিপর্যয়ের রাস্তা তৈরি করবে। অনেকের ধারণা, এই আর্জি দেশের কর্পোরেট ইতিহাসে বিবাদের নতুন অধ্যায় শুরু করতে পারে।
এ বার কাজিয়া...
• এনসিএলএটির রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে টাটা সন্স।
টাটাদের দাবি
• আপিল আদালতের রায়ে নষ্ট হয়েছে সংস্থার গণতান্ত্রিক
পরিবেশ ও খর্ব হয়েছে পর্ষদের ডিরেক্টরদের ‘অধিকার’।
• সাইরাস মিস্ত্রিকে চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয়েছিল নিয়ম মেনেই।
• কেন তাঁকে সরানো বেআইনি, রায়ে সেই কারণ বলেনি এনসিএলএটি।
• ওই পদে এন চন্দ্রশেখরনের নিয়োগ যথাযথ পদ্ধতি মেনেই।
• অভিযোগ, সাইরাস চেয়ারম্যান পদে ফেরার আর্জি না-জানালেও সেই রায় দিয়েছে এনসিএলএটি।
আরও কী
• এনসিএলএটির দেওয়া রায় খতিয়ে দেখতে সেখানে আর্জি জানিয়েছিল রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ়।
• সেই মামলায় শুক্রবার পর্যন্ত শুনানি স্থগিত।
• প্রাইভেট ও পাবলিক কোম্পানির সংজ্ঞা কী, তা জানাতে বলা হল কেন্দ্রকে।
এনসিএলএটি রায় দিয়েছিল
• টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদে ফেরানো হোক মিস্ত্রিকে।
• রতন টাটার সাইরাসকে আচমকা বিতাড়িত করার সিদ্ধান্ত বেআইনি।
• টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদে চন্দ্রশেখরনের নিয়োগও বেআইনি।
• খারিজ টাটা সন্সের প্রাইভেট কোম্পানিতে বদলের চেষ্টা।
• ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না মিস্ত্রির বিরুদ্ধে।
• উচ্চ আদালতে আর্জি জানাতে চার সপ্তাহ সময় টাটা গোষ্ঠীকে। টাটারা বলে, আইনি পথে যাবে তারা।
২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর সাইরাসকে আচমকাই চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানোর কথা ঘোষণা করেছিল টাটা সন্স। তার পর থেকে টানা এনসিএলটি এবং তাদের আপিল আদালতের দরজায় কড়া নেড়েছেন মিস্ত্রি। শেষ পর্যন্ত ডিসেম্বরের রায়ে মিলেছে কিছুটা স্বস্তি। শুধু তাঁকে মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদে ফেরানোই নয়, টাটা সন্সকে প্রাইভেট সংস্থায় পরিণত করার সিদ্ধান্তও খারিজ করেছে এনসিএলএটি। বলেছে, এ ক্ষেত্রে কর্পোরেট বিষয়ক মন্ত্রকের অধীনে থাকা রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ়ের (আরওসি) সাহায্য পেয়েছে টাটা গোষ্ঠী। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই আপত্তি তুলেছে আরওসি। আর্জি জানিয়েছে রায় ফিরে দেখার। আজ সেই মামলার শুনানিও শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত রেখেছে এনসিএলএটি। জানাতে বলেছে কোম্পানি আইনের অধীনে পাবলিক ও প্রাইভেট কোম্পানির সংজ্ঞা ঠিক কী। সেই সঙ্গে কত মূলধন থাকলে কোন সংস্থাকে কী বলা হবে, তা-ও জানাতে বলা হয়েছে।
অনেকের মতে, ৬ জানুয়ারি শীতকালীন ছুটির শেষে কাজে ফিরবে শীর্ষ আদালত। সে দিন দ্রুত এই মামলার শুনানি শুরুর আর্জি জানানো হতে পারে। তা শুরুর পরে বোঝা যাবে এই সংঘাতের জল কোন দিকে গড়ায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy