Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Oil Companies

স্থির দামেই ধাক্কা তেল সংস্থার, উঠছে প্রশ্ন

পরিসংখ্যান বলছে, টানা ছ’মাসে এত বেশি আর্থিক ক্ষতি এর আগে কখনও বইতে হয়নি দেশের তেল সংস্থাগুলিকে।

প্রায় সাত মাস ধরে দেশে তেলের দাম স্থির।

প্রায় সাত মাস ধরে দেশে তেলের দাম স্থির। প্রতীক ছবি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২২ ০৮:২৫
Share: Save:

আশঙ্কা মিলিয়েই চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসে বিপুল লোকসানের মুখে পড়ল রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি। এপ্রিল-সেপ্টেম্বরে ইন্ডিয়ান অয়েল (আইওসি), হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম (এইচপিসিএল) এবং ভারত পেট্রোলিয়ামের (বিপিসিএল) মোট লোকসান দাঁড়াল ২১,২০১.১৮ কোটি টাকা। শিল্প সূত্রের ইঙ্গিত, প্রায় সাত মাস ধরে দেশে তেলের দাম স্থির। এত লোকসান তারই ফল। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, তেলের দামকে কেন্দ্র বাজারের হাতে ছাড়ার পরেও বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দামের ওঠানামার সঙ্গে সব সময় তাল মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না। কখনও ভোটের জন্য প্রয়োজন পড়লেও দাম বাড়ে না। কখনও শুল্ক বাড়িয়ে রাজকোষ ভরানোয় উপায় থাকলেও তা কমতে পারে না। তাদের প্রশ্ন, এর সামগ্রিক ফলই কি ভুগছে সংস্থাগুলি?

পরিসংখ্যান বলছে, টানা ছ’মাসে এত বেশি আর্থিক ক্ষতি এর আগে কখনও বইতে হয়নি দেশের তেল সংস্থাগুলিকে। তারা শেয়ার বাজারকে জানিয়েছে, পেট্রল, ডিজ়েল ও রান্নার গ্যাস বিক্রির ‘মার্জিন’ (খরচের অনুপাতে আয়) কমাই এর কারণ। এপ্রিল-জুনে মোট লোকসান ছিল ১৮,৪৮০ কোটি টাকা। জুলাই-সেপ্টেম্বরে তা অনেক কম, ২৭৪৮.৬৬ কোটি। তবে সংস্থা সূত্রের দাবি, সেটা এই সময় সরকার এলপিজি-র ক্ষতি ভরতে তাদের এককালীন ২২,০০০ কোটি টাকা আর্থিক অনুদান দিয়েছিল বলে। না হলে লোকসান আরও অনেক বেশি হত। তাদের মতে, দীর্ঘ দিন পাম্পে তেলের দাম না বাড়ার ফলে পরিস্থিতি এতটাই ঘোরালো হয়েছে যে, অতখানি আর্থিক অনুদানও সার্বিক ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাতে পারেনি।

কিছু দিন আগে তেলের খাতে লোকসান ভরতে অর্থ মন্ত্রকের কাছ থেকে সাহায্য চাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ তেলমন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের হিসাব, ইদানীং বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম মাথা নামালেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে এপ্রিল-জুনে তা যথেষ্ট উঁচুতে ছিল। অথচ দেশে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম স্থির সাত মাস আগে থেকে। তাদের দাবি, কেন্দ্র খুচরো দামে তাদের হাত নেই বললেও বার বার নির্বাচনের সময় দাম থমকে থেকেছে। উত্তরপ্রদেশে ভোটের আগে ১৩৭ দিন তা স্থির ছিল। একই ঘটনা ঘটেছিল পশ্চিমবঙ্গ-সহ পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনের সময়েও। এখন অশোধিত তেলের দাম কমলেও (ব্রেন্ট ক্রুড ৯৭ ডলার, ডব্লিউটিআই ৯১ ডলার) মূল্যবৃদ্ধির আরও মাথা তোলার আশঙ্কায় তেলের দাম বাড়ানো যাচ্ছে না। তার উপরে সামনে গুজরাতের ভোট। একাংশ মনে করাচ্ছেন, ২০২০-তে বিশ্ব বাজারের দাম যখন তলানিতে ঠেকেছিল, তখন দেশে দাম না কমিয়ে শুল্ক বাড়ানো হয়।

বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, কেন্দ্র আরও শুল্ক কমিয়ে প্রয়োজনে তেলের মূল দাম বৃদ্ধির রাস্তা করে দিলে এবং নির্বাচনের সময়ে ‘তেলের রাজনীতি’ করা না হলে হয়তো লাভ-ক্ষতি সংস্থাগুলির নাগালের মধ্যে রাখা যেত। সে ক্ষেত্রে আগামী দিনে ফের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কাও কিছুটা কমত। বিশেষত পেট্রল-ডিজ়েলের দাম এখনও যেহেতু বেশ চড়া। রান্নার গ্যাস কলকাতায় হাজার টাকার উপরে।

অন্য বিষয়গুলি:

Oil Companies loss
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy