Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Anil Ambani

গয়না বেচে খরচ চলছে, ঋণ শোধের সামর্থ্য নেই, আদালতে দাবি অনিল অম্বানীর

২০০২ সালে চিনের তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক— ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক অব চায়না, চায়না ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক এবং এক্সিম ব্যাঙ্ক অব চায়নার কাছ থেকে ছ’হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছিল অনিল অম্বানীর সংস্থা রিলায়্যান্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:২৭
Share: Save:

জীবনে কখনও মাছ-মাংস ছুঁয়েও দেখেননি। নেই মদ্যপানের অভ্যাসও। কোনওরকমের বিলাসিতা নেই তাঁর জীবনে। বরং মা এবং ছেলের থেকেও টাকা ধার নিতে হয়েছে। পাঁচ হাজার কোটির ঋণখেলাপি মামলায় ব্রিটেনের আদালতে নিজের হয়ে সাফাই দিতে গিয়ে, এমনটাই দাবি করলেন শিল্পপতি অনিল অম্বানী। তিনি জানিয়েছেন, ঋণ শোধ না করে বিলাসিতায় জীবন কাটানোর অভিযোগ একেবারে মিথ্যে। অত্যান্ত সাদামাটা জীবনেযাপনে অভ্যস্ত তিনি।

২০০২ সালে চিনের তিনটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক— ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক অব চায়না, চায়না ডেভলপমেন্ট ব্যাঙ্ক এবং এক্সিম ব্যাঙ্ক অব চায়নার কাছ থেকে ছ’হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ নিয়েছিল অনিল অম্বানীর সংস্থা রিলায়্যান্স কমিউনিকেশনস লিমিটেড। অভিযোগ, ঋণ শোধ করে দেবেন বলে ব্যক্তিগত ভাবে গ্যারান্টি দিয়েছিলেন অনিল অম্বানী। শুরু দিকে কয়েক দফায় ঋণের কিস্তিও জমা দিয়েছিল তাঁর সংস্থা। কিন্তু আচমকাই তা বন্ধ হয়ে যায়।

সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে ওই তিনটি ব্যাঙ্কের কাছে ৭১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকার দেনা রয়েছে অনিল অম্বানীর সংস্থার, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় পাঁচ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। সেই সঙ্গে আইনি খরচ বাবদ ওই তিন ব্যাঙ্ককে সাত কোটি টাকাও দিতে হবে তাঁকে। গত ২২ মে ব্রিটেনের একটি আদালতের তরফে অনিল অম্বানীকে তা পরিশোধ করার নির্দেশ দেওয়া হলেও, এখনও পর্যন্ত এক আনাও তিনি জমা করেননি বলে অভিযোগ চিনা ব্যাঙ্কগুলির। তাই সুদে আসলে দেনা আরও খানিকটা বেড়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: মোরাটরিয়ামের চূড়ান্ত পরিকল্পনা দিতে কেন্দ্রকে ৭ দিন সময় দিল সুপ্রিম কোর্ট​

সেই নিয়ে শুক্রবার মুম্বই থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে ব্রিটেনের ওই আদালতে হাজিরা দিতে হয় অনিল অম্বানীকে। সেখানে চিনা ব্যাঙ্কগুলির হয়ে সওয়াল করেন কুইন্স কাউন্সেল বঙ্কিন ঠানকি। এক আনাও যাতে পরিশোধ করতে না হয়, তার জন্য দাঁতে দাঁত চেপে অনিল অম্বানী লড়াই করে চলেছেন বলে দাবি করেন তিনি। বিলাসবহুল জীবন যাপন সত্ত্বেও ঋণ পরিশোধ করছেন না কেন, তা নিয়ে বিচারপতির প্রশ্নের মুখেও পড়তে হয় অনিল অম্বানীকে।

তা নিয়ে সাফাই দিতে গিয়ে অনিল অম্বানী জানান, একেবারেই জৌলুসপূর্ণ জীবনযাপন করেন না তিনি। বরং নিয়মিত ম্যারাথনে দৌড়ন। শুধুমাত্র নিরামিষ খাবারই খান। মদ্যপানের অভ্যাস নেই একেবারেই। ধূমপানও করেন না। খেলেন না জুয়াও। তাই বিলাবহুল জীবনযাপনের পুরোটাই জল্পনা। একটি মাত্র গাড়ি রয়েছে তাঁর। তবে গাড়ি হাঁকিয়ে শহরের বাইরে বেড়াতে যাওয়ার চেয়ে ছেলেমেয়ের সঙ্গে বাড়িতে বসে টিভি দেখ তাঁর ঢের বেশি পছন্দের।

ওই তিনটি ব্যাঙ্ক থেকে রিলায়্যান্স কমিউনিশনসের জন্যই ঋণ নেওয়া হয়েছিল, তিনি নিজে গ্যারান্টর হিসেবে স্বাক্ষর করেননি বলেও দাবি করেন অনিল অম্বানী। কিন্তু তাঁদের সংগ্রহে থাকা শিল্পকীর্তি, বিলাসবহুল ইয়ট নিয়ে প্রশ্ন উঠলে অনিল জানান, ওই সমস্ত শিল্পকীর্তি তাঁর স্ত্রীর কেনা। ইয়টটি তাঁর পরিবারের সদস্যরা ব্যবহার করেন, তিনি নন। কারণ সমুদ্রে অসুস্থ বোধ করেন তিনি।

আরও পড়ুন: রাজ্যের মুখ্যসচিব হচ্ছেন আলাপন, বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানাল নবান্ন​

তাঁর ক্রেডিট কার্ড থেকে দামি দামি জিনিস কেনা নিয়ে আদালত প্রশ্ন তুললে অনিল অম্বানী জানান, ওই কার্ড থেকে তাঁর মা কেনাকাটা করেছেন। এমনকি মায়ের কাছ থেকে ৬ কোটি ৬০ লক্ষ ডলার ধার নিয়েছেন তিনি। ছেলের কাছ থেকে ধার নিয়েছেন ৪ কোটি ১০ লক্ষ ডলার। সংগ্রহে থাকা গয়না বেচে আইনি খরচ চালাচ্ছেন।

একসময় বিশ্বের ষষ্ঠতম ধনী শিল্পপতি ছিলেন অনিল অম্বানী। তাঁর রিলায়্যান্স কমিউনিকেশনস আগেই নিজেদের দেউলিয়া বলে ঘোষণা করেছে। বর্তমানে তাঁর সম্পত্তি শূন্যতে এসে ঠেকেছে বলে দাবি করেছেন অনিল অম্বানী নিজেও। কিন্তু চিনা ব্যাঙ্কগুলির অভিযোগ, পরিবারের লোকজনকে ব্যবহার করে নিজের আসল সম্পত্তির পরিমাণ লুকোচ্ছেন অনিল অম্বানী। বিদেশ বিভুঁইয়ে অনিল অম্বানীর সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করছে তারা। ভারতে অনিল অম্বানীর সম্পত্তির পরিমাণ জানার চেষ্টাও চলছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Anil Ambani Reliance Loan Defaulter China UK
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy