টাটাদের সঙ্গে মিস্ত্রি পরিবারের ৭০ বছরের সম্পর্কে দাঁড়ি পড়া প্রায় নিশ্চিত।
‘‘দুঃখজনক, কিন্তু একসঙ্গে থাকা সম্ভব নয়। এটাই আলাদা হওয়ার সময়।’’
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে শাপুরজি পালোনজি (এসপি) গোষ্ঠী টাটাদের প্রসঙ্গে এ কথা জানাতেই তাদের ৭০ বছরের সম্পর্কে দাঁড়ি পড়া প্রায় নিশ্চিত হল। এসপি গোষ্ঠীর প্রোমোটার সাইরাস মিস্ত্রির পরিবার। যে সাইরাস, পালোনজি মিস্ত্রির ছোট ছেলে ও যাঁকে চার বছর আগে আচমকাই তাদের চেয়ারম্যান পদ থেকে বিতাড়িত করে টাটারা। তার পরে টাটা-মিস্ত্রির তেতো লড়াইয়ে বারবার উত্তাল হয় দেশ। চার বছর পরে এ দিন সেই লড়াই থামার ইঙ্গিতও মিলল আচমকাই।
টাটা সন্সের ১৮.৩৭% অংশীদারি ছাড়তে ন্যায্য পাওনা নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরি বলে বার্তা দিয়েছে মিস্ত্রিরা। আর একসঙ্গে থাকার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে যে তাদেরও নেই, সেটা বুঝিয়ে শাপুরজিদের পুরো অংশীদারি কেনার প্রস্তাব এ দিনই দিয়েছে টাটারা। যার মূল্য প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা।
এক নজরে
সম্পর্ক
• টাটা গোষ্ঠীর হোল্ডিং সংস্থা টাটা সন্সের ১৮.৩৭% অংশীদারি শাপুরজি পালোনজি গোষ্ঠীর (এসপি গোষ্ঠী) হাতে। যার প্রোমোটার সাইরাস মিস্ত্রির পরিবার।
• তারাই ওই সংস্থার বৃহত্তম সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডার।
• টাটাদের সঙ্গে শাপুরজিদের সম্পর্ক প্রায় ৭০ বছরের।
তিক্ততা
• ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর সাইরাসকে টাটা সন্সের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হয়।
• তার পর থেকে শুরু হয় টাটা–মিস্ত্রির বাগ্যুদ্ধ ও আইনি লড়াই।
• টাটাদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু শেয়ারহোল্ডারদের দমিয়ে রাখার ও টাটা সন্সের পরিচালনায় অব্যবস্থার অভিযোগ করেছিল সাইরাসের পরিবার। আবেদন করেছিল মিস্ত্রিকে সরানোর বিরুদ্ধেও।
• সম্প্রতি নতুন মামলা শুরু হয় সপ্তাহ দুই-তিন আগে। টাটারা সুপ্রিম কোর্টে নালিশ জানায়, মিস্ত্রিদের হাতে থাকা টাটা সন্সের শেয়ার তাদের না-জানিয়েই বন্ধক রেখে টাকা তুলতে নামা হয়েছে।
• মিস্ত্রিদের দাবি, এ ভাবে বাধা দেওয়া অন্যায়।
দিনভর
• মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, ২৮ অক্টোবর (পরবর্তী শুনানি) পর্যন্ত এসপি গোষ্ঠী ও সাইরাস মিস্ত্রি এবং তাঁর লগ্নিকারী সংস্থা টাটা সন্সে নিজেদের কোনও শেয়ার বন্ধক রাখতে বা হস্তান্তর করতে পারবে না।
• যে শেয়ার ইতিমধ্যেই বন্ধক রাখা হয়েছে, সেগুলি নিয়ে কোনও পদক্ষেপও করতে পারবে না টাটা সন্স ও এসপি গোষ্ঠী।
• এসপি গোষ্ঠী জানায়, টাটা গোষ্ঠীর থেকে তাদের আলাদা হওয়া জরুরি। কারণ, দু’পক্ষের আইনি লড়াইয়ের জের পড়তে পারে বহু মানুষের জীবনে ও অর্থনীতিতে।
• টাটাদের প্রস্তাব, শাপুরজিদের হাতে থাকা পুরো ১৮.৩৭% শেয়ার কিনতে রাজি তারা।
তাদের না-জানিয়ে ওই শেয়ার বন্ধক রেখে টাকা তোলার অভিযোগেই সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল টাটা গোষ্ঠী। আদালত এ দিন নির্দেশ দেয়, ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত টাটা সন্সের শেয়ার বন্ধক রাখতে বা হস্তান্তর করতে পারবে না মিস্ত্রিরা। তার পরেই টাটারা প্রস্তাব দেয় তা কিনে নেওয়ার। পরে বিবৃতিতে এসপি গোষ্ঠী বলে, ‘‘তারা সুপ্রিম কোর্টের সামনেই বলেছে যে, এ বার টাটা গোষ্ঠীর থেকে আলাদা হওয়া জরুরি। কারণ দু’পক্ষের আইনি লড়াইয়ের বিপুল প্রভাব পড়তে পারে বহু মানুষের (শেয়ারহোল্ডার ও কর্মী) জীবনে ও অর্থনীতিতে।’’
আরও পড়ুন: মুকেশের নতুন অস্ত্র পোস্টপেড, স্মার্টফোন
কিছু আর্থিক সমস্যা মেটাতে ব্যক্তিগত সম্পদ হিসেবে টাটা সন্সের শেয়ার বন্ধক রেখে তহবিল তুলছিল মিস্ত্রি পরিবার। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ টাটারা মামলা করে। এ দিন শাপুরজিদের তোপ, ৬০ হাজার কর্মী ও ১ লক্ষ পরিযায়ী শ্রমিকের জীবন রক্ষার্থেই এই রাস্তা বেছেছে তারা। কিন্তু টাটা সন্স তাদের দমিয়ে রাখতে চাপ সৃষ্টি করেছে ও অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। মিস্ত্রিদের অভিযোগ, তহবিল সংগ্রহ এ ভাবে আটকানো টাটাদের প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাবেরই প্রকাশ। সব শেয়ারহোল্ডারদের অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে যে, দুই গোষ্ঠীর একসঙ্গে থাকা অসম্ভব। টাটা গোষ্ঠী অবশ্য এ দিন কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy