—প্রতীকী চিত্র।
দম নিতে পারেন। বিশেষ করে আপনি যদি সূচকের ওঠা-নামার উপর নির্ভর করে বাজারে পা দিয়ে থাকেন। কারণ, সূচক নির্ভর বিনিয়োগকারী হলে আপনি কিন্তু এই বাজারে হাঁফিয়ে যেতে পারেন। মাথায় রাখবেন সূচক আপনার বিনিয়োগকে পাত্তা দেয় না। কারণ বাজারে মোট বিনিয়োগের মাত্র ৭ শতাংশ সাধারণ বিনিয়োগকারীর। তাই বাজারের ওঠা-নামার উপর আপনার শেয়ার কেনার পথে দেওয়া ভোট সেই অর্থে কোনও প্রভাবই ফেলে না।
তা হলে আপনিও কেন সূচককে এত পাত্তা দেবেন? জানি আপনার প্রশ্ন, বাজারে সূচকের যে দৌড় চলছে তার সুবিধা কি আপনি নেবেন না? এই প্রশ্নটাই আসলে ভুল। আসল প্রশ্নটা হল, বাজারের সুবিধা নিতে কী করবেন? তবে আপনি যদি বাজারকে ফাটকার জায়গা মনে করেন তা হলে কিন্তু এই লেখা আপনার জন্য নয়।
ধরেই নিচ্ছি আপনি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে এসেছেন দীর্ঘকালীন লাভের জন্য। এবং আপনি ফাটকা খেলার দলে নেই। আপনি চান না আপনার সঞ্চয়ের লাভের গুড় ফাটকার পিঁপড়েতে খেয়ে যাক। তা হলে চোখ রাখুন আপনার দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচের উপর। আপনি কিন্তু বাজারের গতির নির্দেশ পাবেন আপনার নিজের খরচ থেকেই।
যেমন ধরুন সব্জির দাম। পকেটে ছ্যাঁকা দিচ্ছে? কেন এত দাম? বৃষ্টির খামখেয়ালিপনায় সব্জির ফলনে প্রভাব ফেলতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির আশঙ্কা এড়াতে এখনই দাম বাড়িয়ে রেখেছেন?
এর সঙ্গে আপনার নিজের জীবনে সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা মিলিয়ে নিন। বৃষ্টি কি যথেষ্ট হয়েছে? যদি না হয়ে থাকে তা হলে কিন্তু উপরের যুক্তি সত্যি হতে পারে।
এ বার না হয় গুগল করে দেখে নিন আসল অবস্থাটা কী। আসলে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা মানে প্রথমেই নজর রাখা অর্থনীতির উপর। কৃষিতে সমস্যা হলে তার প্রভাব পড়ে মূল্যসূচকের উপর। আর তার প্রভাব পড়বে সুদের হারের উপর। সুদের হার বাড়লে ব্যবসায় বিনিয়োগের খরচ বাড়বে। আর এই সব মিলিয়ে তার প্রভাব তো অর্থনীতিতে পড়বেই।
বিদেশি আর্থিক সংস্থার বিনিয়োগ দেশের শেয়ার বাজারে বাড়ল না কমল তা নিয়ে কিন্তু আপনার মাথা বেশি খারাপ না করাই ভাল। কারণ, আজ অন্য বাজারে সে রকম লাভ নেই বলে হয়তো ভারতের বাজারে নজর পড়েছে তাদের। কাল অন্য বাজার ভাল হলে তারা সেই দিকে দৌড়বে।
আপনি বরং চোখ ফেরান দেশের দিকে। বাজারের কানাঘুষো কিন্তু বলছে দেশের বৃদ্ধি বেশ ভাল কিন্তু সেই বৃদ্ধির ফল সবাই পাচ্ছে না। তা হলে কোথায় চোখ ফেরাবেন? বিনিয়োগকারী হিসাবে সূচক থেকে চোখ সরিয়ে আপনার নজর যাওয়া উচিত সরকারের নীতির দিকে। উদাহরণ নেওয়া যাক। সরকার বলছে পেট্রলের সঙ্গে ইথানল মেশানোর কথা। তা হলে ইথানলের বাজার বাড়তে পারে। যদি তা বাড়ে তা হলে তো ইথানল যাঁরা তৈরি করেন তাঁদেরও ব্যবসা বাড়বে। এর পর আপনাকে দেখতে হবে কোন কোন সংস্থা এটা তৈরি করে। নতুন বাজার। তাই খুব বেশি সংস্থা নাও থাকতে পারে। এখানেই আসছে সংস্থা বাছা এবং ঝুঁকির প্রশ্ন। কিন্তু এই বিচার তো আপনাকেই করতে হবে।
কিন্তু মূল কথাটা হল, সূচক যদি মাটিতে লুটিয়ে থাকত তাতেও কিন্তু এটা আপনার কাছে সুযোগই হয়ে থাকত। হ্যাঁ। এটা ঠিক যে, সূচক নীচে থাকলে হয়তো সংস্থার শেয়ারের দাম একটু কম হত। কিন্তু তাতে সংস্থার বৃদ্ধির সম্ভাবনায় কোনও হেরফের হত না। এবং দীর্ঘকালীন বিনিয়োগ থেকে লাভ ঘরে তোলাতেও খুব একটা হেরফের হত না। ব্যবসার মতো শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের মূল মন্ত্রও কিন্তু সেই একই— সুযোগ খোঁজা। আর তা কিন্তু সূচকে লুকিয়ে থাকে না। নোবেল পাওয়া অর্থনীতিবিদ এবং শেয়ারের সফল ব্যবসায়ী রিচার্ড থালারের কথা বিনিয়োগের বীজমন্ত্র করে তুলতে পারেন এই প্রসঙ্গে। তিনি বলেছেন, “শেয়ারে বিনিয়োগের পর খেলার পাতা ছাড়া আর কিছু দেখবেন না। আর যদি ফাটকা (তিনি লিখেছেন মজা) পছন্দ করেন তা হলে পোকারের বোর্ডকে বেছে নিন।’’ তাই সুযোগ খুঁজুন। এই বাজারেও তা পেতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy