Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
BSE SENSEX

সর্বোচ্চ বিন্দু থেকে ৬৩৫০ পয়েন্ট নীচে! কেন নেমেই চলেছে সেনসেক্স? আশার জায়গা কোথায়?

নাগাড়ে বিদেশি লগ্নি বেরিয়ে যাওয়ায় পড়তি বাজারে সাময়িক প্রাণ সঞ্চার করেছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়। মঙ্গল এবং বুধবার সেনসেক্স ওঠে মোট ১৫৯৫ পয়েন্ট। তবে সপ্তাহের শেষ দু’দিনে নেমেছে প্রায় ৯০০।

সপ্তাহের শেষ দু’দিনে সেনসেক্স নেমেছে প্রায় ৯০০।

সপ্তাহের শেষ দু’দিনে সেনসেক্স নেমেছে প্রায় ৯০০। —প্রতীকী চিত্র।

অমিতাভ গুহ সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:২৫
Share: Save:

দেশে-বিদেশে নানা ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের শেয়ার বাজার এখন বেশ চঞ্চল। কিছুটা দুর্বলও।

নাগাড়ে বিদেশি লগ্নি বেরিয়ে যাওয়ায় পড়তি বাজারে সাময়িক প্রাণ সঞ্চার করেছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়। মঙ্গল এবং বুধবার সেনসেক্স ওঠে মোট ১৫৯৫ পয়েন্ট। তবে সপ্তাহের শেষ দু’দিনে নেমেছে প্রায় ৯০০। দাঁড়িয়েছে ৭৯,৪৮৬ অঙ্কে। সর্বোচ্চ জায়গা ৮৫,৮৩৬ থেকে ৬৩৫০ (৭.৪০%) নীচে। আমেরিকায় ২৫ বেসিস সুদ পয়েন্ট ছাঁটাইও পতন রুখতে পারেনি।

ট্রাম্পের জয়ের পরে ভাবা হচ্ছিল, নির্বাচনী প্রচারের সময়ে তাঁর ঘোষিত নীতি ভারতের পক্ষে সহায়ক হতে পারে। যেমন— আমেরিকায় কর্পোরেট কর কমানো হলে তার সুবিধা পাবে ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা। চিনা পণ্যে তারা চড়া আমদানি শুল্ক বসালে লাভ হবে ভারতীয় রফতানি শিল্পের। ট্রাম্প জমানায় আমেরিকার অর্থনীতি চাঙ্গা হয়ে বিশ্ব অর্থনীতিকে উন্নতির জ্বালানি জোগাবে, এমন প্রত্যাশারও তাৎক্ষণিক প্রতিফলন ছিল মঙ্গল-বুধের উত্থান। কিন্তু পরের দু’দিনে ঘনীভূত হয় দুশ্চিন্তা। যা সূচককে ধাক্কা দেয়। কারণ— এক, শক্তিশালী হতে থাকা ডলার। যা টাকাকে তলানিতে ঠেলে দিয়ে দুর্বল করছে এবং অর্থনীতির ক্ষতি করছে। শুক্রবার এক ডলার হয়েছে নজিরবিহীন ৮৪.৩৭ টাকা। দুই, লাগাতার বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রি। শুক্রবার তার নিট অঙ্ক ছিল ৩৪০৪ কোটি টাকা। তিন, ট্রাম্প নীতি নিয়ে আশঙ্কা। যা মূলত ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের আমেরিকার ভিসা পাওয়া এবং বিভিন্ন পণ্যে আমদানি শুল্ক নিয়ে। ট্রাম্পের জয়ে প্রথমে উৎফুল্ল বাজার তাই আশঙ্কার জেরে পরে ঝিমিয়ে পড়ে।

বিদেশি লগ্নিকারীরা অবশ্য ভারতে বিভিন্ন সংস্থার তহবিল সংগ্রহের জন্য বাজারে প্রথম বার ছাড়া শেয়ার (আইপিও-তে নতুন ইসু) কিনেছে হাত খুলে। নতুন ইসুর সংখ্যা এবং টাকা তোলায় ইতিমধ্যেই রেকর্ড গড়েছে ২০২৪। এখনও পর্যন্ত মোট ৭১টি ইসু মারফত উঠেছে প্রায় ১.২০ লক্ষ কোটি টাকা। দেশের বৃহত্তম আইপিও-র নজির গড়ে হুন্ডাই মোটরস গত মাসে বাজার থেকে তুলেছে ২৭,৮৭০ কোটি। আইপিও-তে ঢেলে বিদেশি লগ্নি ইঙ্গিত দেয়, এ দেশের অর্থনীতিতে আস্থা বহাল তাদের। শেয়ারের চড়া দাম একাংশকে চিনমুখী করছে। তার উপরে চিনের সরকার শিল্পকে আর্থিক উৎসাহ দিয়ে চাঙ্গা করছে। তবে বিশ্বাস, ভারতে শেয়ার দর স্বাভাবিক জায়গায় নামলে তারা ফিরবে।

বাজার পড়া আর একটি বড় কারণ শ্লথ অর্থনীতি। উৎসব সত্ত্বেও বহু পণ্যের চাহিদা কমেছে। জুলাই-সেপ্টেম্বরে বেশ কিছু সংস্থার আর্থিক ফল তেমন ভাল হয়নি। গত সপ্তাহে প্রকাশিত ফলের মধ্যে টাটা মোটরসের নিট লাভ ১২% কমেছে, এলআইসি-র কমেছে ৪% আর এশিয়ান পেন্টসের ৪৪%। স্টেট ব্যাঙ্কের লাভ ২৮% বাড়লেও, তাতে অন্যান্য আয় ছিল ১৫,২৭০ কোটি টাকা। যা আগের বছরের তুলনায় ৪৪৮০ কোটি বেশি। টাটা স্টিল লাভ করেছে ৭৫৯ কোটি টাকা। গত বার ক্ষতি হয়েছিল।

মূল্যবৃদ্ধি এখনও মাথাব্যথা। বুধবার জানা যাবে তার অক্টোবরের হার। এর প্রভাবও পড়বে বাজারে।

(মতামত ব্যক্তিগত)

অন্য বিষয়গুলি:

Share Market Donald Trump america India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy