কলকাতায় গত বছর নতুন ১২,৩৩০টি আবাসনের কাজ শুরু হয়েছে। বিকিয়েছে ১২,৯০৯টি। প্রতীকী ছবি।
করোনা কাটিয়ে জমে থাকা চাহিদার হাত ধরে স্বস্তি ফিরছিল রাজ্যের আবাসন শিল্পে। কিন্তু গত বছরের হিসাব সামনে আসতেই স্পষ্ট হল, দেশের সব জায়গায় বিক্রিবাটা পুরোপুরি ছন্দে ফিরেছে বলা যাবে না। মঙ্গলবার উপদেষ্টা সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্কের পরিসংখ্যান জানিয়েছে, কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই-সহ দেশের আটটি বড় শহর ধরলে ২০২২ সালে সার্বিক ভাবে ফ্ল্যাট-বাড়ির বিক্রি ন’বছরের মধ্যে সব থেকে বেশি হয়েছে ঠিকই, কিন্তু চড়া সুদের জেরে কলকাতায় তা বৃদ্ধির বদলে সরাসরি কমে গিয়েছে ১০%।
রিপোর্টে বলা হয়েছে, কলকাতায় গত বছর নতুন ১২,৩৩০টি আবাসনের কাজ শুরু হয়েছে। বিকিয়েছে ১২,৯০৯টি। রাজ্য স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড় দেওয়ায় বিক্রিতে তার সুবিধা পেয়েছিল শিল্প। কিন্তু সুফল ধরে রাখতে পারেনি। বরং সাধারণ রোজগেরে মানুষের চিন্তা বাড়িয়েছে গৃহঋণে বাড়তে থাকা সুদ। যে কারণে আগ্রহ থাকলেও, অনেকে ফ্ল্যাট-বাড়ি কেনার পথে পা বাড়াননি। ফলে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে এখানে ধাক্কা খেয়েছে কম এবং মাঝারি দামেরবাড়ি বিক্রি।
অর্থনীতির ঝিমুনির পরে অতিমারির জেরে প্রকল্পের কাজ থমকানোয় ধাক্কা লেগেছিল আবাসন শিল্পে। লকডাউনে এবং তার পরে বাড়ি থেকে কাজের পরিসর বাড়ায় অনেক জায়গায় চাহিদা তৈরি হলেও, চিকিৎসা-সহ বিভিন্ন অত্যাবশ্যক খরচের চিন্তায় সঞ্চয়ের পথে বেশি করে হাঁটেন ক্রেতাদের একাংশ। ফলে রাশ পড়ে ফ্ল্যাট-বাড়ি বিক্রিতে।
চাহিদায় গতি আনতে মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গের মতো কিছু রাজ্য স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড় দেওয়ায় নেমেছিল ফ্ল্যাট-বাড়ি নথিভুক্তির (রেজিস্ট্রেশন) খরচ। তার সঙ্গে কম সুদের হার এবং অন্যান্য সুবিধা জমে থাকা চাহিদাকে বিক্রিতে বদলাতে সাহায্য করেছিল। যার হাত ধরে দেশের অধিকাংশ শহরেই বিক্রিতে গতি আসে।
আবাসন ব্যবসা নিয়ে নাইট ফ্র্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, এই পরিস্থিতিতে গত বছরে মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানার জন্য মে মাস থেকে মোট ২২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়িয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গৃহঋণে সুদও। তার উপরে চাহিদা এবং কাঁচামালের দামের জেরে কলকাতায় আবাসনের দাম বেড়েছে ৪%। এই সব কিছুর প্রভাবই পড়েছে বিক্রিতে। বিশেষত, দুর্গাপুজোর ঠিক আগে, বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিক্রি হয়েছে ৫৮১৯টি আবাসন। যা ২০২১ সালের একই সময়ের চেয়ে ৩৭% কম। শেষ তিন মাসে বিক্রি কিছুটা বাড়লেও, তা গোটা বছরের হিসাবে ব্যবসাকে টেনে তুলতে পারেনি। তবে এখনও ৫০ লক্ষ টাকার কম দামের বাড়ির চাহিদাই বেশি।
উপদেষ্টা সংস্থাটির পূর্ব-ভারতের সিনিয়র ডিরেক্টর অভিজিৎ দাসের মতে, ২০২১ সালের পুরোটা এবং গত বছরের অধিকাংশ সময় জুড়েই দেশে আবাসন বিক্রি ভাল হয়েছিল। তাতে শামিল হয়েছিল কলকাতাও। কিন্তু বাধ সেধেছে সুদের হার। যা এগোতে দেয়নি বিক্রিকে। তবে বাজারে চাহিদা এখনও রয়েছে। সে ক্ষেত্রে সুদ আর বেশি না-বাড়লে এই শহরেও বিক্রি মাথা তুলবে বলে আশা তাঁর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy