Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
RBI

ঋণ পুনর্গঠনের কাঠামো প্রকাশ, রয়েছে কড়া শর্ত

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, যে সমস্ত আবেদনকারীর ঋণ অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হয়নি এবং যাঁরা গত ১ মার্চের আগে ৩০ দিনের বেশি ধার বাকি রাখেননি, তাঁদের আর্জিই বিবেচিত হবে। 

ছবি: রয়টার্স।

ছবি: রয়টার্স।

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:৫৫
Share: Save:

করোনার জেরে যাঁরা ধার শোধে সমস্যায় পড়েছেন, একমাত্র তাঁরাই ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধা পাবেন বলে জানিয়ে দিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। সেই সঙ্গে সোমবার পুনর্গঠনের কাঠামো প্রকাশ করে বেঁধে দিল কড়া শর্তও।

লকডাউনে দীর্ঘ দিন আর্থিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকার জের পড়েছে সংস্থা ও মানুষের আয়ে। তাঁদের জন্য প্রথমে ছ’মাস ঋণের কিস্তিতে স্থগিতাদেশের (মোরাটোরিয়াম) সুবিধা দেওয়ার পরে ঋণ পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয় শীর্ষ ব্যাঙ্ক। তার কাঠামো তৈরির জন্য নিয়োগ করে কে ভি কামাথের নেতৃত্বাধীন কমিটিকে। গত শুক্রবারই তারা রিপোর্ট জমা দিয়েছে। মোটের উপরে তাদের সমস্ত সুপারিশই মেনে নিয়েছে আরবিআই।

রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, যে সমস্ত আবেদনকারীর ঋণ অনুৎপাদক সম্পদে পরিণত হয়নি এবং যাঁরা গত ১ মার্চের আগে ৩০ দিনের বেশি ধার বাকি রাখেননি, তাঁদের আর্জিই বিবেচিত হবে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্ত
ঋণ পুনর্গঠনের শর্ত

• একমাত্র করোনার কারণে তৈরি হওয়া আর্থিক সঙ্কটেই মিলবে পুনর্গঠনের সুবিধা।
• দেখতে হবে করোনার আগে ও ঋণ পুনর্গঠনের সময়ে ঋণগ্রহীতার আর্থিক অবস্থা কী রকম ছিল।
• গত ১ মার্চের হিসেবে সংস্থাগুলির ঋণ অ্যাকাউন্ট স্বাভাবিক (স্ট্যান্ডার্ড) থাকতে হবে। কোনও ঋণ ৩০ দিনের বেশি খেলাপ হওয়া চলবে না।
• মাথায় রাখতে হবে পাঁচটি বিশেষ আর্থিক অনুপাত। যেমন, বর্তমান সম্পদ ও আয়ের অনুপাত, মোট ধার ও করদানের আগে করের অনুপাত ইত্যাদি।
• সেই অনুপাতের ভিত্তিতে ২৬টি শিল্পে পুনর্গঠন প্রক্রিয়া তৈরি করতে হবে।
• শিল্পগুলির মধ্যে রয়েছে পর্যটন, হোটেল, গাড়ি, আবাসন, বিমান, খনন, উৎপাদন, গয়না ইত্যাদি।
• তার বাইরে থাকা শিল্পের জন্য ঋণদাতাদের পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
• ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি জানাতে হবে পুনর্গঠনের।
• সংস্থাগুলির ক্ষেত্রে দাবি জানানোর ১৮০ দিনের মধ্যে পুনর্গঠন সম্পূর্ণ করতে হবে। ব্যক্তির ক্ষেত্রে তা ৯০ দিন।
• একাধিক ঋণদাতার থেকে ধার নেওয়া হলে, পুনর্গঠন কী ভাবে হবে বেঁধে দেওয়া হয়েছে তার শর্ত।
• ঋণদাতারা চাইলে সর্বাধিক দু’বছরের জন্য মোরাটোরিয়াম বা কিস্তির সময় পাল্টানোর মতো নানা পদক্ষেপ করতে পারে।

ঋণদাতাদের দেখতে হবে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা ব্যক্তির আর্থিক স্বাস্থ্য। এ জন্য অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে পাঁচটি আর্থিক অনুপাত। তার ভিত্তিতেই ২৬টি শিল্পের ঋণ পুনর্গঠন পরিকল্পনা স্থির করতে হবে। যার অঙ্গ হিসেবে ধার শোধের সময় বাড়ানো, দু’বছর পর্যন্ত কিস্তি স্থগিতের মতো সুবিধা মিলবে।

কারা পাবে না

• সেই সব ছোট সংস্থা, গত ১ মার্চের হিসেবে যাদের মোট ঋণের অঙ্ক ২৫ কোটি টাকা বা তার কম।
• শর্তসাপেক্ষে কৃষি ও তার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ক্ষেত্র।
• আর্থিক পরিষেবা সংস্থাগুলিকে দেওয়া ঋণে সুবিধা নেই।
• কেন্দ্র, রাজ্য, স্থানীয় প্রশাসন এবং সংসদ বা রাজ্যে বিধানসভার তৈরি করা কর্পোরেট সংস্থার ঋণ পুনর্গঠন হবে না।
• শর্তসাপেক্ষে গৃহঋণ সংস্থাগুলিকে দেওয়া ঋণ।

ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে বিশেষজ্ঞদের অনেকের দাবি, প্রকল্পের সুবিধা যাতে অসাধু ঋণগ্রহীতারা নিতে না-পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। এ জন্য ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে সজাগ থাকতে হবে বলে মত ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের প্রাক্তন পূর্বাঞ্চলীয় চেয়ারম্যান অনির্বাণ দত্তের।

অন্য বিষয়গুলি:

RBI Loan Restructuring Plan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy