Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

দূষণে উৎপাদন বন্ধ ডানকুনির কোল ইন্ডিয়ায়

এসইসিএলে মূলত কয়লা থেকে আলকাতরা ও গ্যাস উৎপাদন হতো। ওই গ্যাস শহরে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হলেও তেমন চাহিদা না-থাকায় অধিকাংশ সময়ে তা পুড়িয়ে নষ্ট করতে হয় বলে সংস্থা সূত্রের খবর।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
ডানকুনি শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০১৭ ০২:৫৩
Share: Save:

জল ও বায়ু দূষণের অভিযোগ উঠেছিল আগেই। তার জেরে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে উৎপাদন বন্ধ ডানকুনিতে কোল ইন্ডিয়ার সাউথ ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেডের (এসইসিএল) ইউনিটে। ফলে পুজোর আগে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে কারখানার এক হাজারেরও বেশি শ্রমিকের সমস্যা মেটার সম্ভাবনা দূর অস্ত্ বলে মনে করছেন কর্মীরা। তবে এ ব্যাপারে কোল ইন্ডিয়ার চেয়ারম্যান সুতীর্থ ভট্টাচার্য জানান, ‘‘কারখানা বন্ধ হচ্ছে না। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ কিছু শর্ত দিয়েছে। আমরা সেগুলি পূরণও করেছি।’’

ডানকুনিতে কোল ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ জানান, ১৯ জুলাই থেকেই উৎপাদন বন্ধ। তবে তাঁদের দাবি, জল ও বায়ু দূষণ সমস্যার ব্যাপারে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের বেঁধে দেওয়া শর্ত পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। সম্প্রতি কেন্দ্র ও রাজ্য দূষণ পর্ষদের কর্তারা কারখানা ঘুরে দেখেও গিয়েছেন। সেই কারণেই কোল ইন্ডিয়ার আশা, খুব তাড়াতাড়ি ফের উৎপাদন শুরু করা সম্ভব হবে।

এসইসিএলে মূলত কয়লা থেকে আলকাতরা ও গ্যাস উৎপাদন হতো। ওই গ্যাস শহরে পাইপলাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা হলেও তেমন চাহিদা না-থাকায় অধিকাংশ সময়ে তা পুড়িয়ে নষ্ট করতে হয় বলে সংস্থা সূত্রের খবর। এর জেরেই বায়ু দূষণের অভিযোগ। রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র জানান, ওই সংস্থা দূষণ কমাতে পরিকাঠামোর হাল ফেরাতে আবেদন করেছে। ফের সেখানে উৎপাদন চালু করার বিষয়টি অনুমোদনের জন্য কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের কাছে রাজ্যের তরফে আবেদন জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, পরিবেশমন্ত্রী ও কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘এস ই সি এলে উৎপাদন বন্ধ হওয়ায় কলকাতায় বহু মানুষ গ্যাস পাচ্ছেন না। বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনার জন্য কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদকে আর্জি জানিয়েছি।’’

দূষণ নিয়ন্ত্রণের ভাল পরিকাঠামো না-থাকায় কেন্দ্রীয় দূষণ পর্ষদ সারা দেশে মোট ১৩৩টি সংস্থাকে উৎপাদন বন্ধের নোটিস দিয়েছে। তার মধ্যে এসইসিএল-সহ রাজ্যের ১৮টি সংস্থা রয়েছে। প্রশাসনেরই একটি সূত্রে খবর, ২০১০ সালেও বায়ু ও জল দূষণের অভিযোগে এসইসিএলে উৎপাদন বন্ধ করা হয়। রাজ্য দূষণ পর্ষদ সংস্থাকে জরিমানাও করে। এর পরে কেন্দ্র এবং রাজ্য দূষণ পর্ষদের নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে ওই কারখানার আধুনিকীকরণ হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে অভিযোগ ওঠে। কারখানার অপরিশোধিত জল ডানকুনি খালে পড়ে। ওই খালের সঙ্গে উত্তরপাড়ায় সরাসরি গঙ্গার যোগাযোগ রয়েছে। তাতে যেমন জলবাহিত চর্মরোগ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ, তেমনই নানা প্রজাতির মাছও মরছে। রয়েছে বায়ু দূষণও।

সংস্থা সূত্রের খবর, যে ভাবে গ্যাস পুড়িয়ে নষ্ট করা হয়, তা থেকে দূষণের অভিযোগ আগেও উঠেছে। দূষণ যাতে না-হয়, সে ভাবে গ্যাস নষ্টের পরিকাঠামো একমাত্র হলদিয়ায় রয়েছে। সে ক্ষেত্রে ডানকুনি থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে সেই গ্যাস হলদিয়ায় নিয়ে যেতে হবে। সংস্থার বিলাসপুরের অফিস থেকে সেই অনুমতি না-মেলাতেই বিপত্তি।

তবে, কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের উৎপাদন বন্ধের নির্দেশ প্রসঙ্গে এসইসিএলের তৃণমূল প্রভাবিত ঠিকা শ্রমিক সংগঠনের নেতা সুবীর মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘‘কেন্দ্র এই ইউনিটটি বেসরকারিকরণের চেষ্টা করছে। ওই নির্দেশ তারই অঙ্গ।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Dankuni Coal Complex dankuni Production pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy