কলকাতার বাজারে ১০ গ্রাম খুচরো পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) বিকিয়েছে ৬১,৮৫০ টাকায়। প্রতীকী ছবি।
বেলাগাম সোনা। শুক্রবার দর উঠল উচ্চতার নতুন শিখরে। কলকাতার বাজারে ১০ গ্রাম খুচরো পাকা সোনা (২৪ ক্যারাট) বিকিয়েছে ৬১,৮৫০ টাকায়। সোনার বাট এই প্রথম ছুঁয়েছে ৬১,৫৫০ টাকা। ফের নজির গড়ে প্রতি কেজি রুপোর বাট এবং খুচরো রুপোও পৌঁছেছে যথাক্রমে ৭৬,৫০০ ও ৭৬,৬০০ টাকায়। সব দামই জিএসটি যোগ করে আরও অনেক চড়া। যেমন, খুচরো পাকা সোনা প্রায় ৬৪ হাজারের কাছে। জিএসটি নিয়ে পড়ছে ৬৩,৭০৫.৫০ টাকা।
এই নিয়ে টানা দু’দিন সোনার দাম নজির গড়ল। এক মাসে তিন বার। রুপোয় নজির লাগাতার তিন দিন। পয়লা বৈশাখের আগে দামি ধাতুগুলির এমন ছুট দেখে থতমত বাজার। গয়না ব্যবসায়ীদের দাবি, নিত্য প্রয়োজনীয় সমস্ত পণ্যের চড়া দাম সাধারণ মানুষের খরচ অনেক বাড়িয়েছে। ফলে সোনা কিনে নতুন বছর শুরু করা কিংবা অক্ষয় তৃতীয়ায় সোনা কেনার রেওয়াজ মানা বহু মানুষের আসাধ্য হয়েছে। বিক্রিতে সেই প্রভাব পড়বে বলেই আশঙ্কা। তবে একাংশের মতে, রুপোর দাম হুড়মুড়িয়ে বাড়লেও, তা সোনার থেকে সস্তা। ফলে বিকল্প হিসেবে এর চাহিদা বাড়তে পারে। যদিও কিছু মানুষের নাগালে সোনা-রুপো কোনওটাই নেই বলেও মানছেন অনেকে।
শ্যাম সুন্দর কোম্পানি জুয়েলার্সের কর্ণধার রূপক সাহা বলছেন, ‘‘যাঁদের বাড়িতে বিয়ে, তাঁদের কাছে সোনার দাম বিরাট চিন্তার বিষয়। গত কয়েক মাস ধরেই এই দাম বৃদ্ধির ঝোঁকটা দেখে চলেছি। আজ নববর্ষ, সামনেই অক্ষয় তৃতীয়া। আমার মনে হয় এখন বহু ক্রেতা হালকা গয়না চাইবেন। আমরাও তার জন্য তৈরি হচ্ছি।’’
সোনার দর এতটা বাড়ায় বহু স্বর্ণ ব্যবসায়ীই অল্প সোনার হালকা গয়না বিক্রিতে জোর দিচ্ছেন। রূপকবাবুর দাবি, তাঁরা নকশা, গুণগতমান একই রেখে বিয়ের জন্যও হালকা গয়নার সম্ভার তৈরি করেছেন। কারণ, দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিয়ের হোক বা দৈনন্দিন ব্যবহারের, হালকা গয়না তৈরি করার কথা বলেছে সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসও। সংস্থার সিইও শুভঙ্কর সেনের বক্তব্য, ‘‘বাজার এত অনিশ্চিত যে, সোনার দাম আরও বাড়ার আশঙ্কায় ক্রেতারা। ফলে যাঁদের বিয়ে বা যাঁরা সোনায় লগ্নি করতে চান, তাঁরা আসছেন। দাম আরও বাড়বে ভেবে এখনই কিনছেন। এই অবস্থায় হালকা ওজনের গয়না তৈরি করছি। তবে হিরের গয়নার বিক্রি বাড়ছে, যেগুলি ১৪ এবং ১৮ ক্যারাট দিয়ে তৈরি হয়। কারণ এগুলি বহু ক্রেতার বাজেটের মধ্যে হয়ে যাচ্ছে।’’
অঞ্জলি জুয়েলার্সের ডিরেক্টর অনর্ঘ উত্তীয় চৌধুরীর অবশ্য মত, ‘‘সোনার দাম বৃদ্ধিকে ভয় হিসেবে কেউ দেখেন না। কারণ, এটি বিশেষ সম্পদ। সোনার দাম চিরকাল বেশি ছিল। ইদানিং সেটা নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। আমরা সবাই দর বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত। তবে মূল্যবৃদ্ধির এই জমানায় রান্নার গ্যাস থেকে মাংস, সব কিছুই চড়েছে। তাই বাড়ছে সোনাও।’’ তিনি বলেন, বাস ভাড়া যখন এক-দেড় টাকা ছিল, তখন সোনা বিকিয়েছে গ্রামে ৪৫০ টাকায়। কিন্তু দাম যা-ই হোক, সোনা মানে সুরক্ষা। বরং এখন আগে থেকে পরিকল্পনা করে সোনা কেনার নানা উপায় রয়েছে। ক্রেতার মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy