কমলেও স্বস্তি দিচ্ছে না বিমান জ্বালানির (এটিএফ) দাম। কলকাতায় এখনও তা রয়েছে কিলোলিটারে ১,৪৪,৫৭৫.৭১ টাকায়। যা রেকর্ড উচ্চতা থেকে কম হলেও, মেট্রো শহরগুলির মধ্যে সব চেয়ে বেশি। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, দর কমলেও তা এতটাই সামান্য (প্রায় ২.২%) যে ফের একবার বিমান ভাড়া বাড়াতে দেওয়ার দাবি জানাতে পারে বিমান পরিষেবা সংস্থাগুলি। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকবার যে আর্জি জানিয়েছে তারা। অনেকে আবার বলছেন, জুনের শুরুতে জ্বালানির দর ১.৩% কমানোর দু’সপ্তাহের মধ্যেই এক ধাক্কায় তা ১৬% বাড়িয়েছিল তেল সংস্থাগুলি। এ বারও সে রকম কিছু হবে না তো? আর যদি বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম ব্যারেলে ১০১ ডলার হওয়ার সময়ে দেশে এটিএফের দর কমানোই হয়, তা হলে কেন পেট্রল-ডিজ়েলের ক্ষেত্রে সেই পথে হাঁটা হবে না, সে প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা।
প্রসঙ্গত, এ বছরের শুরু থেকেই ১১ দফায় বেড়েছে এটিএফের দাম। সব মিলিয়ে দাম বেড়েছিল ৯১%। মাঝে একবার সামান্য কমেছিল। আর ১ জুলাই দামের কোনও বদল ঘটেনি। তার পরে শনিবার নিয়ে সারা বছরে তা নেমেছে মাত্র দু’বার। কলকাতায় এর আগে জুনে সর্বোচ্চ দাম উঠেছিল ১.৪৬ লক্ষ টাকায়। সেই দরই বহাল ছিল শুক্রবার পর্যন্ত। অথচ করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময়ে বিমান ভাড়া বেঁধে দিয়েছিল কেন্দ্র। পরে কয়েক ধাপে তা কিছুটা বাড়ানো হয়। কিন্তু এখনও কোনও সংস্থা ৪০ মিনিটের নীচের উড়ানে (কর বাদে) ২৯০০ টাকার কম এবং ৮৮০০ টাকার বেশি নিতে পারে না। ফলে সংস্থাগুলি সেই দাম বাড়ানোর দাবি করেছিল। তা-ই আরও জোরালো হতে পারে বলে ধারণা।
দর-নামা
• সামান্য (২.২%) কমল এটিএফের দাম।
• শনিবার থেকে কলকাতায় দাম হল কিলোলিটারে ১,৪৪,৫৭৫.৭১ টাকা।
• এখনও পর্যন্ত এ বছরে বিমান জ্বালানি বেড়েছে ১১ বার। কমেছে মাত্র দু’বার। আর স্থির থেকেছে একবার।
• জুনে শহরে দর উঠেছিল ১,৪৬,৩২২.২৩ টাকায়। যা এখনও পর্যন্ত রেকর্ড।
• সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, বিমান সংস্থাগুলির ৪০% খরচই হয় জ্বালানি খাতে। ফলে এখনও চড়া এটিএফের জেরে বিমান ভাড়া বাড়াতে দেওয়ার দাবি উঠতে পারে।
• তা ছাড়া গত মাসের শুরুতে এটিএফের দর ১.৩% কমানোর ১৫ দিনের মধ্যেই তা ফের বেড়েছিল ১৬%। এ বারও সে রকমই কিছু হবে কি না, সেই আশঙ্কাও থাকছে।
তবে একাংশের যদিও মত, বিশ্ব বাজারে গত মাসের তুলনায় অনেকটাই নেমেছে অশোধিত তেলের দর। চলতি সপ্তাহে ৯৭ ডলারে নামার পরে এখন তা ঘোরাফেরা করছে ব্যারেলে ১০১ ডলারের আশেপাশে। এর ফলে আগামী দিনে বিমান জ্বালানির দর আরও কমানো হতে পারে। ফলে গাড়ির জ্বালানির ক্ষেত্রেও সেই পথে তেল সংস্থাগুলির হাঁটা উচিত বলে মনে করছেন তাঁরা। তা ছাড়া এটিএফের রফতানির উপর লিটার প্রতি ৬ টাকা করে বিশেষ অতিরিক্ত উৎপাদন শুল্ক চাপানো হলেও, দেশীয় সংস্থাকে তাদের বিদেশি রুটের উড়ানের জন্য (এটিএফ) উপরে ১১% উৎপাদন শুল্ক গুনতে হবে না বলে জানিয়েছে সরকার। যা বিমান পরিষেবা শিল্পের কাছে স্বস্তির বার্তা। ফলে সব মিলিয়ে কিছুটা আশা-নিরাশার দোলাচলে রয়েছে বিভিন্ন মহল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy