অক্টোবরে দেওয়ালির আগেই দেশে পেমেন্টস ব্যাঙ্কের পরিষেবা চালু করতে চায় পেটিএম। যার প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ৩০০-৩৫০ কোটি টাকা ধার্য করেছে নেটে টাকা লেনদেন পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থাটি। ইতিমধ্যেই ব্যাঙ্ক তৈরির কাজও শুরু হয়েছে বলে রবিবার জানিয়েছেন পেটিএম পেমেন্টস ব্যাঙ্কের সিইও শিঞ্জিনি কুমার। ব্যাঙ্কের সদর দফতর হবে নয়ডায়। প্রাথমিক ভাবে পূর্ব এবং উত্তর ভারতে এর পরিষেবা শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।
গত মে মাসে পেটিএমের সিইও বিজয় শেখর শর্মা আগামী অগস্টে ব্যাঙ্ক চালুর ব্যাপারে আশা প্রকাশ করেছিলেন। তবে তথ্যপ্রযুক্তি সংক্রান্ত কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে বলে এ দিন জানিয়েছেন কুমার। তাঁর দাবি, তথ্য আদানপ্রদান, বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশনের মতো বেশ কিছু ব্যাপারে কাজ চলছে। প্রতি মুহূর্তেই কিছু না কিছু নতুন বিষয় সামনে আসছে। সেই চ্যালেঞ্জ সামলে কাজ সম্পূর্ণ করতে আরও কিছু সময় লাগবে বলে তাঁর মত। যে কারণে ব্যাঙ্ক চালু হতে অক্টোবর হয়ে যাবে।
গত বছরের অগস্টেই পেমেন্টস ব্যাঙ্ক খুলতে এগারো আবেদনকারীকে নীতিগত ভাবে অনুমোদন দিয়েছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এর মধ্যে ডাক বিভাগ, ন্যাশনাল সিকিউরিটিজ ডিপোজিটরি-র (এনএসডিএল) মতো সরকারি সংস্থা যেমন রয়েছে, তেমনই আছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ, আদিত্য বিড়লা নুভোর মতো প্রথম সারির কর্পোরেট সংস্থা। ভোডাফোন এম-পেসা, এয়ারটেল এম কমার্স-এর মতো টেলিকম শিল্পের প্রতিনিধি যেমন তালিকায় ঠাঁই পেয়েছিল, তেমনই সবুজ সঙ্কেত পেয়েছিল তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টেক মহীন্দ্রা। অনুমোদন পান সান ফার্মার প্রতিষ্ঠাতা-এমডি দিলীপ শান্তিলাল সঙ্ঘভি এবং নয়ডার সংস্থা পেটিএমের প্রতিষ্ঠাতা-সিইও বিজয় শেখর শর্মাও।
এর মধ্যে অবশ্য পেমেন্টস ব্যাঙ্ক গড়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছে টেক মহীন্দ্রা। সংস্থার এমডি এবং সিইও সি পি গুরনানির দাবি, সাধারণ মানুষের কাছে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ থাকলেও, এই ক্ষেত্রে এখন প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। ফলে যত বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছনোর পরিকল্পনা করা হয়েছিল অথবা এর মারফত যত দ্রুত লাভের মুখ দেখার সম্ভাবনা ছিল, তা এখন আর সম্ভব নয়। সেই কারণেই পরিচালন পর্ষদ পেমেন্টস ব্যাঙ্ক তৈরি নিয়ে আর না-এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান তিনি। তার আগে একই পথে হেঁটেছে চোলমণ্ডলম গোষ্ঠী। ব্যাঙ্ক তৈরি থেকে সরে এসেছে সান ফার্মা প্রতিষ্ঠাতা দিলীপ সঙ্ঘভি, আইডিএফসি ব্যাঙ্ক এবং টেলিনর ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের জোটও।
পেমেন্টস ব্যাঙ্ক কী?
• খুলতে ন্যূনতম মূলধন ১০০ কোটি টাকা
• গ্রাহকের সর্বোচ্চ জমা ১ লক্ষ টাকা
• লক্ষ্য প্রত্যন্ত প্রান্তে পরিষেবা
• টাকা জমা রাখা ও হস্তান্তরের সুবিধা
• মিলবে এটিএম বা ডেবিট কার্ড
• মিলবে না ঋণ ও ক্রেডিট কার্ড
প্রসঙ্গত, পেমেন্টস ব্যাঙ্ক তৈরির মূল লক্ষ্য, ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সুবিধা দেশের প্রত্যন্ত প্রান্তেও সকলের দরজায় পৌঁছে দেওয়া। যাতে সেখানে অন্তত তুলনায় ছোট অঙ্কের আমানত জমা করা যায়। তার মারফত এক জায়গা থেকে আর এক জায়গায় টাকা পাঠাতে পারেন সাধারণ মানুষ। বিশেষত ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্য শহর বা ভিন্ রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা।
ছোট ব্যবসায়ী, অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরাও এই ব্যাঙ্কের পরিষেবায় উপকৃত হবেন বলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দাবি। শুধু তা-ই নয়। পেমেন্টস ব্যাঙ্ক মারফত অনলাইনে কর দেওয়া থেকে শুরু করে ই-কমার্সের বিভিন্ন লেনদেনে টাকা মেটানোর পরিষেবা মিলবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ব্যাঙ্ক ব্যবহার হতে পারে স্কুল-কলেজের বেতন মেটানো থেকে পেনশন পাওয়ার মতো হাজারো কাজে। এমনকী আগামী দিনে সরকারি ভর্তুকির টাকা সরাসরি অ্যাকাউন্টে পেতেও পেমেন্টস ব্যাঙ্ক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হতে পারে বলে তাঁদের অভিমত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy