সপ্তাহ দুয়েক ধরেই দেশে বাড়ছে পেট্রল ও ডিজেলের দর। আর ভারতীয় সময়ে শুক্রবার ভোরে ইরাকের বাগদাদে আমেরিকার ড্রোন হামলায় ইরানের সেনাকর্তা কাসেম সোলেমানির মৃত্যুর পরে বিশ্ব বাজারেও তেলের দাম ফের মাথাচাড়া দিল। যার বিরূপ
প্রভাব পড়তে পারে ভারতেও। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, সে ক্ষেত্রে জ্বালানির দাম বাড়লে মূল্যবৃদ্ধি মাথা তুলতে পারে। আবার ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম কমায় বাড়বে আমদানি খরচ। ফলে মাথাচাড়া দিতে পারে চলতি খাতে ঘাটতি। আমদানিতে বেশি ডলার বেরোলে সমস্যা হবে রাজকোষ ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে বেঁধে রাখাও।
আজ, শনিবার কলকাতায় ইন্ডিয়ান অয়েলের পাম্পে লিটার প্রতি পেট্রল ও ডিজেলের দাম দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ৭৮.০৪ টাকা ও ৭০.৭৬ টাকা। যা নভেম্বরের পরে সবচেয়ে বেশি। আবার বাগদাদের ঘটনার জেরে এ দিন আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজারের পাশাপাশি, ভারতের শেয়ার সূচকও পড়েছে। সেনসেক্স ১৬২.০৩ পয়েন্ট পড়ে হয়েছে ৪১,৪৬৪.৬১ অঙ্ক। ৫৫.৫৫ পড়ে ১২,২২৬.৬৫ অঙ্কে থেমেছে নিফ্টি। নিরাপদ লগ্নির জায়গা হিসেবে দাম বেড়েছে সোনার। আবার একই কারণে ডলারের নিরিখে বিপুল ভাবে পড়েছে টাকার দর। ১ ডলারের দাম ৪২ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৭১.৮০ টাকা। এই ধারা চলতে থাকলে তেল আমদানির খরচ বাড়বে।
প্রভাব
• মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের সেনাকর্তার মৃত্যুতে পশ্চিম এশিয়ায় তেল উৎপাদন ও সরবরাহ ঘিরে উদ্বেগ।
• শুক্রবার ১ ব্যারেল ব্রেন্ট ক্রুড এক সময়ে ৪.৪% বেড়ে হয় ৬৯.১৬ ডলার।
• মার্কিন অশোধিত তেলের দর পৌঁছয় ৬৩.৮৪ ডলারে।
• পড়েছে ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজারও।
উদ্বেগ ভারতে
• কলকাতায় ১৬ দিনে পেট্রল ও ডিজেল লিটারে যথাক্রমে ৭৫ পয়সা ও ২.০১ টাকা বেড়েছে। শনিবার পেট্রল হয়েছে ৭৮.০৪ টাকা। আর ডিজেল ৭০.৭৬ টাকা।
• অশোধিত তেল বাড়লে চড়বে জ্বালানি দু’টির দাম।
• ডলারের নিরিখে টাকার দাম অনেকটা কমায় তেল আমদানির খরচ বাড়বে।
• সম্প্রতি চলতি খাতে ঘাটতি আয়ত্তে থাকলেও, তা নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে।
• সমস্যা হতে পারে রাজকোষ ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রা বাঁধা নিয়ে।
• জ্বালানির দর বাড়লে আরও বাড়তে পারে মূল্যবৃদ্ধি।
আশঙ্কা আরও
• আমেরিকাকে পাল্টা হুমকি দিয়েছে ইরান। সব মিলিয়ে ইরান, ইরাক-সহ পশ্চিম এশিয়ায় কয়েক দিন উত্তেজনা থাকতে পারে।
• ব্যাহত হতে পারে ওপেকের দ্বিতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদক ইরাকের উৎপাদনও।
• রাশিয়াও ইদানীং শোধনাগারে তেল
সরবরাহ কমিয়েছে।
• নগদের জোগান বাড়ানোয় তেলের দর বেড়েছে চিনেও।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, বাগদাদের ঘটনার প্রভাবে আগামী এক-দেড় মাস ইরাক, ইরান-সহ পুরো পশ্চিম এশিয়ায় তেল উৎপাদন ও সমুদ্রপথে রফতানি ব্যাহত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে তেলের দামে অস্থিরতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা। এ দিনই ব্রেন্ট ক্রুড ও মার্কিন অশোধিত তেলের দর ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে। বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দর বৃদ্ধির পরে দেশে তার প্রভাব পড়তে সাধারণত কিছু দিন সময় লাগে। তবে তেল সংস্থা সূত্রের খবর, আন্তর্জাতিক বাজারে পেট্রল-ডিজেলের দৈনিক দামও দেশে দুই জ্বালানির দামে প্রভাব ফেলে। ফলে এ দফাতেও তা হতে পারে।
ইরানে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জেরে গত এক বছরে সে দেশ থেকে তেল আমদানি কমিয়েছে ভারত। বাড়িয়েছে আমেরিকা থেকে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ওই দুই দেশের এই দ্বন্দ্বে নয়াদিল্লির সমস্যা বাড়তে পারে। কারণ, তেলের দাম বাড়লে সব চেয়ে আগে প্রভাব পড়বে খুচরো মূল্যবৃদ্ধিতে। সম্প্রতি যা ৫.৫৪ শতাংশে পৌঁছেছে। নতুন ভাবে কষতে হবে ঘাটতির হিসেব। সে ক্ষেত্রে তেলের দাম কমিয়ে মানুষকে সুরাহা দিতে উৎপাদন শুল্ক ও সেস ছাঁটাইও কঠিন হবে কেন্দ্রের পক্ষে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy