ফাইল চিত্র।
মোরাটোরিয়ামের সময়ে ঋণের না-দেওয়া কিস্তির জন্য সুদের উপর সুদ কাটার কোনও ন্যায্য কারণ নেই বলে মনে করে সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার এ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে শীর্ষ আদালতের তিন সদস্যের বেঞ্চের মন্তব্য, কোভিড-১৯ মোকাবিলা করতে ঋণগ্রহীতাদের আর্থিক সহায়তা দিতেই ছ’মাস ঋণের কিস্তিতে মোরাটোরিয়াম দেওয়া হয়েছে। তার পরে ওই কিস্তিতে সুদের উপর সুদ যোগ করা উচিত নয়। তা করা হলে, এই সিদ্ধান্তের উদ্দেশ্যই ব্যর্থ হবে। সেই সঙ্গে ব্যাঙ্কের উপরে পুরো দায় না-চাপিয়ে বিষয়টিতে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ করা উচিত বলেও জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশ ছিল, করোনা পরিস্থিতিতে চাইলে ছ’মাসের (মার্চ-অগস্ট) কিস্তি না-ও দিতে পারেন ঋণগ্রহীতা। তবে যে ক’মাস তা স্থগিত থাকবে, তত দিনের টাকা তো সুদ-সহ দিতে হবেই। সেই সঙ্গে ওই ক’মাসের সুদের উপরেও সুদ মেটাতে হবে। এতে গ্রাহকের ঘাড়ে বাড়তি বোঝা চাপার অভিযোগ উঠেছিল। সেই ভয়ে অনেকেই মোরাটোরিয়াম নেননি। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন আগরার গজেন্দ্র শর্মা। তাঁর দাবি ছিল, এই সময়ের পুরো সুদই মকুব করা হোক। যদিও সুপ্রিম কোর্ট পুরো সুদ ছাড় নয়, সুদের উপরে সুদ নিয়ে মত জানাতে বলেছিল কেন্দ্র ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে।
বুধবার এই মামলায় আদালতে শীর্ষ ব্যাঙ্ক ও কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার দাবি, ব্যাঙ্কগুলিতে প্রায় ১৩৩ লক্ষ কোটি টাকার আমানত রয়েছে। যার উপরে তাদের সুদ দিতে হয়। মোরাটোরিয়ামের সময়ে ঋণে পুরো সুদ মকুব হলে আমানতকারীদের স্বার্থরক্ষা করা যাবে না। ব্যাঙ্কিং শিল্পও ভেঙে পড়তে পারে। এ দিন শুনানি তিন মাসের জন্য পিছোনোর আর্জি জানায় স্টেট ব্যাঙ্ক ও ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সংগঠন আইবিএ। সুপ্রিম কোর্ট অগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শুনানি পিছিয়েছে ঠিকই। তবে আইবিএ-কে কিস্তি স্থগিত নিয়ে নয়া নির্দেশিকা দেওয়া যায় কি না, দেখতে বলেছে।
আরও পড়ুন: দেড় বছরে সব থেকে বেশি পেট্রলের দাম
ব্যাঙ্কিং মহল সূত্রের খবর, শেষ পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্ট সুদের উপরে সুদ ছাড়ের নির্দেশ দিলে শুধুমাত্র স্থগিত কিস্তিই দিতে হবে ঋণগ্রহীতাকে, বাড়তি টাকা নয়। কারণ, বকেয়া ঋণে ধার্য সুদ যোগ করেই মাসিক কিস্তি ঠিক হয়। তবে এক ব্যাঙ্ককর্তার মতে, মোরাটোরিয়াম ছ’মাসের। তাই ঋণগ্রহীতা যদি সপ্তম মাসে বকেয়া কিস্তি পুরোটা মেটান, তা হলে তাঁকে বাড়তি সুদ দিতে হবে না। কিন্তু সপ্তম মাসে তা না-মেটালে, বকেয়ার উপরে ওই মাস থেকেই বাড়তি সুদ গুনতে হবে। অল ইন্ডিয়া ব্যাঙ্ক অফিসার্স কনফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক সঞ্জয় দাসের দাবি, আদালত সুদের উপরে সুদ নেওয়ার বিরুদ্ধে হলেও, তা ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে ক্ষতির। তিনি বলেন, “এতে ছাড় দিলে ব্যাঙ্কগুলির প্রায় ২ লক্ষ কোটি আয় কমবে। এতে যে ক্ষতি হবে, সে জন্য ব্যাঙ্ক বা তার কর্মীদের যেন দায়ী করা না-হয়।’’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে খরচ কমানোর নির্দেশ কেন্দ্রের
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy