ব্যালটের যুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বীরা ধরাশায়ী। কিন্তু তেমনই গতি হারিয়েছে বৃদ্ধির চাকা। চাহিদায় ভাটা। দেখা নেই বেসরকারি লগ্নির। তৈরি হচ্ছে না তেমন কাজের সুযোগও। অর্থনীতির এই বেহাল দশা আঁচ করেই এ বার বাজেট নিয়েও পুরোদস্তুর মাথা ঘামাতে শুরু করলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আগামী তিন দিন তিনি আলোচনায় বসবেন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে। সাধারণত যে কাজ তোলা থাকে অর্থমন্ত্রীর জন্য।
মঙ্গলবার রাতেই অর্থ মন্ত্রক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের সচিবদের নিজের বাসভবনে ডেকেছিলেন মোদী। সেখানে ‘হোম ওয়ার্ক’ সেরে বৃহস্পতিবার থেকে তিন দিন দফায় দফায় বাজেট-বৈঠক শুরু করছেন। লক্ষ্য, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এবং কাজের সুযোগ তৈরির জন্য বাজেটে দাওয়াইয়ের খোঁজ করা।
বাজেটের প্রস্তুতি পর্বে সীতারামন শিল্পমহল, অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে কথা বলেছেন। বুধবারও তিনি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন নিয়ন্ত্রকের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আলাদা করে কথা হয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের সঙ্গে। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী যে ভাবে নিজে পুরো বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন, তা দেখে অর্থনীতি নিয়ে তাঁর দুশ্চিন্তা স্পষ্ট বলেই মনে করছেন সরকারি কর্তারা।
ভোটে জিতেও চিন্তা
• অর্থনীতির চাকায় গতি নেই। গত অর্থবর্ষে বৃদ্ধির
হার নেমে গিয়েছে মোদী জমানার প্রথম পাঁচ বছরের মধ্যে সব থেকে নীচে। ওই বছরের শেষ ত্রৈমাসিকে চিনের কাছে হাতছাড়া দ্রুততম বৃদ্ধির তকমাও।
• কাজের সুযোগ তৈরির সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় নস্যি। ২০১৭-১৮ সালে বেকারত্বের হার ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ।
• ফসলের ন্যায্য দাম না পেয়ে চাষিদের দুর্দশা চরমে। তার উপরে চোখ রাঙাচ্ছে খরা।
• ঝিমিয়ে কল-কারখানায় উৎপাদন। বিনিয়োগে
এখনও সে ভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছেন লগ্নিকারীরা।
• রফতানি ধাক্কা খেয়েছে। ফিকে দেশের বাজারের চাহিদাও। আগামী দিনে যে সমস্যা আরও ঘোরালো হওয়ার সম্ভাবনা। সে ক্ষেত্রে নতুন করে আগ্রহ বাড়বে না লগ্নিতেও।
• অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে প্রয়োজন বিপুল সরকারি বিনিয়োগ, কর ছাঁটাইয়ের দাওয়াই। সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের খরচও। তবু মাত্রাছাড়া হলে চলবে না রাজকোষ ঘাটতি।
• বাজারে ঋণ ও নগদের জোগান বাড়াতে অনুৎপাদক সম্পদে রাশ টেনে ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের সংস্কার জরুরি। দ্রুত শোধরানো দরকার এনবিএফসির হালও।
অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তা বলেন, ‘‘শিল্পমহলের অভিযোগ, সরকারি ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ মিলছে না। এ দিকে বেসরকারি ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক ছাড়া অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির (এনবিএফসি) হাতে ঋণ দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত নগদ নেই। সম্ভবত সেই কারণেই শিল্পমহল ও ব্যাঙ্ক কর্তাদের একই দিনে বৈঠকে ডেকেছেন মোদী।’’ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে খরচের রাশ আলগা করার মতো অবস্থা রাজকোষের কতটা রয়েছে, তা বুঝতে বসছেন অর্থমন্ত্রী ও ওই মন্ত্রকের সচিবদের সঙ্গে।
অফুরান আলোচনা
• বাজেট নিয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক।
• বৃহস্পতিবার: অর্থমন্ত্রী ও ওই মন্ত্রকের সচিবদের সঙ্গে।
• শুক্রবার: শিল্পপতি ও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্তাদের সঙ্গে।
• শনিবার: অর্থনীতিবিদ ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে।
নিজের দ্বিতীয় দফায় শুরু থেকেই অর্থনীতির সমস্যা সমাধানে বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছেন মোদী। বৃদ্ধির হার বাড়ানো আর কাজের সুযোগ তৈরির উপায় খুঁজতে কমিটি ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে। এ বার বাজেট-বৈঠকের পালা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy