প্রতীকী চিত্র।
করোনা-সঙ্কট ও লকডাউনের ধাক্কা সামলাতে চলতি অর্থবর্ষে বাড়তি ৪.২ লক্ষ কোটি টাকা ঋণ নেবে মোদী সরকার। অর্থ মন্ত্রকের শীর্ষ মহলের খবর, তার বেশিরভাগটা বিদেশে সরকারি বন্ড ছেড়ে তোলা হবে। তবে এই বন্ড ছাড়া হবে টাকায়। মন্ত্রকের অর্থনীতিবিদদের ব্যাখ্যা, ভারতীয় মুদ্রায় বাড়তি ঋণ করা হলে, দেশের বাজার থেকে অতিরিক্ত ধার করতে হবে না। বন্ডের সুদের হার বাড়ার আশঙ্কাও তৈরি হবে না। ঋণ নিতে গিয়ে বাড়তি সুদ গুনতে হবে না রাজ্য ও কর্পোরেট সংস্থাগুলিকেও।
শুক্রবার মন্ত্রক ঘোষণা করেছে, চলতি বছরে বাড়তি ৪.২ লক্ষ কোটি টাকা ধার করা হবে। তবে এই বাড়তি ঋণের পুরোটাই যে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য ঢালা হবে, এমন গ্যারান্টি অর্থ মন্ত্রক দিচ্ছে না। সূত্র বলছে, এর অনেকটা লকডাউনের ফলে রাজস্ব আয় যে কমবে, তা পূরণ করতে যাবে। সে ক্ষেত্রে উৎসাহ প্রকল্পে (স্টিমুলাস প্যাকেজ) ছোট-মাঝারি শিল্পকে বাড়তি
পুঁজি বা ঋণের গ্যারান্টি তহবিল, বেশ কিছু আর্থিক সংস্কার ও ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করতে পদক্ষেপ করা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বাড়তি খরচের সম্ভাবনা নেই। এই দাওয়াই আগামী সপ্তাহেই ঘোষণা হতে পারে।
আরও পড়ুন: এসবিআই-সহ ৬ ব্যাঙ্কের থেকে ঋণ ৪০০ কোটিরও বেশি, ‘নিখোঁজ’ মালিকদের বিরুদ্ধে
সমস্যার কারণ
• কর আদায় অন্তত ২ লক্ষ কোটি টাকা কম হতে পারে।
• ছোঁয়া কঠিন বিলগ্নির লক্ষ্য।
• রাজকোষ ঘাটতি ছুঁতে পারে ৫.৩%। মূল্যবৃদ্ধি ধরে বৃদ্ধির হার কমলে, ঘাটতি বাড়বে।
• এই অবস্থায় বাজার থেকে বাড়তি ৪.২ লক্ষ কোটি টাকা ধার করবে কেন্দ্র।
দাবি ও সংশয়
• অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, বাড়তি ঋণের বেশিরভাগটাই আসবে বিদেশে ভারতীয় মুদ্রায় সরকারি ঋণপত্র ছেড়ে।
• ফলে দেশের ঋণপত্রের বাজারে চাপ পড়বে না। সুদের হার বাড়ার আশঙ্কা কমবে। রাজ্য ও কর্পোরেট সংস্থাগুলিকে ধার করতে গিয়ে বাড়তি সুদ গুনতে হবে না।
• বাড়তি ঋণের টাকা কি করোনার জেরে ধাক্কা খাওয়া অর্থনীতির কাজে লাগানো হবে? নাকি পুরোটাই যাবে রাজকোষ ঘাটতি সামাল দিতে?
তা হলে কী?
• সূত্রের খবর, সে ক্ষেত্রে উৎসাহ প্রকল্পে ছোট-মাঝারি শিল্পের জন্য বাড়তি পুঁজি ও ঋণের গ্যারান্টি দেওয়া হতে পারে।
• জোর দেওয়া হতে পারে আর্থিক সংস্কার ও ব্যবসার পরিবেশ উন্নত করায়। যার কোনওটাতেই বাড়তি খরচ হবে না।
সরকারি সূত্রের ব্যাখ্যা, লকডাউনের ফলে চলতি অর্থবর্ষে রাজস্ব আয় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অন্তত ২ লক্ষ কোটি কম হবে। বিলগ্নিকরণ থেকে ২.১০ লক্ষ কোটি তোলার লক্ষ্য ছিল। তা-ও কতটা হবে সন্দেহ। ফলে আয় ৪ লক্ষ কোটি কমার আশঙ্কা।
কেন্দ্রের বাড়তি ঋণের সিদ্ধান্তকে আজ স্বাগত জানিয়েছেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। তিনি বলেন, “যদি গরিবদের সাহায্য ও অর্থনীতিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে এই টাকা খরচ না-হয়, তা হলে বাড়তি ধারে লাভ নেই।” তাঁর হিসেবে, বাড়তি ঋণের ফলে রাজকোষ ঘাটতি ৫.৩ শতাংশে পৌঁছবে। কিন্তু সেটা এখন বাধা নয়।
আরও পড়ুন: আরও ধারের পথে কেন্দ্র, রইল দুই প্রশ্ন
তবে অতিরিক্ত ধারের সিদ্ধান্ত নিলেও, বাড়তি সুদ নিয়ে চিন্তিত অর্থ মন্ত্রক। এই সুদের বোঝা কমাতে গত বছরের বাজেটে বিদেশে সরকারি বন্ড ছেড়ে ডলারে ধার করার পরিকল্পনা
হয়। সঙ্ঘ পরিবারের আপত্তিতে তা না-হওয়ায়, এ বার টাকাতেই বিদেশি লগ্নিকারীদের জন্য সরকারি বন্ড ছাড়ার এই পরিকল্পনা। শনিবার অর্থ মন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তা বলেন, “এই বন্ড আন্তর্জাতিক বন্ড সূচকে জায়গা করতে পারে। যেখানে ৪ লক্ষ কোটি ডলারের তহবিল আছে। ভারত এর ১.৫% পেলেও ৬ হাজার কোটি পেতে পারে। ফলে বাড়তি ঋণের সিংহভাগ সেখান থেকে আসতে পারে।”
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy