কলকাতাকে হারিয়ে দিল পশ্চিমবঙ্গ। ‘মোবাইল নাম্বার পোর্টেবিলিটি’র (এমএনপি) দৌড়ে গ্রাহক টানায় বিএসএনএলের কলকাতা সার্কেল-কে পিছনে ফেলে দিল পশ্চিমবঙ্গ-সার্কেল।
এখন মোবাইল ফোনের নম্বর একই রেখে একটি সংস্থার সংযোগ ছেড়ে অন্য সংস্থায় চলে যেতে পারেন গ্রাহক। এই পদ্ধতিই এমএনপি। বর্তমানে তীব্র প্রতিযোগিতার বাজারে এমএনপি-তে ছেড়ে যাওয়া ও নতুন পাওয়া গ্রাহকদের তুল্যমূল্য হিসেব টেলিকম সংস্থাগুলির কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সূচক। যারা এ ভাবে গ্রাহক হারানোর তুলনায় অন্যের গ্রাহক বেশি টানতে পারবে তারা প্রতিযোগিতায় কিছুটা এগিয়ে যাবে বলেই দাবি তাদের।
সেই হিসেবে বরাবর অন্য সংস্থার গ্রাহক টানার চেয়ে নিজেদের গ্রাহক বেশি হারিয়েছে বিএসএনএল। তবে সম্প্রতি গত অর্থবর্ষে দেশে সব সার্কেল মিলিয়ে প্রথম চাকা ঘোরার দাবি করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটি। বিশদে তথ্য না-দিলেও তারা জানিয়েছে, সেই সময় তাদের ছেড়ে যাওয়া গ্রাহকদের চেয়ে এমএনপির মাধ্যমে অন্যান্য সংস্থার বেশি সংখ্যক গ্রাহক বিএসএনএল সংযোগ নিয়েছেন।
গত অর্থবর্ষে অবশ্য আলাদা করে এ রাজ্যে সেই চাকা ঘোরেনি। কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গ, দুই সার্কেলেই ছেড়ে যাওয়ার গ্রাহক সংখ্যা বেশি ছিল। ক্যালকাটা টেলিফোন্স (কলকাতা সার্কেল) সূত্রের খবর, সেখানে এখনও অবস্থা বদলায়নি। তবে সংস্থার দাবি, ২০১৬-’১৭ সালের প্রথম মাস এপ্রিলে উল্টো ছবি ধরা পড়েছে পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলে। সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার (মার্কেটিং) অসীম কুমার সিন্হা জানান, গত এপ্রিলে এমএনপিতে ৫,০০৩ জন গ্রাহক বিএসএনএল ছাড়লেও অন্যান্য সংস্থার ৫,৭৯৪ জন সংযোগ নিয়েছেন।
অসীমবাবুর দাবি, গত অর্থবর্ষ থেকে ধাপে ধাপে এগিয়েছেন তাঁরা। যেমন ২০১৫-র এপ্রিলে এসেছিলেন মাত্র ২৯৪ জন। অক্টোবরে তা ছোঁয় ১৭৬৭। নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারিতে ফের কিছুটা কমলেও বাকি সময়ে বেড়েছে। অবশ্য এপ্রিলে বিএসএনএল ছেড়ে যাওয়া গ্রাহকের সংখ্যা ৫,৩৩৩ থেকে বাড়তে বাড়তে ডিসেম্বরে পৌঁছয় ১৪,১৮০-তে। তারপর থেকে তা আবার কমছে। সার্বিক ভাবে এখনও হারানো গ্রাহকদের তুলনায় অনেক কম নতুন গ্রাহক টানতে পেরেছেন তাঁরা।
কলকাতা সার্কেলে ছবিটা এখনও যে বদলায়নি, তা স্বীকার করেছেন ক্যালকাটা টেলিফোন্সের প্রিন্সিপ্যাল জিএম অপূর্ব কুণ্ডু। তাঁর ইঙ্গিত, এখনও কলকাতায় ছেড়ে যাওয়া ও নতুন আসা গ্রাহকের অনুপাত ১৩:১০। অর্থাৎ, এমএনপির মাধ্যমে অন্য টেলি সংস্থার প্রতি ১০ জন বিএসএনএল সংযোগ নিলে ছেড়ে যাচ্ছেন ১৩ জন। তবে তাঁরও দাবি, এই অনুপাত আগে আরও বেশি থাকলেও ক্রমশ তা কমছে।
অপূর্ববাবু ও অসীমবাবু, উভয়েরই দাবি, অনেকেই ফের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় ভরসা করতে চাইছেন বলে ফারাক কমছে। তাঁদের দাবি, বিএসএনএলে কল-ড্রপ সমস্যা যেমন অনেকটাই মিটছে, তেমনই সার্বিক ভাবে পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য পরিষেবার মানও উন্নত হচ্ছে। অপূর্ববাবুর দাবি, ‘‘চলতি অর্থবর্ষে ১০০০টি করে ২জি ও ৩জি টাওয়ার বসানোর যন্ত্রপাতি আসছে। ৩-৪ মাসের মধ্যে টাওয়ার বসানোর কাজ শুরু হবে। ৬-৭ মাসের মধ্যেই অধিকাংশ চালু হবে বলে আশা করছি। তাতে আমাদের টেলি পরিষেবা, বিশেষত ‘ডেটা’ পরিষেবা আরও উন্নত হবে। সে ক্ষেত্রে মাস ছয়েকের মধ্যে কলকাতাতেও ছেড়ে যাওয়া গ্রাহকের সংখ্যা কমে যাবে।’’ পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলেও প্রায় ৩০০ নতুন টাওয়ার বসেছে। অসীমবাবু জানান, এই অর্থবর্ষে আরও ২৭৫টি বসবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy