Advertisement
১৯ নভেম্বর ২০২৪

বাজারে ধস, সূচক পড়ল ৭২৩

মাস দু’য়েক ধরে প্রায় টানা পড়েছে শেয়ার বাজার। বুধবার নামল ধস। এক ধাক্কায় সেনসেক্স পড়ে গেল ৭২২.৭৭ পয়েন্ট। নামল ২৬ হাজারের ঘরে। শেষে তা থিতু হয় ২৬,৭১৭.৩৭ অঙ্কে। টাকার দামও ডলারের সাপেক্ষে ১০ পয়সা পড়েছে। এক ডলার দাঁড়িয়েছে ৬৩.৫৪ টাকায়। এক দিকে ম্যাট নিয়ে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলির অসন্তোষ। অন্য দিকে আর্থিক সংস্কারের রূপায়ণ নিয়ে অনিশ্চয়তা। মূলত এই দুইয়ের জাঁতাকলে পড়েই এ দিন মুখ থুবড়ে পড়ে সূচক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৫ ০৩:৩৫
Share: Save:

মাস দু’য়েক ধরে প্রায় টানা পড়েছে শেয়ার বাজার। বুধবার নামল ধস। এক ধাক্কায় সেনসেক্স পড়ে গেল ৭২২.৭৭ পয়েন্ট। নামল ২৬ হাজারের ঘরে। শেষে তা থিতু হয় ২৬,৭১৭.৩৭ অঙ্কে। টাকার দামও ডলারের সাপেক্ষে ১০ পয়সা পড়েছে। এক ডলার দাঁড়িয়েছে ৬৩.৫৪ টাকায়।

এক দিকে ম্যাট নিয়ে বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলির অসন্তোষ। অন্য দিকে আর্থিক সংস্কারের রূপায়ণ নিয়ে অনিশ্চয়তা। মূলত এই দুইয়ের জাঁতাকলে পড়েই এ দিন মুখ থুবড়ে পড়ে সূচক। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, বাজার আরও কিছুটা পড়তে পারে। এমনকী সেনসেক্স নামতে পারে ২৫ হাজারের ঘরে।

তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশ এ দিনের পতনের জন্য আগাম লেনদেনে ফাটকা কারবার বা ‘আরবিট্রাজ’-কেও দায়ী করেছেন। তাঁদের দাবি, এ দিন লেনদেন শুরুর ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সেনসেক্স প্রায় ৬০০ পয়েন্ট পড়ে যায়। ঝপ করে এতটা পতনকে স্বাভাবিক বলছেন না তাঁরা। যে-কারণে প্রবীণ বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, ‘‘এ দিন ‘অ্যালগোরিদ্‌ম’ লেনদেন ব্যবস্থায় ‘ইনডেক্স ডেরিভেটিভ’-এ এক লপ্তে বিশাল অঙ্কের শেয়ার বেচা হয়েছে। ফলে সেনসেক্স খুব অল্প সময়ে প্রায় ৬০০ নামে।’’ সাধারণত অ্যালগোরিদ্‌ম ব্যবস্থায় ‘আরবিট্রাজ’ লেনদেন করেন শেয়ার ব্যবসায়ীরা। আগাম লেনদেনে শেয়ার বিক্রি করে বা কিনে পরে নগদ বাজারে ওই একই শেয়ার বেচা বা কেনাকেই আরবিট্রাজ বলে। সূচকের অন্তর্গত শেয়ারগুলিকে এক লপ্তে নিয়েই ইনডেক্স ডেরিভেটিভ তৈরি করা হয়। অজিতবাবুর মতো বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এ দিন আরবিট্রাজ-এর উদ্দেশ্যেই আগাম লেনদেনে এক লপ্তে মোটা অঙ্কের ইন্ডেক্স ডেরিভেটিভ বিক্রি করেছেন অনেকে। অজিতবাবুদের ধারণা, ওই সব শেয়ার লেনদেনকারীর উদ্দেশ্য, প্রথমে আগাম লেনদেনে বিক্রি করে দাম পড়ে যাওয়ার পর ফের তা নগদ বাজারে কিনে নেওয়া।

তবে দেশের আর্থিক ক্ষেত্রের এখন যা অবস্থা, তাতে লগ্নিকারীরা শেয়ার বিক্রি করে আপাতত বাজার থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ। স্টুয়ার্ট সিকিউরিটিজের চেয়ারম্যান কমল পারেখের মতে, বাজার পড়ার মূলে আছে একাধিক কারণ। যেমন: ম্যাট নিয়ে সমস্যা ঝুলে রয়েছে। হতাশ করেছে ২০১৪-’১৫ অর্থবর্ষের আর্থিক ফলাফল। তার উপর সংস্কারের লক্ষ্যে আনা কিছু বিল লোকসভায় পাশ হলেও বিরোধীদের বাধায় রাজ্যসভায় পাশ হচ্ছে না। বাজারকে বিশেষ করে যা হতাশ করেছে, তা হল, পরিকাঠামো-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সরকারের তরফে টাকা খরচের ইঙ্গিত দেওয়া হলেও, তা এখনও না-করা। এ দিকে মার্কিন সরকার সুদ বাড়াবে বলেও ইঙ্গিত মিলেছে। যার জেরে বিদেশি সংস্থাগুলি আরও বেশি করে এ দেশ থেকে লগ্নি সরিয়ে নিতে পারে স্বদেশে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সব কিছুর বিরূপ প্রভাবেই পড়েছে শেয়ার বাজার। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি এ দিন ভারতের বাজারে প্রায় ১৭০০ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে। আগের দিন করে ৭৫৬ কোটি টাকার শেয়ার।

কেন্দ্রে নতুন সরকার আসায় বাজারে যে-আশার সঞ্চার হয়েছিল, তাতে ভর করে সেনসেক্স ৩০ হাজারের ঘরেও পৌঁছয়। কিন্তু আশাহত হয়ে গত মাস দুয়েকে তার পতন প্রায় সাড়ে তিন হাজার পয়েন্ট। বাজার বিশেষজ্ঞ এবং ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিকের মন্তব্য, বাজার এখন ‘রেয়ার’-দের দখলে। তিনি বলেন, ‘‘আশা করি ‘কারেকশন’ শেষের মুখে এসেছে। তবে সূচক আরও পড়বে তা, ২৫ হাজারেও নামতে পারে। তার পর ফের উঠবে। অবশ্য পড়তি বাজারে শেয়ার কেনার জেরে মাঝখানে কিছুটা বাড়তে পারে সূচক। তবে তা হবে সাময়িক।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy