নাগাড়ে পতনের জন্য লগ্নিকারীরা কমবেশি ১৩ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ হারানোর পরে কিছুটা টনক নড়েছে সরকারের।
গত শুক্রবার সামান্য ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতের শেয়ার বাজার। কিন্তু ততক্ষণে লগ্নিকারীদের হতাশ করে সেনসেক্স গড়ে ফেলেছে জুলাইয়ে ১৭ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পড়ার রেকর্ড। এখন লগ্নিকারীদের একটাই প্রশ্ন, বাজারে স্বস্তি ফিরবে কবে? কারণ, যে ভাবে অর্থনীতির বিভিন্ন পরিসংখ্যানে চাহিদা কমার লক্ষণ স্পষ্ট হচ্ছে, তাতে দেশের আর্থিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। অন্য দিকে ভারতের মূলধনী বাজার থেকে নাগাড়ে পুঁজি তুলছে বিদেশি আর্থিক লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। ফলে বাজার চাঙ্গা হওয়ার দিশা দেখতে পাচ্ছেন না অনেকেই। বরং অর্থনীতির আকাশে ফের মন্দার মেঘ জমাট বাঁধছে কি না, সেই আশঙ্কাতেই কাঁটা তাঁরা।
শ্লথ অর্থনীতি ছাড়াও বাজারের পতনে মূলত দায়ী বাজেটের দু’টি ঘোষণা। এক, অতি ধনীদের আয়ে বাড়তি সারচার্জ। যার আওতায় আসতে পারে ট্রাস্ট ও অ্যাসোসিয়েশন অব পার্সন্স হিসেবে নথিভুক্ত বিদেশি লগ্নিকারীরাও। ফলে শেয়ার বেচছে তারা। দুই, নথিভুক্ত সংস্থায় খুচরো লগ্নিকারীদের ন্যূনতম শেয়ার ২৫% থেকে বাড়িয়ে ৩৫% করা।
নাগাড়ে পতনের জন্য লগ্নিকারীরা কমবেশি ১৩ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ হারানোর পরে কিছুটা টনক নড়েছে সরকারের। দু’টি প্রস্তাবই পুনর্বিবেচনার কথা বলেছে তারা। প্রধানমন্ত্রীর দফতর অর্থ মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছে বিদেশি লগ্নিকারীদের সমস্যা সমাধানের পথ খুঁজতে। আর নথিভুক্ত সংস্থায় খুচরো লগ্নিকারীদের হাতে ন্যূনতম শেয়ার অনুপাত বৃদ্ধির প্রস্তাবও স্থগিত রাখার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এই দুই আশ্বাসেই শুক্রবার কিছুটা ওঠে বাজার। ১০০ পয়েন্ট বেড়ে সেনসেক্স থামে ৩৭,১১৮ অঙ্কে।
ভুগছে বাজার
• ৫ জুলাই বাজেট ঘোষণার পর থেকে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সেনসেক্স নেমেছে কমবেশি ৩,০০০ পয়েন্ট। অর্থাৎ ৭.৫ শতাংশ।
• বাজারে শেয়ার মূলধন সব থেকে বেশি, এমন প্রথম ১০টি ভারতীয় সংস্থার মধ্যে গত সপ্তাহে আটটিরই শেয়ার মূলধন কমেছে। সব মিলিয়ে ৮৯,৫৩৫ কোটি টাকা। সব থেকে বেশি কমেছে স্টেট ব্যাঙ্কের।
বহাল বিক্রি
• জুলাই থেকে ভারতে টানা লগ্নি ভাঙাচ্ছে বিদেশি আর্থিক সংস্থাগুলি। গত মাসে সেই অঙ্ক ছিল ২,৯৮৫.৮৮ কোটি টাকা।
• অগস্টের প্রথম দু’দিনের লেনদেনেও এ দেশ থেকে নিট ২,৮৮১.১০ কোটির লগ্নি তুলে নিয়েছে তারা।
• এর মধ্যে শেয়ার বাজার থেকে তোলা হয়েছে নিট ২,৬৩২.৫৮ কোটি, ঋণপত্রের বাজার থেকে ২৪৮.৫২ কোটি টাকার।
• অথচ জানুয়ারি বাদে চলতি বছরের প্রথমার্ধে ভারতের মূলধনী বাজারে একনাগাড়ে পুঁজি ঢেলেছে ওই সব সংস্থা। ফেব্রুয়ারিতে ঢেলেছিল ১১,১৮২ কোটি টাকা, মার্চে ৪৫,৯৮১ কোটি, এপ্রিলে ১৬,০৯৩ কোটি, মে-তে ৯,০৩১.১৫ কোটি ও জুনে ১০,৩৮৪.৫৪ কোটি টাকা।
তথ্যসূত্র: পিটিআই
তবে অর্থনীতি যে ঝিমিয়ে, তা স্পষ্ট। চাহিদায় টান সর্বত্র। পরিকাঠামো বৃদ্ধি তলানিতে। কমছে গাড়ি বিক্রি। কাজ হারাচ্ছেন বহু মানুষ। অনেক জায়গায় অপর্যাপ্ত বৃষ্টিতে কৃষি নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। কিছু ব্যাঙ্কের অনাদায়ী ঋণ কমলেও, একাংশের এখনও তা বাড়ছে। নগদের অভাবে গৃহঋণ সংস্থাগুলি ঋণ প্রদান কমানোয় ভুগছে গৃহনির্মাণ-সহ নানা শিল্প। আশানুরূপ হয়নি বহু সংস্থার আর্থিক ফলও।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy